বাঁচা-মরার ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শেষ চারে খেলার আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ।
Published : 09 Jun 2017, 03:06 PM
‘বুকের ভেতরে আছে প্রত্যয়, আমরা করব জয়’
সাকিবকে নির্ভার করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ
‘তামিম বলে, জীবনে শেষ করে আসতে পারলি না’
‘সাকিবের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে অন্যরকম মজা’
মাশরাফির সিদ্ধান্ত আর মোসাদ্দেকের ভেল্কি
‘সাকিবকে বললাম, এখন ছাড়া যাবে না’
২৬৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় ১৬ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। তাদের এই জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি থেকে বিদায় নিল নিউ জিল্যান্ড। মোট ৩ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। রোববার ইংল্যান্ডের কাছে অস্ট্রেলিয়া হারলে বা ওই ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে প্রথমবারের মতো কোনো আইসিসি ইভেন্টের সেমি-ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশ। অবশ্য অস্ট্রেলিয়া জিতলেই বিদায় নিতে হবে মাশরাফি বিন মুর্তজার দলকে।
১২ বছর আগে কার্ডিফেই দুর্দান্ত এক জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। হারিয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকে। এবার হারাল তাসমান পারের আরেক দেশ নিউ জিল্যান্ডকে। তাদের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের টানা দ্বিতীয় আর সব মিলিয়ে দশম জয়। জিম্বাবুয়ের পর এই প্রথম কোনো দলের বিপক্ষে দুই অঙ্কে গেল জয়ের সংখ্যা।
যখন জুটি বাঁধেন সাকিব আল হাসান আর মাহমুদউল্লাহ তখন সুইং বোলিং সামলাতে না পেরে কাঁপছে বাংলাদেশ। ৩৩ রানে ফিরে গেছেন প্রথম চার ব্যাটসম্যান। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের রান মেশিন তামিম বিদায় নিয়েছেন শূন্য রানে।
মাঝের ত্রয়ীর মুশফিকুর রহিম ৩৪ বল খেলে ১৪ রানে বোল্ড। সেখান থেকে বাংলাদেশের সেরা, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসের দ্বিতীয় সেরা জুটিতে দলকে অসাধারণ এক জয় এনে দিয়েছেন সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ।
দুইশ রানের জুটি গড়া দুই ব্যাটসম্যানই পেয়েছেন শতক। ১১টি চার আর একটি ছক্কায় ১১৪ রান করে ফিরেছেন সাকিব। ৮টি চার আর দুটি ছক্কায় ১০২ রানে অপরাজিত ছিলেন মাহমুদউল্লাহ।
চার হাঁকিয়ে দলকে জয় এনে দেওয়া মোসাদ্দেক হোসেন ছিলেন বোলিংয়ে নায়ক। ৪২তম ওভারে বোলিংয়ে এসে ৩ ওভারে ১৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে চাপে ফেলেছিলেন নিউ জিল্যান্ডকে। বড় অবদান ছিল অন্য বোলারদেরও।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৬৫/৮ (গাপটিল ৩৩, রনকি ১৬, উইলিয়ামসন ৫৭, টেইলর ৬৩, ব্রুম ৩৬, নিশাম ২৩, অ্যান্ডারসন ০, স্যান্টনার, মিল্ন ৭, সাউদি; মাশরাফি ০/৪৫, মুস্তাফিজ ১/৫২, তাসকিন ২/৪৩, রুবেল ১/৬০, সাকিব ০/৫২, মোসাদ্দেক ৩/১৩)
বাংলাদেশ: ৪৭.২ ওভারে ২৬৮/৫ (তামিম ০, সৌম্য ৩, সাব্বির ৮, মুশফিক ১৪, সাকিব ১১৪, মাহমুদউল্লাহ ১০২*, মোসাদ্দেক ৭*; সাউদি ৩/৪৫, বোল্ট ১/৪৮, মিল্ন ১/৫৮, নিশাম ০/৩০, স্যান্টনার ০/৪৭, অ্যান্ডারসন ০/১৯, উইলিয়ামসন ০/১৯)।
ফিরে গেলেন সাকিব, মাহমুদউল্লাহর শতক
ট্রেন্ট বোল্টকে পরপর দুই চার হাঁকিয়ে দলকে জয়ের একদম দোরগোড়ায় নিয়ে গেছেন সাকিব আল হাসান। পরের বলে বাঁহাতি পেসারের ওপর আবার চড়াও হতে গিয়ে ফিরেছেন বোল্ড হয়ে। ১১৫ বলে সাকিবের অসাধারণ ইনিংসটি গড়া ১১টি চার ও একটি ছক্কায়।
সেই ওভারেই পুল করে চার হাঁকিয়ে নিজের তৃতীয় শতকে পৌঁছান মাহমুদউল্লাহ। তার আগের দুটি শতক এসেছিল গত বিশ্বকাপে।
৪৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৬৪/৫।
ছক্কায় সাকিবের শতক
৪৬ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৪৯/৪। সাকিবের রান ১০৬, শতকের অপেক্ষায় থাকা মাহমুদউল্লাহ ৯৮।
বাংলাদেশের প্রথম দুইশ রানের জুটি
ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে প্রথম দুইশ রানের জুটি এনে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এটি মাত্র তৃতীয় দুইশ রানের জুটি।
