এই আলো মহাবিশ্বের পটভূমির আভা, যা পেছনে ফেলে এসেছে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন নক্ষত্র আর ছায়াপথ, যেগুলো মহাবিশ্বের সূচনা হওয়ার পর থেকে গঠিত হয়েছে ও মরেও গেছে।
Published : 06 Sep 2024, 03:56 PM
মহাবিশ্বের আভা কতটা উজ্জ্বল হতে পারে সম্প্রতি তার সঠিক পরিমাপ খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
মহাবিশ্বের এক মহাজাগতিক রাতের আলোর সঙ্গে এর তুলনা করেছেন গবেষকরা। এটি খুব অস্পষ্ট ও ক্ষীণ আভা, যা মহাবিশ্বের মধ্যে দিয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
এখন গবেষকরা আগের চেয়ে আরও সঠিকভাবে আবিষ্কার করেছেন, মহাবিশ্ব কতটা উজ্জ্বল হতে পারে। ‘কসমিক অপটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড বা মহাজাগতিক অপটিকাল পটভূমি’ নামে পরিচিত এই আলো পৃথিবী পৃষ্ঠে পৌঁছানো সূর্যের আলোর চেয়ে প্রায় দশ হাজার কোটি ভাগের এক ভাগ।
ফলে খালি চোখে এ আলো দেখা যেমন অসম্ভব হয়ে পড়ে তেমনি উন্নত টেলিস্কোপ দিয়েও এ আলো দেখা কঠিন। সে হিসেবে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা’র ‘নিউ হরাইজনস’ মহাকাশযান। যেটি ২০১৫ সালে প্লুটোর পাশ দিয়ে গিয়েছিল ও বর্তমানে এটি পৃথিবী থেকে কয়েকশ কোটি কিলেমিটার দূরে আছে।
এক বিভ্রান্তিকর সহজ প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে এ গবেষণাটি, বলেছেন এ গবেষণার সহ-লেখক ও ‘ইউনিভার্সিটি অফ কলরাডো বোল্ডার’-এর জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানী মাইকেল শুল।
“আকাশ কি আসলেই অন্ধকার?”
মহাকাশ মানুষের চোখে অন্ধকার বা কালো মনে হতে পারে। তবে বিজ্ঞানীদের দাবি, আকাশ পুরোপুরি অন্ধকার নয়।
গবেষকরা হিসাব করে পৃথিবীর ছায়াপথের আশপাশে থাকা আলোর সেই ‘বর্ণবলয়’ বের করতে সক্ষম হন। এমনকি এর পেছনে যে আলো রয়েছে সেটিও বের করেছেন গবেষকরা।
এই আলো মহাবিশ্বের পটভূমির আভা, যা পেছনে ফেলে এসেছে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন নক্ষত্র আর ছায়াপথ, যেগুলো মহাবিশ্বের সূচনা হওয়ার পর থেকেই গঠিত হয়েছে ও মরেও গেছে।
আর এর সঠিক পরিমাপ খুঁজে বের করা দরকারি। কারণ মহাবিশ্বের সম্প্রসারণ সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের হিসাব সঠিক কি না তা পরীক্ষা করতে এটি সহায়তা করতে পারে। এমনকি মহাবিশ্বে আলোর অন্য কোনও রহস্যময় উৎস রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখতে সাহায্য করবে এটি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ‘কসমিক অপটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড বা মহাজাগতিক অপটিক্যাল পটভূমি’ নামে পরিচিত এই আলোর স্টেরেডিয়ান (কঠিন কোণের একক) প্রতি বর্গমিটারে প্রায় ১১ ন্যানোওয়াট। এখানে এক স্টেরাডিয়ান ১৩০টি চাঁদের সমান প্রশস্ত আকাশ।
মোটামুটি এমনটাই খুঁজে পাওয়ার অনুমান করেছেন গবেষকরা। এর মানে, কণা বা ছায়াথের মতো এমন কোনো অদ্ভুত বস্তু আছে বলে মনে হয় না, যা আমাদের ধারণার চেয়ে বেশি আলো নিঃসরণ করছে।
এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোফিজিকাল জার্নাল’-এ, যার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে ‘নিউ সিনোপটিক অবজারভেশন্স অফ দ্য কসমিক অপটিক্যাল ব্যাকগ্রাউন্ড উইথ নিউ হরাইজনস’ শীর্ষক শিরোনামে।