খালিদ বলেন, "এমন ছবি তো আমরা অনেক চলচ্চিত্রে দেখি। কোন ছবি কোথায় গিয়ে কিভাবে যুক্ত হয়েছে, কোনটার সঙ্গে কোনটা এডিট হয়েছে আমি জানি না।"
Published : 15 Apr 2024, 03:40 PM
এমভি আবদুল্লাহর বাংলাদেশি নাবিকদের মুক্ত করতে সোমালি জলদস্যুদের ব্যাগে করে মুক্তিপণ দেওয়ার যে ভিডিও সংবাদমাধ্যমে এসেছে, সেটির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি আবারও বলেছেন, নাবিকদের মুক্ত করতে জলদস্যুদের মুক্তিপণ দেওয়ার যে কথা বলা হচ্ছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য ‘সরকারের কাছে নেই’।
রোববার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “এটা এখন কোন সিনেমার ছবি আমি তো জানি না। এমন ছবি তো আমরা অনেক চলচ্চিত্রে দেখি। কোন ছবি কোথায় গিয়ে কীভাবে যুক্ত হয়েছে, কোনটার সঙ্গে কোনটা এডিট হয়েছে আমি জানি না।
এমভি আবদুল্লাহ সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়ায় গত ১২ মার্চ যে উৎকণ্ঠার সূচনা হয়েছিল, তার অবসান ঘটে নতুন বাংলা বছরের শুরুতে। জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে ২৩ বাংলাদেশি নাবিককে নিয়ে জাহাজটি সোমালিয়া উপকূল থেকে দুবাইয়ের দিকে রওনা হয়।
এদিকে আবদুল্লাহর নাবিকদের মুক্তির আগের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। দিনের বেলার ওই ভিডিওতে দেখা যায়, আবদুল্লাহর নাবিকরা সবাই জাহাজের ডেকে লাইন ধরে দাঁড়ানো। ছোট আকারের একটি উড়োজাহাজ এমভি আবদুল্লাহর সামনে চক্কর দিচ্ছে।
ওই সময় জলদস্যুরা দুটি স্পিড বোট নিয়ে জাহাজের সামনে অবস্থান নেয়। জাহাজে থাকা একজন বাংলায় নাবিকদের হাত তুলতে বলেন। এরপর সোমালি ভাষায় জলদস্যুরা কিছু বলতে শোনা যায়।
৩৩ দিনের উৎকণ্ঠা পেরিয়ে মুক্ত এমভি আবদুল্লাহ
তিনটি ব্যাগ পেয়ে দস্যুরা বলে, ‘তোমরা এখন মুক্ত’
উড়োজাহাজটি একবার চক্কর দিয়ে একটি করে ব্যাগ পানিতে ফেলছিল। তারপর স্পিড বোটে থাকা জলদস্যুরা সেই ব্যাগটি তুলে নিচ্ছিল। এভাবে তিনবার তিনটি ব্যাগ ফেলা হয়। প্রতিবারই জলদস্যুরা উল্লাস করছিল।
তৃতীয় ব্যাগ ফেলার পর উড়োজাহাজটি ঘুরে গন্তব্যের দিকে চলে যায়। এরপর এমভি আবদুল্লাহতে থাকা কেউ একজন ইংরেজিতে নাবিকদের বলেন, “তোমরা এবার মুক্ত। এখন চলে যেতে পারবে।”
জাহাজ ছিনতাইয়ের পর থেকে দস্যুদের মুক্তিপণের বিষয়টি নিয়েই আলোচনা হচ্ছিল। নাবিকদের মুক্তির কয়েক ঘণ্টা পর দুজন জলদস্যুর বরাতে ৫০ লাখ ডলার মুক্তিপণ দেওয়ার কথা বলা হয় রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে। সোমালিয়ার স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলোও একই পরিমাণ মুক্তিপণের খবর দেয়।
তবে বাংলাদেশ সরকার কিংবা জাহাজের মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের কেউ মুক্তিপণ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেনি।
উড়োজাহাজ থেকে টাকার ব্যাগ ফেলার ওই ভিডিওর বিষয়ে নৌ প্রতিমন্ত্রীর মন্তব্য: "জানতাম পরিত্যক্ত জিনিস পানিতে ফেলে। এত দামি জিনিস (ডলার) পানিতে ফেলে জানা ছিল না।"
প্রতিমন্ত্রী জানান, এমভি আবদুল্লাহ ১৯ বা ২০ এপ্রিল দুবাইয়ে পৌঁছাবে। পরের বিষয়টি জাহাজ এবং নাবিকদের সঙ্গে সমঝোতার ওপর নির্ভর করবে।
“নাবিকরা কত দিনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়ে জাহাজে উঠেছিলেন, সেই চুক্তি তারা (জাহাজ কর্তৃপক্ষ) বহাল রাখবে, নাকি তারা ফিরে আসবে, সেটা তারা ঠিক করবে। তবে মালিকরা গতকাল খুব ভালো একটি কথা বলেছে, আমি শুনেছি তারা যদি চায় বাংলাদেশে ফিরে আসবে, তাদেরকে বিমানে করে বাংলাদেশের নিয়ে আসা হবে। সেখানে তাদের রিপ্লেস যারা হবে, সেটা নিয়েও হয়ত তারা কাজ করতেছে।"
খালিদ মাহমুদ বলেন, “আমরা আইএমওর (আন্তর্জাতিক সমুদ্র চলাচল সংস্থা) সি ক্যাটাগরির সদস্য। আমরা একটা প্রস্তাব তৈরি করছি, যেটা নিয়ে আমরা কাজ করছিলাম। আইএমওতে যে ১৭৪টা দেশ আছে, তাদের কাছে আমরা একটা প্রস্তাবনা দেব- কীভাবে আমাদের সমুদ্রপথটাকে নিরাপদ রাখতে পারি।"