জাহাজটি ১৯ এপ্রিল দুবাইয়ে পৌঁছাবে, সেখানে কয়লা খালাস শেষে ফিরবে চট্টগ্রামে।
Published : 15 Apr 2024, 12:22 AM
সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ে গত ১২ মার্চ মধ্য দুপুরে যে উৎকণ্ঠা শুরু হয়, তার অবসান ঘটলো নতুন বাংলা বছরের প্রাক্কালে। জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পেল এমভি আবদুল্লাহ আর ২৩ বাংলাদেশি নাবিক।
বাংলাদেশ সময় শনিবার রাত ৩টার দিকে এমভি আবদুল্লাহ তার গন্তব্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের দিকে রওনা হয়।
ভারত মহাসাগরে সোমালিয়া উপকূল থেকে প্রায় ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশের কবির গ্রুপের এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজে ছিলেন ২৩ জন নাবিক। তারা সবাই বাংলাদেশি।
মোজাম্বিক থেকে ৫৫ হাজার টন কয়লা নিয়ে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাচ্ছিল জাহাজটি। অস্ত্রের মুখে জাহাজ ছিনিয়ে নিয়ে নাবিকদের জিম্মি করে জলদস্যুরা জাহাজটি নিয়ে যায় সোমালিয়া উপকূলের দিকে।
যেভাবে মুক্তি
শনিবার দিবাগত রাত তিনটা, একে একে ৬৫ জন জলদস্যু নেমে যায় এমভি আবদুল্লাহ থেকে। ৯টি বোটে করে তারা চলে যায় রাতের আঁধারে। যাবার আগে নাবিকদের উদ্দেশ্যে বলে যায়, “তোমরা এখন মুক্ত"।
এর পরপরই এমভি আবদুল্লাহর ক্যাপ্টেন দেশে জাহাজের মালিকপক্ষের কাছে তাদের মুক্তির বার্তা পাঠান।
রোববার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদে কবির গ্রুপের কার্যালয়ে এসআর শিপিং আযোজিত সংবাদ সম্মেলনে জাহাজের নাবিকদের বরাতে তাদের মুক্তির সময়ের বর্ণনা দেন প্রতিষ্ঠানের সিইও মেহেরুল করিম।
তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক সকল সংস্থার সাথে সমন্বয় করে সকল কাজ লিগ্যালি আমরা শেষ করেছি। ভোর ৩টার দিকে মেসেজ আসে, ক্যাপ্টেন জানায় তারা মুক্ত।
“৬৫ জন জলদস্যু জাহাজে ছিল। তারা নয়টি বোটে করে চলে যায়। যাবার সময় তারা বলে যায়, 'তোমরা এখন মুক্ত'।"
এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের মুক্তির আগের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
দিনের বেলার ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুল্লাহর নাবিকরা সবাই জাহাজের ডেকে লাইন ধরে দাঁড়ানো। ছোট আকারের একটি উড়োজাহাজ এমভি আবদুল্লাহর সামনে চক্কর দিচ্ছে।
ওই সময় জলদস্যুরা দুটি স্পিড বোট নিয়ে জাহাজের সামনে অবস্থান নেয়। জাহাজে থাকা একজন বাংলায় নাবিকদের হাত তুলতে বলেন। এরপর সোমালি ভাষায় জলদস্যুরা কিছু বলতে শোনা যায়।
উড়োজাহাজটি একবার চক্কর দিয়ে একটি করে ব্যাগ পানিতে ফেলছিল। তারপর স্পিড বোটে থাকা জলদস্যুরা সেই ব্যাগটি তুলে নিচ্ছিল। এভাবে তিনবার তিনটি ব্যাগ ফেলা হয়। প্রতিবারই জলদস্যুরা উল্লাস করছিল।
তৃতীয় ব্যাগ ফেলার পর উড়োজাহাজটি ঘুরে গন্তব্যের দিকে চলে যায়। এরপর এমভি আবদুল্লাহতে থাকা কেউ একজন ইংরেজিতে নাবিকদের বলেন, “তোমরা এবার মুক্ত। এখন চলে যেতে পারবে।”
বাংলাদেশে তখন রোববার রাত ৩টা; ওই সময়ই মুক্তি পায় জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এবং এর ২৩ নাবিক।
বাংলাদেশ সরকার কিংবা জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কেউ মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেননি। নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, মুক্তিপণ দেওয়ার কোনো তথ্য ‘সরকারের কাছে নেই’।
তবে নাবিকদের মুক্তির কয়েক ঘণ্টা পর দুজন জলদস্যুর বরাতে ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণের কথা লিখেছে রয়টার্স। সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোও একই পরিমাণ মুক্তিপণের খবর দিয়েছে।
