জাহাজের রেলিংয়ের চারপাশে লোহার কাঁটাতারসহ আরও কিছু নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
Published : 16 Apr 2024, 01:54 AM
দুবাইয়ের পথে থাকা এমভি আবদুল্লাহ এখনও সাগরের ঝুঁকিপূর্ণ অংশে থাকায় বাড়তি নিরাপত্তা নিয়েছে; জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্ত জাহাজটি আগামী ২২ এপ্রিল সেখানকার আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানোর আশা করছে।
সোমবার জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপ এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, নতুন করে জলদস্যুদের হামলার শিকার না হতে প্রয়োজনীয় সব রকম নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে কয়লাবাহী জাহাজটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের দিকে এগিয়ে চলেছে।
শিল্প গ্রুপটির জাহাজের অবস্থান বিষয়ক দৈনিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
এতে বলা হয়, এখনও 'উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায়' থাকায় সেখানে চলাচলের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এর অংশ হিসেবে এমভি আবদুল্লাহর রেলিংয়ের চারপাশে লোহার কাঁটাতার, ডেকে ফায়ার হোস, জাহাজে নিরাপত্তার জন্য সংরক্ষিত এলাকা সিটাডেল, ইমার্জেন্সি ফায়ার পাম্প এবং সাউন্ড সিগন্যাল প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
কবির গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পার্সন মিজানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "জাহাজ ২২ এপ্রিল দুবাই পৌঁছাবে। যাত্রাপথে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।"
১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাই যাবার পথে সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এমভি আবদুল্লাহ।
এর ৩৩ দিন পর ১৩ মার্চ দিবাগত রাত ৩টার দিকে জলদস্যুরা জাহাজ ছেড়ে চলে যায়। এরপর গন্তব্য দুবাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয় জাহাজটি।
রোববার দুপুরে এমভি আবদুল্লাহর চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খানের দেওয়া ফেইসবুক পোস্টের একটি ছবিতে মুক্ত নাবিকদের পাশে অপারেশন আটলান্টার কমান্ডোদের দেখা যায়।
সোমবার বিকেলে ইইউএনএভিএফওআর অপারেশন আটলান্টা মিশন তাদের টুইট বার্তায় এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার ছবি প্রকাশ করে।
এরপর রাতে কবির গ্রুপ তাদের প্রতিবেদনে জানায়, নিরাপদ এলাকায় না পৌঁছা পর্যন্ত ইইউএনএভিএফওআর এর যু্দ্ধজাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে পাহারা দিয়ে নিয়ে যাবে।
সোমালি উপকূল পেরিয়ে এডেন উপসাগর হয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পৌঁছাবে এমভি আবদুল্লাহ। এরমধ্যে এডেন উপসাগর পর্যন্ত সাগর নিরাপদ নয়।
এছাড়া সমুদ্র পথে নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়নকারী এবং ঝুঁকি হ্রাসে পরামর্শদাতা এমব্রেই গার্ডিয়ান সার্ভিস নামের যুক্তরাজ্যভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের সেবা নিয়েছে জাহাজের মালিক পক্ষ এসআর শিপিং।
আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছা পর্যন্ত জাহাজটির চারপাশে কোনো ঝুঁকি থাকলে তা ক্যাপ্টেনকে জানাবে প্রতিষ্ঠানটি।
১২ মার্চ যখন এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যুর কবলে পড়ে তখন জাহাজের রেলিং ঘিরে লোহার কাঁটাতার না থাকা, সব নাবিক সিটাডেলে আশ্রয় না নেওয়া, সশস্ত্র প্রহরা না থাকাসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ঘাটতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
আরও পড়ুন
মুক্তিপণ: প্রতিমন্ত্রী বললেন, এটা কোন সিনেমার ছবি?
৩৩ দিনের উৎকণ্ঠা পেরিয়ে মুক্ত এমভি আবদুল্লাহ
এমভি আবদুল্লাহর মুক্তির পর সোমালিয়ায় ৮ জলদস্যু গ্রেপ্তার
জিম্মি নাবিকদের ছাড়াতে কত লাগল?
তিনটি ব্যাগ পেয়ে দস্যুরা বলে, ‘তোমরা এখন মুক্ত’
এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকরা মুক্ত
এমভি আবদুল্লাহ: মালিকপক্ষের সঙ্গে জলদস্যুদের প্রথম যোগাযোগ
এমভি আবদুল্লাহ: ‘জোরপূর্বক’ উদ্ধারে ইইউর প্রস্তাবে বাংলাদেশের ‘না’
১০৯ দিনে ২৩ নৌযান সোমালি জলদুস্যদের নিশানায়, সর্বোচ্চ সতর্কতা
এমভি আবদুল্লাহ: টাকা না দিলে ‘একজন একজন করে মেরে ফেলার’ হুমকি দিচ্ছে জলদস্যুরা
১০৯ দিনে ২৩ নৌযান সোমালি জলদুস্যদের নিশানায়, সর্বোচ্চ সতর্কতা