Published : 24 Sep 2024, 09:36 PM
ভোটার তালিকায় যাতে রোহিঙ্গাদের নাম না ওঠে, সে জন্য অগাস্টে জারি করা পরিপত্রে উল্লেখিত তিন ক্যাটাগরি অনুসরণ করে নতুন ভোটারদের নিবন্ধন দেওয়া হবে।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে পরিপত্র অনুযায়ী জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটর তালিকায় অন্তর্ভূক্তির কাজ সহজীকরণ বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এমনটাই জানান স্থানীয় নির্বাচন কর্মকর্তারা।
পরিপত্র অনুযায়ী কীভাবে তিন ক্যাটাগরিতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়া যাবে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
রোহিঙ্গাদের ভোটার হওয়া ঠেকাতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের পাঁচ জেলার ৫৬ উপজেলাকে ‘বিশেষ এলাকা’ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এসব এলাকার লোকজনকে ভোটার তালিকায় নিবন্ধনের জন্য তিন ক্যটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে।
গত ২১ অগাস্ট নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্রও জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবারের মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী যেসব নাগরিকের ন্যূনতম এএসসি সনদ আছে তাদেরকে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে বিবেচনায় নেয়া হবে।
এছাড়া সরকারি চাকরিজীবীর সন্তানরাও ‘এ’ ক্যাটাগরিতে বিবেচনায় আসবেন।
এই ক্যাটাগরিতে ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের পাশাপাশি কিউআর কোডযুক্ত অনলাইন জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সনদের পাশাপাশি মা-বাবার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রয়োজন হবে।
সরকারি চাকরিজীবীর সন্তানদের তাদের বাবা-মার চাকরির প্রমাণ হিসেবে সার্ভিস বইয়ের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
যাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ নেই তাদের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে বিবেচনায় আনা হবে।
এই ক্যাটাগরিতে ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে কিউআর কোডযুক্ত অনলাইন জন্মনিবন্ধন ও নাগরিক সনদের কপি, মা-বাবার আঙ্গুলের ছাপ যাচাই, তিন পার্বত্য জেলার ক্ষেত্রে রাজার সনদ, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন থেকে দেয়া স্থায়ী বাসিন্দা সনদ দেখাতে হবে।
এছাড়া ভূমিহীন হলে ভূমিহীন সনদ এবং পাসপোর্ট ও ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকলে সেগুলো প্রমাণ হিসেবে দেখাতে পারবেন।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ‘এ’ এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির আওতায় নেই তারা পড়বেন ‘সি’ ক্যাটাগরির আওতায়।
‘সি’ ক্যাটাগরিতে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সিটি করপোরেশনের থানা বা উপজেলা পর্যায়ে গঠিত ‘বিশেষ কমিটির’ মাধ্যমে তাদের আবেদনের বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে।
উপজেলা পর্যায়ে গঠিত এ বিশেষ কমিটির প্রধান হবেন সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। কমিটির সদস্য থাকবেন থানার ওসি/পরিদর্শক (তদন্ত) বা সেকেন্ড অফিসার। এছাড়া গোয়ন্দা সংস্থার, পৌর মেয়রের মনোনীত প্রতিনিধি, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও পার্বত্য অঞ্চলের ক্ষেত্রে হেডম্যান বা কারবারিরা কমিটির সদস্য হিসেবে থাকবেন।
আর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
আর মেট্রোপলিটন বা সিটি করপোরেশনের ক্ষেত্রে জেলার সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তাকে প্রধান করে গঠন করা কমিটিতে থানার ওসি/পরিদর্শক (তদন্ত) বা সেকেন্ড অফিসার, গোয়ন্দা সংস্থার প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ঠ ওয়ার্ড কাউন্সিলররা সদস্য থাকবেন। থানা নির্বাচন কর্মকর্তা এ কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।
এ কমিটি আবেদনকারীর ভাই/বোনের জাতীয় পরিচয় পত্রের বাবা-মার নামের সাথে আবেদনকারীর বাবা মায়ের নাম, চাচা/ফুফুদের ডাটাবেজ যাচাই করবেন।
এ কমিটি বিভিন্ন তথ্য পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই বাছাই করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত দেবে।
কমিটির যাচাই-বাছাইয়ে যাদের আবেদন বাতিল হবে তারা কমিটির সিদ্ধান্তের অনুলিপি নিয়ে সংশোধনকারী কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করতে পারবেন বলেও পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।
সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ইউনুচ আলী, সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এনামুল হক।