৪৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২৪০/৪। সাকিব, মাহমুদউল্লাহ দুই জনেরই রান ৯৮ করে। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে দুই জনে গড়েছেন ২০৭ রানের জুটি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি।
ওয়ানডেতে বাংলাদেশের রেকর্ড জুটি
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নেওয়ার পথে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সেরা জুটি গড়েছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। যাদের রেকর্ড ভেঙেছেন সেই দুই জন আছেন ড্রেসিংরুমেই- তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিম। ২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় উইকেটে ১৭৮ রানের জুটি গড়েছিলেন দুই জনে।
৪২ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২১৫/৪। সাকিবের রান ৮৪, মাহমুদউল্লাহর ৯০। দুই জনে অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে গড়েছেন ১৮০ রানের জুটি।
The current partnership, now worth 179*, is Bangladesh's record partnership for ANY wicket in ODIs! #howzstat #NZvBAN #CT17 pic.twitter.com/0iXgJt8Udh
— ICC (@ICC) June 9, 2017
দারুণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। ৪১তম ওভারে দলকে নিয়ে গেছেন দুইশ রানে। নতুন বলে বাংলাদেশকে কাঁপিয়ে দেওয়া টিম সাউদি আক্রমণে ফেরার পর দিয়েছেন ৯ রান।
৪১ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ২০৫/৪। সাকিবের রান ৮৪, মাহমুদউল্লাহর ৮১।
পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের সেরা জুটি
বিপদে পড়া বাংলাদেশকে পথ দেখাতে পঞ্চম উইকেটে দেশের সেরা জুটি গড়েছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ।
২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আগের সেরা ১৪৮ রানের জুটিতেও ছিলেন সাকিব। সেবার তার সঙ্গে ছিলেন মুশফিকুর রহিম।
৩৭ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৮৩/৪। সাকিবের রান ৭৩, মাহমুদউল্লাহর ৭১। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে দুই জনে গড়েছেন ১৫০ রানের জুটি।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে পঞ্চম উইকেটে এটাই প্রথম দেড়শ রানের জুটি।
The partnership between @Sah75official and @Mahmudullah30 reaches 150* - a record for the 5th wicket in ODIs for Bangladesh! #NZvBAN #CT17 pic.twitter.com/ewGx0ShcWm
— ICC (@ICC) June 9, 2017
সাকিব আল হাসানের পর অর্ধশতক পেয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। শুরুতে নিউ জিল্যান্ডের বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া এই অলরাউন্ডারে পঞ্চাশে পৌঁছেছেন ৫৮ বলে। এই সময়ে তার ব্যাট থেকে এসেছে চারটি চার আর একটি ছক্কা।
৩১ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৪৫/৪। সাকিবের রান ৫৭, মাহমুদউল্লাহর ৫১।
সাকিবের পঞ্চাশের সঙ্গে জুটির একশ
দলের বিপদের সময় দায়িত্ব নিয়ে খেলছেন সাকিব আল হাসান। ৬২ বলে ৫টি চারে পৌঁছেছেন অর্ধশতকে। সেই সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেটে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে গড়েছেন শতরানের জুটি।
১০৪ বলে বাংলাদেশের আশা বাঁচিয়ে রাখা জুটির রান তিন অঙ্কে নিয়ে গেছেন দুই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।
৩০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৩৯/৪। সাকিবের রান ৫৫, মাহমুদউল্লাহর ৪৭।
বাংলাদেশের একশ
১৫তম ওভারের শেষ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করেছিল বাংলাদেশের সংগ্রহ। ৭.৩ ওভারে এসেছে পরের পঞ্চাশ।
প্রথম চার ব্যাটসম্যানের দ্রুত বিদায়ের পর দলকে টানছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ। এরই মধ্যে অর্ধশত রানের জুটি গড়েছেন তারা।
২৩ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১০৩/৪। সাকিবের রান ৩৯, মাহমুদউল্লাহর ৩৩।
