Published : 01 May 2025, 08:52 AM
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেছেন, রোহিঙ্গাদের ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তি ঠেকাতে বিশেষ এলাকাগুলোতে কঠোর তৎপরতার পাশাপাশি প্রতারণা করে কেউ ভোটার হলে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
বুধবার চতুর্থ কমিশন সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার, ইসি সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার জেলার সব ইউনিয়ন পরিষদের ভোটার তালিকা যাচাই করে তালিকাগুলোয় কোনো রোহিঙ্গা শরণার্থী অন্তর্ভুক্ত থাকলে তা বাদ দেওয়ার কর্মপন্থা নির্ধারণের বিষয়টি এদিন কমিশন সভার আলোচ্যসূচিতে ছিল।
এ প্রসঙ্গ টেনে নির্বাচন কমিশনার সানাউল্লাহ বলেন, ২০২৪ সালে কক্সবাজারের একটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে এক ব্যক্তি ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অভিযোগ নিয়ে আদালতে রিট আবেদন করেছিলেন।
“তিনি নির্বাচন স্থগিত চেয়েছিলেন, তা হয়নি। তবে আদালতের নির্দেশনা ছিল–কমিটির মাধ্যমে তালিকা যাচাই বাছাই করতে হবে।”
কমিশনার বলেন, বিভাগীয় থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত কমিটি রয়েছে ইসির। সাম্প্রতিক সময়ে রোহিঙ্গারা যাতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে না পারে, সেজন্য ‘বিশেষ’ এলাকার ৫৬ উপজেলায় নিয়মিত তালিকা হালনাগাদ করা হয়।
“তারপরও রোহিঙ্গাদের কেউ প্রতারণামূলকভাবে (ভোটার তালিকায়) ঢুকে যায়, তাদের প্রাত্যহিকভাবে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। আদালতের জন্য এ রিপ্লাই রেডি রাখব।”
বর্তমানে ১২ কোটি ৩৭ লাখের বেশি ভোটারের তথ্য রয়েছে জাতীয় তথ্যভাণ্ডারে। হালনাগাদের কাজও চলছে, যেখানে অর্ধকোটি নতুন ভোটারের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, অটোমেটিক ফিঙ্গার আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেমের (এএফআইএস) মাধ্যমে নাগরিকদের তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে অনুপ্রবেশকারীদের আঙুলের ছাপ মেলানো হলে জালিয়াতদের সহজেই ধরা সম্ভব।
এদিকে তথ্য যাচাইয়ের জন্য কক্সবাজারের নিবন্ধিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ডেটাবেজ নির্বাচন কমিশনকে ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা-ইউএনএইচসিআর।
গেল মার্চে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ইসির এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক এ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেছিলেন, রোহিঙ্গারা বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে, তারা এনআইডি ও পাসপোর্ট পাওয়ার চেষ্টা করছে। যত দ্রুত এই ডেটা পাওয়া যাবে, তত সুবিধা হবে। রোহিঙ্গাদের ঠেকাতে তখন আর কষ্ট করতে হবে না।
এনআইডি সেবা সহজ করার উদ্যোগ
নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধন সংক্রান্ত আবেদন দীর্ঘদিন ঝুলে থাকে, এটাকে কী করে সহজ করা যায় সে আলোচনা হয়েছে কমিশন সভায়।
“আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে বিষয়গুলো মনে হবে ব্যক্তি নাগরিকদের যদি অসৎ উদ্দেশ্যে না থাকে সেগুলোকে সহজভাবে সমাধান করে দেওয়া হবে। অনেকে দ্বৈত এনআইডি কার্ড নিয়েছে। এদের ক্ষেত্রে ভুলভাবে কেউ দুইবার নিলে প্রথমটা থাকবে, দ্বিতীয়টা বাদ যাবে।”
তিনি বলেন, বয়স বেশি কিন্তু তা কমানোর আবেদনকে নিরুৎসাহিত করা হবে। আবার পুরো পরিচয় পরিবর্তনের আবেদন করে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আবেদন নিষ্পত্তিতে সময় লাগলেও জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে এটা করতে হবে। ডেটা সেন্টারের স্বচ্ছতার জন্যও এটা করতে হবে।
পুরনো খবর
ইউএনএইচসিআর-এর 'রোহিঙ্গা ডেটাবেজ' ব্যবহার করবে ইসি
এক রোহিঙ্গাকে এনআইডি পাইয়ে দিতে এসে ধরা আরেক রোহিঙ্গা
ভোটার হালনাগাদে রোহিঙ্গা ঠেকাতে এবারও 'বিশেষ নজর'
ভোটার তালিকা: রোহিঙ্গা ঠেকাতে ক্যাটাগরি অনুসরণে নিবন্ধন
ইউএনএইচসিআরের রোহিঙ্গা ডেটাবেজ ব্যবহার করতে পারবে ইসি
রোহিঙ্গা ডেটাবেইজে মেলানোর পরই এনআইডি: ডিজি