নেজামের স্ত্রী বলেন, “ফিরে পাব কি-না, সে ব্যাপারে দুদিন আগেও জানতাম না।”
Published : 05 Apr 2024, 05:09 PM
অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার পাওয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন বান্দরবানে সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দীন।
শুক্রবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “এখন ভালো আছি। র্যাব ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।”
অপহরণের দুদিন পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রুমা বাজারের কাছ থেকে তাকে উদ্ধার করে র্যাব। রাতেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় বান্দরবানে।
শুক্রবার দুপুরে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে র্যাবের উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন নেজাম উদ্দীন ও তার স্ত্রী মাইছূরা ইসফাত।
নেজাম বলেন, “আমার ব্যাংকের সহকর্মী ও সোনালী ব্যাংকের এমডি স্যারের প্রচেষ্টায় আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছি। তাদের সবার প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই।”
আর স্বামীকে ফিরে পাওয়ার অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে মাইছূরা বলেন, “ফিরে পাব কি-না, সে ব্যাপারে দুদিন আগেও জানতাম না। তাকে ফিরে পেয়ে আমি খুবই খুশি হয়েছি।“
নেজাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়তেন ফরেস্ট্রি বিভাগে। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় তাদের বাড়ি। চার ভাই চার বোনের মধ্যে নেজাম পঞ্চম।
তার স্ত্রী মাইছূরা ইসফাত বান্দরবান ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক কলেজের প্রভাষক, এই দম্পতির এক ছেলে। প্রথম শ্রেণিতে পড়া ছেলেকে নিয়ে তারা রুমা উপজেলা সদরে থাকেন।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শতাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকের শাখায় হামলা চালায়। তারা ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তা রক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করে। টাকার পাশাপাশি পুলিশের অস্ত্রও লুট করে।
নেজাম উদ্দীন তখন রামু উপজেলা কম্পাউন্ডের মসজিদে তারাবির নামাজ পড়ছিলেন। হামলাকারীরা মসজিদে ঢুকে তাকে নিয়ে চলে যায়।
এরপর বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে একদল সশস্ত্র লোক তিনটি গাড়ি নিয়ে এসে থানচি কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংক শাখায় হামলা চালিয়ে টাকা লুট করে।
দুটি ঘটনাতেই পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ এর নাম এসেছে; যারা পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত।
এ নিয়ে দুই উপজেলার মানুষের ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করে র্যাব। এ বাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, নেজামকে তারা ‘সমঝোতার’ মাধ্যমে উদ্ধার করেছে। সেজন্য মুক্তিপণ দিতে হয়েছে কি না, তা স্পষ্ট করেনি র্যাব।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “বান্দরবান জেলায় বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংগঠন রয়েছে। তাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠতা, উত্তরসূরিদের অনুপ্রেরণা ও বহির্বিশ্বে তাদের সহযোগীদেরকে সংগঠনটির সক্ষমতা জানান দিতেই বান্দরবানের রুমা-থানচিতে ব্যাংক ডাকাতি, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও হামলার ঘটনাটি কেএনএফের সশস্ত্র সদস্যরা ঘটিয়েছে।”
আরও পড়ুন:
ঘণ্টাখানেক গোলাগুলির পর থমথমে থানচি
‘সক্ষমতা জানান দিতেই’ কেএনএফের হামলা: র্যাব
দুই দিনে ৩ ব্যাংকে ডাকাতি: পাহাড়ে ফের ‘বম পার্টি’ আতঙ্ক
রুমায় ব্যাংক ডাকাতি: ‘লড়বি না, লড়লেই গুলি করে দেব’
থানচিতে রাস্তাঘাট ফাঁকা, বন্ধ দোকানপাট
এবার ভরদুপুরে থানচির দুই ব্যাংকে ডাকাতি
ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা: আইজিপি
ব্যাংক ম্যানেজার নেজামকে তারাবির নামাজ থেকে তুলে নিয়ে যায় সশস্ত্ররা
রুমায় ব্যাংক লুট: সন্ধান মেলেনি ‘অপহৃত’ ব্যবস্থাপকের
রুমায় ব্যাংক ডাকাতি, সন্দেহে ‘বম পার্টি’