Run-a-ball 50 partnership for Mahmudullah and Shakib. Good little fightback here, has Bangladesh 90-4 after 21 overs #NZvBAN #CT17 ^WN pic.twitter.com/dbWBLUkheU
— BLACKCAPS (@BLACKCAPS) June 9, 2017
৩৩ রানে প্রথম চার ব্যাটসম্যানকে হারানো বাংলাদেশ প্রতিরোধ গড়েছে সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। সতর্ক ব্যাটিংয়ে মাহমুদউল্লাহকে সঙ্গ দিচ্ছেন সাকিব। নিউ জিল্যান্ডের বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
৪৫ বলে এসেছে ম্যাচে বাংলাদেশের প্রথম অর্ধশত রানের জুটি।
২০ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৮৫/৪। সাকিবের রান ৩০, একটি ছক্কা আর দুটি চারে মাহমুদউল্লাহর ২৪।
জীবন পেয়েও টিকলেন না মুশফিক
৪ রানে জীবন পাওয়া মুশফিকুর রহিম কাজে লাগাতে পারেননি সুযোগ। অ্যাডাম মিল্নকে দারুণ এক চার হাঁকিয়ে ফিরেছেন পরের বলেই। ঘণ্টায় ১৪৬ কিলোমিটার গতির বলে উপড়ে গেছে মিডল স্টাম্প।
১২ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ৩৫/৪। ৩ রান করা সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
CASTLED! Adam Milne removes Mushfiqur's middle stump. Bangladesh 33-4 in the 12th over. BLACKCAPS bowlers stepping up! #NZvBAN #CT17 ^WN pic.twitter.com/NxGaS36hly
— BLACKCAPS (@BLACKCAPS) June 9, 2017
বিপদ আরও বাড়তে পারতো বাংলাদেশের। ৪ রানেই ফিরে যেতে পারতেন মুশফিকুর রহিম। ট্রেন্ট বোল্টের বলে স্লিপে রস টেইলরকে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তিনি।
১০ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪/৩। মুশফিকের রান ৮, সাকিব আল হাসানের ২।
বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সৌম্যর ফেরা
টিম সাউদির বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর রিভিউ নিতে পারেননি সৌম্য সরকার। বল ট্র্যাকিংয়ে দেখা গেছে বল স্টাম্পে লাগতো না, যেত খানিকটা ওপর দিয়ে। দ্বিতীয় বলে তামিম ইকবালকে হারানোর সঙ্গে রিভিউও হারিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই রিভিউটা থাকলে বেঁচে যেতেন সৌম্য।
১৩ বলে ৩ রান করে ফিরেন বাঁহাতি এই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। ৫ ওভার শেষে বাংলাদেশের স্কোর ১৪/৩। টপ অর্ডারের ব্যর্থতায় মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসানের কাঁধে অনেক দায়িত্ব।
শুরু করেছিলেন পরপর দুই বলে চার হাঁকিয়ে। ফিরে গেলেন সেই ৮ রানেই। নিজের দ্বিতীয় ওভারে টপ অর্ডারে ফেরা সাব্বির রহমানকে বিদায় করেছেন টিম সাউদি।
উইকেটরক্ষক লুক রনকিকে ক্যাচ দিয়ে সাব্বির ফেরার সময় বাংলাদেশের স্কোর ১০/২। ২ রান করা সৌম্য সরকারের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
Tim Southee is on fire! Three wickets now as he traps Soumya Sarkar LBW with one that nipped back. Bangladesh 12-3 #NZvBAN #CT17 ^WN pic.twitter.com/VntWsTZoPd
— BLACKCAPS (@BLACKCAPS) June 9, 2017
শুরুতেই বড় ধাক্কা খেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে শতক, পরের ম্যাচে ৯৫ রান করা তামিম ইকবাল ফিরেছেন দ্বিতীয় বলেই। টিম সাউদির বলে এলবিডব্লিউ হওয়ার পর রিভিউ নিয়েছিলেন বাঁহাতি উদ্বোধনী। তাতে পাল্টায়নি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।
তিন নম্বরে ফিরে মুখোমুখি হওয়া প্রথম দুই বলেই চার হাঁকিয়েছেন সাব্বির রহমান।
১ ওভার শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৮/১।
Definitely not the start Bangladesh needed, their top scorer @TamimOfficial28 out for a duck! #NZvBAN #CT17
WATCH: https://t.co/KyoDTgAYUL pic.twitter.com/U2l7Qa7plY
— ICC (@ICC) June 9, 2017
শেষটায় ঘুরে দাঁড়িয়ে নিউ জিল্যান্ডকে তিনশ রানের অনেক আগেই থামিয়েছে বাংলাদেশ। ৩৯তম ওভারে ৩ উইকেটে দুইশ রানে পৌঁছে যাওয়া কেন উইলিয়ামসনের দলের নজর সেদিকেই ছিল। শেষ ১০ ওভারের দারুণ বোলিংয়ে লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই রেখেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।