মুক্তিপণের বিষয়ে জানতে চাইলে সরাসরি কোনো উত্তর দেননি মেহেরুল করিম।
তিনি বলেন, “আমরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সোমালিয়া এমনকি কেনিয়ার মেরিটাইম আইন মেনে কাজ করেছি। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সাথে যোগাযোগ করে কাজ করেছি। সমঝোতার শর্ত অনুসারে অনেক বিষয় প্রকাশ করতে পারব না আমরা।"
মুক্তির আনন্দ নাবিকদের পরিবারে
রোববার সকালে জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মিডিয়া ফোকাল পার্সন মিজানুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলন, “রাত ৩টার দিকে জাহাজটি সোমালিয়া থেকে দুবাই রওনা হয়েছে। নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন।”
ঘণ্টা খানেকের মধ্যে নাবিকদের মুক্তির খবর দেশে পৌঁছাতেই আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।
এমভি আব্দুল্লাহর ফোর্থ ইঞ্জিনিয়ার তানভীরের মা জ্যোৎস্না বেগম বলেন, “ঈদের দিন কথা বলার পর আমার ছেলের সাথে আর কথা হয়নি। আজ ভোর রাত পৌনে ৪টার দিকে সে ফোন করে মুক্তি পাওয়ার কথা জানিয়েছে।
“ভোর রাতে মুক্তির খবর পেয়ে কী যে আনন্দ লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। মনে হচ্ছে আজকেই আমাদের ঈদ। ঈদের দিনতো আমাদের ঘরে কোনো আনন্দেই ছিল না।”
নাবিক আইনুল হকের মা লুৎফে আরা বেগম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমার ছেলেরা মুক্ত হয়েছে, কেমন ভালো লাগছে তা ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।
“ঈদ গেলেও আমাদের ঘরে কোনো আনন্দ ছিল না। ঈদের দিন আইনুলের সাথে কথা হয়েছিল। তারপর দুই দিন আর কথা হয়নি। খুব শঙ্কায় ছিলাম, ছেলের মুক্তি নিয়ে। আমরা জাহাজ মালিকপক্ষ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞ। তারা সবসময় বিষয়টি নজরে রেখেছে বলে আমার ছেলেরা মুক্তি পেয়েছে।”
এরপর রোববার দুপুরে নগরীর আগ্রাবাদে কবির গ্রুপের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মালিকপক্ষ।
সংবাদ সম্মেলনে এসআর শিপিংয়ের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, “বিষয়টি সেনসেটিভ হওয়ায় কৌশলগত কারণে এতদিন সামনে আসিনি। ৩১ দিন পর জাহাজ মুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। নববর্ষ এসেছে, নাবিকদের মুক্ত করা গেছে এটা আমাদের জন্য অনেক আনন্দের।”
জাহাজ ও জিম্মি নাবিকদের মুক্ত করতে সহযোগিতা করায় প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কবির গ্রুপের তরফে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রাহাত।
এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে কেন আর্মড গার্ড ছিল না, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “জাহাজটি যে পথ দিয়ে যাচ্ছিল, তা হাই রিস্ক এরিয়ার ডবল রেঞ্জের বাইরে ছিল। ২০০ নটিক্যাল মাইল হচ্ছে হাই রিস্ক এরিয়া। জাহাজ ৬০০ নটিক্যাল মাইল দিয়ে চলছিল।”
কবে ফিরছেন নাবিকরা
কিভাবে কখন নাবিকরা দেশে ফিরবেন তা সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরা হয়।
এমভি আবদুল্লাহ তার গন্তব্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ১৯ এপ্রিল পৌঁছাবে জানিয়ে শাহরিয়ার জাহান রাহাত বলেন, “সেখানে সব ফরমালিটিস শেষ করে ৪-৫ দিন পর বিমানে অথবা জাহাজে করে নাবিকরা দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবেন। বিমানে নাকি জাহাজে তারা দেশে ফিরবেন তা এখনো ঠিক হয়নি। জাহাজটি কয়লা খালাস শেষে চট্টগ্রামে ফিরবে।”
