“সংবিধান অনুসারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখন বন্ধ হবে, কীভাবে পরিচালিত হবে”, বলেন শিক্ষামন্ত্রী
Published : 29 Apr 2024, 08:12 PM
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা নিয়ে হাইকোর্টের যে নির্দেশ এসেছে, সেটি নিয়ে প্রয়োজনে আপিল বিভাগে যাবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
তিনি বলেছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কীভাবে চলবে, কখন বন্ধ থাকবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার মন্ত্রণালয়ের। উচ্চ আদালত কিছু-কিছু বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে নির্দেশ দেওয়ার এখতিয়ার আছে। তবে যার-যার এখতিয়ার, সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকাটা সমীচীন।
উচ্চ আদালত থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ আসার পর সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
নওফেল যে গরমের কারণে ঢালাও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পক্ষে নন, সেই অবস্থান তিনি আগেই স্পষ্ট করেছেন। বলেছেন, ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাংলাদেশে নতুন কিছু না। সব প্রতিষ্ঠান চলছে, এই গরমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন বন্ধ থাকবে?
তিনি জানিয়ে দেন, কোনো জেলায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেলে স্থানীয় শিক্ষা প্রশাসন নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিতে পার। তারা জেলায় স্কুল কলেজ বন্ধ রাখতে পারবে আবার ক্লাসের সময় পাল্টে দিতেও পারবে।
সেদিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এক আদেশে ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, রাজশাহী, খুলনা ও যশোরে মাধ্যমিক স্কুল বন্ধের নির্দেশ আসে। প্রাথমিক স্কুলগুলো সকালের শিফটে চলে বসে সেগুলো ছিল খোলা।
এর মধ্যে উচ্চ আদালত এক আদেশে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্কুল কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। তবে কোনোটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত হলে সেটি খোলা রাখতে পারবে বলে জানানো হয়েছে। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত জানায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় কেবল মঙ্গলবার ২৭ জেলায় স্কুল বন্ধের কথা বলে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এটা আমাদের নির্বাহী একটি অবস্থান। সংবিধান অনুসারে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কখন বন্ধ হবে, কীভাবে পরিচালিত হবে।
“উচ্চ আদালতের কিছু-কিছু বিষয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে নির্দেশ দেওয়ার এখতিয়ার আছে। তবে যেখানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটা সাংবিধানিক অধিকার আছে, সেখানে এ বিষয়ে যদি কোনো সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে, আমরা অবশ্যই সেটি তার উপরের আদালতে আপিল বিভাগে নিয়ে যাব। এ বিষয়ে যার-যার এখতিয়ার, সেখানেই সীমাবদ্ধ থাকাটাকে সমীচীন বলে মনে করি।”
যেসব জেলায় তাপমাত্রা একটা নির্দিষ্ট সীমার ঊর্ধ্বে যাওয়ার আশঙ্কা আছে, সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে এবং ১৪টি জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার জন্য নির্দিষ্ট করা হয়েছিল বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, “কিন্তু যেসব জেলায় তাপমাত্রা ৩৮ বা ৩৯ এর ঘরে পৌঁছাচ্ছে না, সেসব জেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিলে শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
চলমান তাপপ্রবাহে ১৮ জনের মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি সোমবার হাই কোর্ট বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের নজরে আনেন আইনজীবী মনির উদ্দিন। এরপর হাই কোর্ট বেঞ্চটি স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেয়।
আদেশের পর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে আইনজীবী মনির বলেন, “প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাদ্রাসা আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
হাই কোর্টের আদেশের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের অবস্থানের বিষয়ে নওফেল বলেন, “যদি আমাদের কাছে কপি (রায়ের) দেওয়া হয়, আমরা সেটা পর্যালোচনা করে তখন বলব। কিন্তু আমাদের অবস্থান হচ্ছে যেখানে বৃষ্টি হচ্ছে, তাপমাত্রা কম, সেখানে তো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার কোনো যুক্তি নেই।”
আরও পড়ুন :
সব প্রতিষ্ঠান খোলা, স্কুল কেন বন্ধ থাকবে: শিক্ষামন্ত্রী
স্কুল-মাদ্রাসা বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখতে হাই কোর্টের নির্দেশ
দাবদাহ: ২ মে পর্যন্ত প্রাথমিক, ২৭ জেলার মাধ্যমিক ও কলেজ মঙ্গলবার বন্ধ