এবারের বড়দিনের ছুটিতে ক্যাম্পিং-এ যাওয়া ঠিক হলো। আয়োজক- সুমি ও নিপা ভাবী।
Published : 27 Dec 2017, 10:46 AM
বড়দিনের এই সময়ে ক্যাম্পিং সাইট খালি পাওয়া খুব মুশকিল। ইন্টারনেটে অনেক খুঁজে সবাই মিলে ক্যাঙ্গারু ভ্যালের বেন্ডিলায় ক্যাম্পিং যাওয়ার সিদ্ধান্ত হলো।
সিডনি থেকে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে ক্যাঙ্গারু নদীর তীরে আধুনিক সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থাকলেও মোবাইল ও ইন্টারনেট সংযোগ নেই। শুধু নিজেদের তাঁবু নিয়ে যেতে হয়। অনেকে ক্যারাভ্যান নিয়েও আসে। অনেকে আবার এখানে প্রকৃতির কাছাকাছি এক-দুই মাস ক্যাম্পিং-এ কাটায়।
সন্ধ্যার দিকে পৌঁছলাম ক্যাম্পিং সাইটে। সেখানে গিয়ে আমরা ছেলেরা একটি জায়গা ও মেয়েরা অন্য জায়গা পছন্দ করলাম। অবশেষে যুক্তি-তর্কে ছেলেদের জয় হলো। একটু বিশ্রাম নিয়ে শুরু হলো তাবু টাঙ্গানো।
পারভেজ ও শামিম ভাই ছোলা ও মুড়ি মাখালো। ভাবীরা চা বানালো। তারপর শুরু হলো রাতের খাবারের আয়োজন। প্রায় রাত ১২টার দিকে আমি আর মতিন ভাই তাবুতে বিশ্রাম নিতে গেলাম। অন্যরা গল্প শুরু করলো।
নিকষ কালো অন্ধকার রাতে আকাশ ভরা তারা আমাদের যেন নিয়ে গেছে অতীতে। পারভেজ ভাই একের পর এক গান গেয়ে চলেছেন। আমি পাশে বসে আছি। তাবুতে সবাই ঘুমের ভান করে পারভেজ ভাইয়ের গান শুনছে।
ভোর হতেই হাজার পাখির ডাক। চারিদিকে যতদূর চোখ যায়, সবুজ পাহাড় আর উঁচু বনে ঘেরা। সোনালি সকাল, হাজার পাখির কুজন, কি সুন্দর, নির্মল এক পাহাড়ি সকাল!
নাস্তা খেয়ে ছোট-বড় সবাই নেমে পড়লো ক্রিকেট খেলায়। ভাবীরা রান্নার আয়োজন সেরে নিলো। তারপর আমরা সবাই মিলে কঙ্গারু নদীতে সুইমিং-এ গেলাম। সেখানে ছোট ও বড় দু’টি নৌকা ভাড়া করা হলো। সারা দুপুর সাঁতার কেটে আর নৌকায় চড়ে বিকালে ক্লান্ত হয়ে সবাই তাবুতে ফিরলাম।
পরদিন বড়দিন। সকালে উঠেই আশেপাশের তাবুগুলোতে উঁকি দিলাম। অনেকেই তাবুর ভেতরেই ক্রিসমাস ট্রি সাজিয়ে পার্টির আয়োজন করেছে। কোনো কোনো তাবুতে প্রার্থনা সঙ্গীত চলছে।
দুপুরে বেশ ঠাণ্ডা থাকায় শুধু আরিক ও শুভ সুইমিং-এ গেলো। দুপুরে খাবারের পর আরেক রাউন্ড গল্প চললো। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি মাথায় নিয়ে আমরা তাবু ভেঙ্গে জিনিসপত্র গোছাতে শুরু করলাম। তারপর সন্ধ্যার আগে আগে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম।
লেখক: প্রবাসী লেখক ও বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সিডনি প্রতিবেদক
ইমেইল: [email protected]
এই লেখকের আরও পড়ুন
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |