বান্দরবানের রুমা সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনের স্ত্রী স্বামীর অপহরণের খবরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
Published : 03 Apr 2024, 03:34 PM
বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে সশস্ত্র হামলা ও লুটের সময় পাশের মসজিদে ঢুকে শাখা ব্যবস্থাপককে তারাবির নামাজ থেকে মারধর করে তুলে নিয়ে যায় সশস্ত্র ব্যক্তিরা।
ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনের ছোট ভাই পুলিশ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এখনও তার ভাইয়ের কোনো সন্ধান তারা পাননি।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে শতাধিক সশস্ত্র ব্যক্তি রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকটির শাখায় একযোগে হামলা চালায়। এ সময় ব্যাংকের কর্মকর্তা, নিরাপত্তা রক্ষীসহ অন্তত ২০ জনকে মারধর করা হয় এবং অপহরণ করা হয় ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে।
এ ঘটনায় পাহাড়ে সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার রাতে রুমার ঘটনা জানার পর বুধবার সকালে চট্টগ্রামের কর্মস্থল থেকে রুমা উপজেলা সদরে ছুটে যান এএসআই মিজানুর।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সকালে এসেছি। এখনো ভাইয়ের কোনো সংবাদ নেই। প্রশাসন বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কোনো কিছুই জানানো হয়নি। “
স্থানীয় লোকজনের বরাতে মিজানুর বলেন, “রাতে রামু উপজেলা কম্পাউন্ডের মসজিদে ভাইয়া অন্যদের সাথে তারাবির নামাজ পড়ছিলেন। সন্ত্রাসীরা মসজিদে ঢুকে অনেককে মারধর করে ব্যাংকের ম্যানেজার কে তা জিজ্ঞেস করে। পরে ভাইয়াকে নিয়ে চলে যায়।“
নেজাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩ ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন। পড়তেন ফরেস্ট্রি বিভাগে। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় তাদের বাড়ি। চার ভাই চার বোনের মধ্যে নেজাম পঞ্চম।
তার স্ত্রী মাইছূরা ইসফাত বান্দরবান ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক কলেজের প্রভাষক, এই দম্পতির এক ছেলে। প্রথম শ্রেণিতে পড়া ছেলেকে নিয়ে তারা রুমা উপজেলা সদরে থাকতেন।
মাইছূরা ইসফাতের মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে, স্বজনের পরিচয় দিয়ে এক নারী বলেন, “স্বামীর অপহরণের খবরে ইসফাত শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছেন। আমরা নেজামের কোন খবর পাইনি। প্রশাসন কখন জানাবে সে অপক্ষোয় আছি।“
জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও সোনালী ব্যাংকের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তারা সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে দেখেন এবং ব্যাংকের ভল্ট পর্যবেক্ষণ করেন ।
পর্যবেক্ষণ শেষে জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, “এখানে ভল্টের বিষয় আছে। কিছু প্রসিডিউয়াল বিষয় আছে। সিআইডির বিষয়ও থাকতে পারে। অন্যান্য ক্রাইম সিন বিষয়ও..। ক্রাইম সীন বিষয়গুলো পুলিশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখবে।
"সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ডিআরবি জব্দ করা আছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।”
পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনও এদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
আরও পড়ুন
এবার ভরদুপুরে থানচির দুই ব্যাংকে ডাকাতি
রুমায় ব্যাংক লুট: সন্ধান মেলেনি ‘অপহৃত’ ব্যবস্থাপকের