হোম
+
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ রাব্বী হত্যা মামলার আসামিরা দোষী না নির্দোষ তা ২৮ নভেম্বর জানা যাবে।
Published : 14 Nov 2021, 08:31 PM
রোববার দুই আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানির পর ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালের বিচারক আবু জাফর কামরুজ্জামান রায়ের জন্য এ দিন রাখেন।
এদিন আদালতে অনীক সরকার ও মুজাহিদুর রহমানের পক্ষে আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শুনানি হয় বলে ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঁঞা জানান।
এ মামলায় মোট ২৫ আসামির মধ্যে ২৪ জনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলো। রোববার কারাগারে থাকা ২২ আসামির উপস্থিতিতে অনিক সরকারের পক্ষে তার আইনজীবী মাহবুব হোসেন যুক্তি উপস্থাপন শেষ করেন।
বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে বিক্ষোভ সমাবেশের পর মিছিল করে সাবেক শিক্ষার্থীরা। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
১৪ সেপ্টেম্বর বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ও ৪৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরার অংশ পড়ে শুনিয়ে তাদের প্রশ্ন করেন, আপনারা দোষী না নির্দোষ?
উত্তরে তারা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। এরপর আদালত যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের তারিখ ঠিক করেন।
পরদিন তার বাবা ১৯ শিক্ষার্থীকে আসামি করে চকবাজার থানায় মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ এজাহারের ১৬ জনসহ মোট ২১ জনকে গ্রেপ্তার করে।
পাঁচ সপ্তাহ তদন্ত করে তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পরিদর্শক ওয়াহিদুজ্জামান ওইবছর ১৩ নভেম্বর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দেন। সেখানে আসামি করা হয় মোট ২৫ জনকে।
প্রায় এক বছর পর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
অভিযুক্ত ২৫ জনের মধ্যে এজাহারভুক্ত ১৯ জন ও পরে অন্তর্ভুক্ত আরও ছয়জন রয়েছেন। এজাহারভুক্ত ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জন এবং এজাহারবহির্ভূত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজন কারাগারে আছেন। এদের মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন আটজন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার মামলায় অভিযোগ গঠনের পর মঙ্গলবার ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে থেকে কারাগারে নেয়ার জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হচ্ছে আসামিদের। এ মামলায় ২৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছে আদালত। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভি
আবরার হত্যায় অভিযুক্ত যারা এজাহারের ১৯ আসামি: বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল (সিই বিভাগ, ১৩তম ব্যাচ), সহসভাপতি মুহতাসিম ফুয়াদ (১৪তম ব্যাচ, সিই বিভাগ), সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন (কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৫তম ব্যাচ), তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার (মেকানিক্যাল ইঞ্জনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), সাহিত্য সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির (ওয়াটার রিসোর্সেস ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), ক্রীড়া সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৫তম ব্যাচ), উপসমাজসেবা সম্পাদক ইফতি মোশারফ সকাল (বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য মুনতাসির আল জেমি (এমআই বিভাগ), সদস্য মুজাহিদুর রহমান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), সদস্য হোসেন মোহাম্মদ তোহা (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), সদস্য এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), শামীম বিল্লাহ (মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাজেদুল ইসলাম (এমএমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), আকাশ হোসেন (সিই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর (মেকানিক্যাল, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ), মোয়াজ আবু হোরায়রা (সিএসই, ১৭ ব্যাচ), এ এস এম নাজমুস সাদাত (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মোর্শেদ অমর্ত্য ইসলাম (এমই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ) । এজাহারের বাইরের ৬ আসামি: বুয়েট ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক ইসতিয়াক আহমেদ মুন্না (মেকানিক্যাল, তৃতীয় বর্ষ), আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা (সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং), মিজানুর রহমান (ওয়াটার রিসোসের্স, ১৬ ব্যাচ), শামসুল আরেফিন রাফাত (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং), উপ-দপ্তর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল) এবং মাহামুদ সেতু (কেমিকৌশল)। পলাতক ৩ জন: এহতেশামুল রাব্বি তানিম (সিই বিভাগ, ১৭তম ব্যাচ), মাহমুদুল জিসান (ইইই বিভাগ, ১৬তম ব্যাচ) এবং মুজতবা রাফিদ (কেমিকৌশল)। ‘স্বীকারোক্তি’ দিয়েছেন ৮ জন: মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, এ এস এম নাজমুস সাদাত এবং খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানভীর। মারপিটে সরাসরি জড়িত ১১ জন: মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, ইফতি মোশাররফ সকাল, মনিরুজ্জামান মনির, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ, শামীম বিল্লাহ, এ এস এম নাজমুস সাদাত, মুনতাসির আল জেমি, এহতেশামুল রাব্বি তানিম এবং খন্দকার তাবাখ্খারুল ইসলাম তানভীর। ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ১১ জন: মেহেদী হাসান রাসেল, মুহতাসিম ফুয়াদ, মেহেদী হাসান রবিন, অনিক সরকার, মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, মনিরুজ্জামান মনির, ইফতি মোশাররফ সকাল, মুনতাসির আল জেমি, এহতেশামুল রাব্বি তানিম, মুজাহিদুর রহমান মুজাহিদ এবং মুজতবা রাফিদ। |
গতবছর ৫ অক্টোবর এ মামলার বাদী ও আবরার ফাহাদের পিতা বরকত উল্লাহ আদালতে সাক্ষ্য দেন। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এরপর কয়েকজন আসামি নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্যও দেন। এ মামলার চার্জ গঠনের সময় শব্দগত ত্রুটি থাকায় ৭ অক্টোবর রাষ্ট্রপক্ষ তা সংশোধনের আবেদন করে। পরদিন ২৫ আসামির বিরুদ্ধে পুনরায় অভিযোগ গঠন করে আদালত।
পুরনো খবর-
