যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরে ইউরোপেও ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নেদারল্যান্ডস ছাড়াও জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেন, অস্ট্রিয়াসহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নেমেছে।
Published : 08 May 2024, 07:35 PM
নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যম্পাসের একটি এলাকা বুধবার দখলে নিয়েছে ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা। রাজধানীতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘাত এবং বিক্ষোভকারীদের তাঁবু শিবির পুলিশ ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার পরদিনই ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা ক্যাম্পাসের এলাকা দখলে নিল।
পুলিশ জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পুলিশকে এই বিক্ষোভ থামাতে বলেনি। তবে এর আগে মঙ্গলবার রাতে দাঙ্গা পুলিশ বুলডোজার দিয়ে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভকারীদের ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। ওই সময় আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ১৬৯ জনকে আটক করা হয়।
ওইদিন মধ্যরাতের ঠিক পরে এক বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলেছিল, সোমবার থেকে প্রতিবাদ করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে তারা একটি সমাধান খুঁজে পেতে চায়। বিক্ষোভ ও সংঘর্ষের কারণে ক্যাম্পাস ভবনের ‘যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে।’
বুধবার অবরোধের কারণে বিশ্ববিদ্যায় কর্তৃপক্ষ কয়েকটি স্থান বন্ধ করে রাখবে বলে জানিয়েছে। শিক্ষার্থীরা ইসরায়েলের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সম্পর্কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং বিক্ষোভ দমনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেওয়া পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে।
আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রায় ৪০ মাইল দক্ষিণে ইত্রেখত বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরিতে ফিলিস্তিনপন্থি একটি বিক্ষোভের অবসান ঘটানো হয়েছে বলে স্থানীয় পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
আর আমস্টার্ডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের রুটুসেআইল্যান্ড-এও বিক্ষোভ করেছে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী। এই এলাকায় সোমবারেও আরেকটি বিক্ষোভ হয়েছিল। এরপর বিক্ষোভকারীরা আমস্টার্ডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রস্থল দখল করে।
শিক্ষার্থীরা পদযাত্রা করে হলকাস্ট মেমোরিয়ালের দিকে এগুতে শুরু করলে পুলিশ তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে।
যুক্তরাষ্ট্রের পথ ধরে ইউরোপেও ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। নেদারল্যান্ডস ছাড়াও জার্মানি, ফ্রান্স, সুইডেন, অস্ট্রিয়া-সহ বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা গাজায় যুদ্ধের বিরোধিতা করে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে সোচ্চার হচ্ছে।
দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকার খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার সকালে জার্মানির পূর্বাঞ্চলীয় শহর লাইপজিগের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব লাইপজিগের একটি লেকচার হল দখল করেছে ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী। হলের সমা নেতারা ব্যানার টাঙায়। সেখানে লেখা ছিল, ‘গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় দখল’।
বার বার অনুরোধ করার পরও শিক্ষার্থীরা ফিরে না যাওয়ায় পুলিশ ডেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। লাইপজিগের আগে সোমবার বার্লিনের ফ্রি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে অভিযান চালিয়ে ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করেছিল পুলিশ।
ফ্রান্সেরও একটি নামকরা বিশ্বদ্যালয়ে মঙ্গলবার ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কর্তৃপক্ষের সই করা সব চুক্তি বাতিলের দাবিতে অনশন ধর্মঘট শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে।
ইসরায়েলি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের দাবিতে একই দিনে আন্দোলন শুরু হয় সুইজারল্যান্ডের প্রধান তিন বিশ্ববিদ্যালয়ে। ওদিকে, অস্ট্রিয়া নামকরা ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গত বৃহস্পতিবার থেকেই অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে আসছে কয়েক ডজন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থী।