১৪ বছর আগে ১০০ দিন জলদস্যুদের কবলে থাকার পর মুক্তিপণ দিয়ে মুক্ত হওয়া একই মালিকের জাহাজ জাহান মণির নাবিকরা মুক্ত হওয়ার পর জাহাজটি পরিচালনায় বিকল্প নাবিকদের একটি দল দায়িত্ব নিয়েছিল।
এবার বিকল্প নাবিকরা প্রস্তুত কি না, এ প্রশ্নের উত্তরে এসআর শিপিংয়ের সিইও মেহেরুল করিম বলেন, “বিকল্প একজন ক্রুও রেডি করা হয়নি। কারণ এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা কীভাবে ফিরবেন, এখনো সে সিদ্ধান্ত হয়নি। তাদের সিদ্ধান্ত অনুসারে বাকি পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
“এমভি জাহান মণি গ্রিসের পথে পণ্য নিয়ে যাচ্ছিল। মুক্তির পর নাবিকরা জাহাজ নিয়ে কাতারে যায়। কিন্তু পণ্য ইউরোপে খালাসের কথা ছিল। তাই বিকল্প নাবিকদের যেতে হয়। এমভি আবদুল্লাহর পণ্য দুবাইতেই খালাস হবে। সেখান থেকে জাহাজেরও দেশে ফেরার কথা।”
মেহেরুল করিম বলেন, “এখন নাবিকরাই ঠিক করবেন তারা কীভাবে দেশে ফিরবেন।”
দেশের প্রতি ভালোবাসার বার্তা
মুক্তি পেয়ে লাল সবুজের জাতীয় পতাকা হাতে এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা প্রিয় স্বদেশ ভূমিকে ভালোবাসার বার্তা দেন।
জিম্মিদশা থেকে মুক্তির পর রোববার বেলা ১টা ৪৫ মিনিটের দিকে জাহাজের চিফ অফিসার আতিকুল্লাহ খান ফেইসবুকে প্রথম পোস্ট দেন। তাতে দেখা যায়, জাতীয় পতাকা হাতে নাবিকরা সবাই উচ্ছ্বসিত।
মুক্ত এমভি আবদুল্লাহর পাশেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইইউএনএভিএফওআর অপারেশন আটলান্টার একটি যুদ্ধ জাহাজকেও দেখা যাচ্ছিল ছবিতে।
শেষ ছবিতে দেখা যায়, ইইউ নেভির কমান্ডোরা এমভি আবদুল্লাহতে বাংলাদেশি নাবিকদের পাশে অবস্থান নিয়ে আছেন।
ফেইসবুক পোস্টে আতিকুল্লাহ খান লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ, অবিশ্বাস্য প্রচেষ্টার জন্য এসআর শিপিংকে ধন্যবাদ। বন্ধু, পরিবার ও সকল শুভাকাঙ্ক্ষীদের কৃতজ্ঞতা- যারা পুরো যাত্রায় আমাদের জন্য প্রার্থনা করেছেন।
“ধন্যবাদ ইইউএনএভিএফওআর অপারেশন আটলান্টা। ধন্যবাদ বাংলাদেশ। লাভ ইউ অ্যান্ড মিসিং ইউ বাংলাদেশ।”
আট জলদস্যু গ্রেপ্তার
রোববার বিকলে জানা যায়, সোমালিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পান্টল্যান্ডের পূর্ব উপকূলে ৮ জন জলদস্যুকে গ্রেপ্তার করেছে সেখানকার পুলিশ।
পান্টল্যান্ড পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বরাতে সোমালিয়ার ইংরেজি সংবাদমাধ্যম গেরো জানায়, বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহকে যারা জিম্মি করেছিল, সেই জলদস্যুদের ৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত হবার কিছু সময় পর এই জলদস্যুদের গ্রেপ্তারের খবর এলেও তাদের কাছ থেকে মুক্তিপণ হিসেবে দেওয়া অর্থ উদ্ধারের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পান্টল্যান্ড পুলিশের এক কর্মকর্তা গেরোকে বলেন, “মুক্তিপণ দেওয়ার প্রবণতা জলদস্যুদের আরো বেশি জাহাজে হামলা করতে উৎসাহিত করতে পারে।”
পান্টল্যান্ড মেরিটাইম পুলিশ ফোর্স রোববার বিকেলে তাদের অফিসিয়াল এক্স হ্যান্ডেলে এক বার্তায় জানায়, তারা ভারত মহাসাগরের পান্টল্যান্ড উপকূলে নিরাপত্তা জোরদার করেছে। এরকম এক অভিযানে তারা জলদস্যুদের আটক ও বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করেছে।
ওই পোস্টের সঙ্গে দেওয়া চারটি ছবির একটিতে আট জলদস্যুকে দেখা যাচ্ছে, যাদের পাহারা দিচ্ছিলেন তিন পুলিশ সদস্য।
এক মাসের জিম্মি দশা
১২ মার্চ এমভি আবদুল্লাহ জলদস্যুদের কবলে পড়ার খবর পেয়ে সেটিকে অনুসরণ করে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং পূর্ব আফ্রিকা উপকূলের নৌপথের নিরাপত্তায় নিয়োজিত ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইইউএনএভিএফওআর আটলান্টা অপারেশনের যুদ্ধ জাহাজ।
