বুয়েটে সন্ত্রাস-সাম্প্রদায়িকতা রুখে দেওয়ার শপথ

আবরার ফাহাদ হত্যার প্রেক্ষাপটে সব ধরনের সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার শপথ নিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Oct 2019, 09:01 AM
Updated : 16 Oct 2019, 09:38 AM

বুধবার শিক্ষার্থীদের আয়োজনে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে বুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজন শিক্ষকও অংশ নেন।  তবে দর্শকসারিতে থাকা অন্য শিক্ষকরা শপথ নেননি।

বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারে গণশপথ গ্রহণ করার কথা থাকলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে স্থান পরিবর্তন করে অনুষ্ঠান হয় বুয়েট অডিটোরিয়ামে।

শপথবাক্যে তারা বলেন, ”এ বিশ্বববিদ্যালয় সকল প্রকার সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িক অপশক্তির উত্থানকে আমরা সম্মিলিতভাবে রুখে দেব।”

সকল সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, অন্যায়-অবিচার রুখে দেওয়ার শপথ নিলেন বুয়েটের শিক্ষাক-শিক্ষার্থীরা

একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় আঙিনায় সব ধরনের অন্যায়, অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকারও শপথ নেন বুয়েট পরিবারের সদস্যরা।

শপথে তারা বলেন, “এই আঙ্গিনায় যেন আর কোনো নিষ্পাপ প্রাণ ঝরে না যায়, আর কোনো নিরপরাধ কেউ অত্যাচারের শিকার না হয়, তা আমরা সবাই মিলে নিশ্চিত করব। নৈতিকতার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ সব ধরনের বৈষম্যমূলক অপসংস্কৃতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহার আমরা সমূলে উৎপাটিত করব।”

অনুষ্ঠানে আবরার ফাহাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

শপথ গ্রহণের মধ্যে দিয়ে মাঠের আন্দোলনে ‘আপাতত’ ইতি টানার কথা মঙ্গলবারই জানিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। তবে তারা ক্লাসে ফিরবে, তাও জানিয়েছিলেন।

বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর নির্যাতনে গত ৬ অগাস্ট রাতে তড়িৎ কৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ নিহত হওয়ার পর আন্দোলনে নেমে ১০ দফা দাবি তোলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

সকল সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা, অন্যায়-অবিচার রুখে দেওয়ার শপথ নিলেন বুয়েটের শিক্ষাক-শিক্ষার্থীরা

দেশে প্রকৌশল শিক্ষার বনেদী এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে বুয়েট শিক্ষক সমিতি ও সাবেক শিক্ষার্থীরাও সমর্থন প্রকাশ করেন। তাদের দাবির মুখে বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ, আবরার হত্যার আসামিদের সাময়িক বহিষ্কার, হলগুলোতে নির্যাতন বন্ধে নানা পদক্ষেপ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

অধিকাংশ দাবি পূরণের আশ্বাসের পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের পাঁচটি দাবি তাৎক্ষণিকভাবে বাস্তবায়নের বিজ্ঞপ্তি দিলে ভর্তি পরীক্ষার জন্য আন্দোলন শিথিল করা হয়। 

আবরার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের ইতোমধ্যে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। নোটিস এসেছে জড়িতদের তদন্তের ভিত্তিতে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার তদন্তের ভিত্তিতে নতুন করে কারও নাম এলে তাদেরকেও আজীবন বহিষ্কার করা হবে।

শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আবরার ফাহাদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা

শপথ গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল জানান, তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পরই আবরার হত্যায় জড়িতদের বুয়েট থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।

“সবাইকে বহিষ্কার করা হবে। একক সিদ্ধান্তে কোনো কিছু হবে না। তদন্ত প্রতিবেদন লাগবে, ডিন লাগবে, সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিব। আপনারা অধৈর্য্য হবেন না, কাজ অনেক দূর এগিয়েছে।”