এসময় দুই বাহিনীই এমভি আবদুল্লাহর কাছাকাছি পৌঁছালেও অস্ত্রের মুখে জাহাজের নাবিকরা জিম্মি থাকায় তারা কোনো অভিযান পরিচালনা করেনি।
এরপর জলদস্যুরা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য পান্টল্যান্ড রাজ্যের জিফল উপকূলে নিয়ে যায়। তীর থেকে মাত্র দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করা হয়।
শুরুতেই এমভি আবদুল্লাহর নাবিকরা পরিবারের কাছে পাঠানো অডিও বার্তায় জানায়, মুক্তিপণ না দিলে জলদস্যুরা নাবিকদের এক এক করে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
এর মধ্যে ১৬ মার্চ ভারতীয় নৌবাহিনী অভিযান চালিয়ে এমভি রুয়েন নামের মাল্টার পতাকাবাহী একটি জাহাজকে জিম্মি হওয়ার তিনমাস পর জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত করে। গ্রেপ্তার করে ৩৫ জলদস্যুকে।
সমুদ্রপথের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আন্তর্জাতিক বাহিনীগুলো এমভি আবদুল্লাহর নাবিকদের উদ্ধারে অভিযানে আগ্রহী হলেও নাবিকদের পরিবার ও জাহাজের মালিকপক্ষ জানায়, তারা এমন কোনো অভিযান চায় না। সমঝোতার ভিত্তিতে জাহাজটি ছাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিল মালিকপক্ষ।
এরপর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও অভিযানের বিষয়ে অসম্মতির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকদের জিম্মি করার নয়দিনের মাথায় ২০ মার্চ প্রথমবার জলদস্যুদের প্রতিনিধিরা জাহাজ মালিকের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করে। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে দেন দরবার চলছিল।
২২ মার্চ পান্টল্যান্ড পুলিশের বরাতে বিবিসি সোমালি জানায়, জলদস্যুরা যাতে ভূমি থেকে কোনো সহায়তা না পায়, সেজন্য সেখানকার পুলিশ একটি অভিযান শুরু করেছে। অন্যদিকে সমুদ্র অংশে আন্তর্জাতিক বাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ এমভি আবদু্ল্লাহকে ঘিরে রেখেছে।
তারপর থেকে জাহাজে সুপেয় পানির সংকট এবং জলদস্যুদের অস্ত্রের মুখে রাতদিন নাবিকদের জিম্মি করে রাখার খবর আসতে থাকে।
এরপর গত তিন সপ্তাহে বারবার জাহাজের মালিকপক্ষ জানায়, আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে। নাবিকদের নিরাপদে মুক্ত করার বিষয়ে তারা আশাবাদী।
অবশেষে শনিবার রাত তিনটায় আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। মুক্তি পায় ২৩ নাবিক। মুক্ত হয় জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ।
আরও পড়ুন:
এমভি আবদুল্লাহর মুক্তির পর সোমালিয়ায় ৮ জলদস্যু গ্রেপ্তার
জিম্মি নাবিকদের ছাড়াতে কত লাগল?
নাবিকদের মুক্তিতে মুক্তিপণের তথ্য নেই: নৌ প্রতিমন্ত্রী
তিনটি ব্যাগ পেয়ে দস্যুরা বলে, ‘তোমরা এখন মুক্ত’
মুক্ত নাবিকদের ঘরে ‘ঈদের আনন্দ’
এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকরা মুক্ত
একসঙ্গে ঈদের নামাজ পড়লেন জিম্মি নাবিকরা, 'ভালো থাকার' বার্তা
এমভি আবদুল্লাহ: জিম্মি নাবিকদের কণ্ঠ শুনলেন স্বজনরা
এমভি আবদুল্লাহ: মালিকপক্ষের সঙ্গে জলদস্যুদের প্রথম যোগাযোগ
এমভি আবদুল্লাহ: ‘অভিযানের প্রস্তুতি’ নিচ্ছে আন্তর্জাতিক বাহিনী
এমভি আবদুল্লাহ: ‘জোরপূর্বক’ উদ্ধারে ইইউর প্রস্তাবে বাংলাদেশের ‘না’
এমভি আবদুল্লাহকে উদ্ধারের ‘চেষ্টা করেছিল’ ভারতীয় নৌবাহিনী
১০৯ দিনে ২৩ নৌযান সোমালি জলদুস্যদের নিশানায়, সর্বোচ্চ সতর্কতা
এমভি আবদুল্লাহ: টাকা না দিলে ‘একজন একজন করে মেরে ফেলার’ হুমকি দিচ্ছে জলদস্যুরা