মার্টিন গাপটিল ভালো সূচনা এনে দেওয়ার পর মাঝে উইলিয়ামসন ও রস টেইলর দলকে টেনেছেন। বাঁচা-মরার ম্যাচে শেষটায় জ্বলে উঠতে পারেনি জিমি নিশাম, কোরি অ্যান্ডারসন, মিচেল স্যান্টনারদের কেউই।
আক্রমণাত্মক শুরু করা নিউ জিল্যান্ডকে উড়তে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। কোনো উইকেট না পেলেও আঁটসাঁট বোলিং করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা (০/৪৫) ও সাকিব আল হাসান (০/৫২)।
সবচেয়ে বড় চমক ছিল ডেথ ওভারে মোসাদ্দেক হোসেনের দারুণ বোলিং। ৩ ওভারে ১৩ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন এই অফ স্পিনার। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো তিন উইকেট পেয়েছেন এই তরুণ।
শেষ ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৬২ রান সংগ্রহ করেছে নিউ জিল্যান্ড।
নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ২৬৫/৮ (গাপটিল ৩৩, রনকি ১৬, উইলিয়ামসন ৫৭, টেইলর ৬৩, ব্রুম ৩৬, নিশাম ২৩, অ্যান্ডারসন ০, স্যান্টনার, মিল্ন ৭, সাউদি; মাশরাফি ০/৪৫, মুস্তাফিজ ১/৫২, তাসকিন ২/৪৩, রুবেল ১/৬০, সাকিব ০/৫২, মোসাদ্দেক ৩/১৩)
New Zealand reach 265/8 off their 50 overs against Bangladesh in Cardiff - who is on top? #NZvBAN #CT17 https://t.co/QlKhRMpf73 pic.twitter.com/5GMHt6RGY5
— ICC (@ICC) June 9, 2017
খরুচে শুরু করা মুস্তাফিজুর রহমান পরে করেছেন দারুণ বোলিং। ৪৯তম ওভারে এসে ফিরিয়েছেন অ্যাডাম মিল্নকে। শাফল করে খেলতে গিয়ে নিখুঁত ইয়র্কারে বোল্ড হয়েছেন তিনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে এটাই মুস্তাফিজের প্রথম উইকেট।
৪৯ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ২৫৭/৮।
আগের ওভারে জোড়া উইকেট নেওয়া মোসাদ্দেক হোসেনকে নিজের উইকেট এক রকম উপহারই দিয়ে এসেছেন জিমি নিশাম। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান অনেক এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে বলে ব্যাটই ছোঁয়াতে পারেননি। বাকিটুকু সহজেই সেরেছেন তৎপর উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম।
২৪ বলে তিনটি চারে ২৩ রান করে ফিরেন নিশাম। ৪৭ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ২৪৭/৭। মিচেল স্যান্টনারের রান ৯, অ্যাডাম মিল্নের ৪।
৪২তম ওভারে হঠাৎ করেই মোসাদ্দেক হোসেনকে বোলিংয়ে আনেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। দলে ফেরা তরুণ অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার সেই ওভারে দেন ৫ রান। পরের ওভারে প্রথম বলেই বিদায় করেন নিল ব্রুমকে।
এগিয়ে এসে চড়াও হতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন ব্রুম। ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে সহজেই হাতে জমান তামিম ইকবাল। ৪০ বলে তিনটি চারে ডানহতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ফিরেন ৩৬ রান করে।
এক বল বিরতিতে আবার মোসাদ্দেকের আঘাত। এলবিডব্লিউ হয়ে গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান কোরি অ্যান্ডারসন। আউট হয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। তাকে থামিয়ে রিভিউ নেওয়ার পরামর্শ দেন নন স্ট্রাইকার জিমি নিশাম। রিভিউয়ে অবশ্য পাল্টায়নি আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত।
৪৪ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ২৩১/৬। ২০ রান করা নিশামের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন মিচেল স্যান্টনার।
তাসকিনের স্লোয়ারে ফিরলেন টেইলর
নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ দুইশ পার করার পর ফিরেছেন রস টেইলর। তাসকিন আহমেদের স্লোয়ারে স্কুপ করতে গিয়ে শর্ট ফাইন লেগে মুস্তাফিজুর রহমানকে সহজ ক্যাচ দিয়েছেন তিনি।
৮২ বলে ৬৩ রান করতে ৬টি চার হাঁকিয়েছেন টেইলর। তার বিদায়ে ভেঙেছে চতুর্থ উইকেটে ৪৯ রানের জুটি।
৩৯ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ২০১/৪। ২৮ রান করা নিল ব্রুমের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন জিমি নিশাম।
Ross Taylor out for 63 as he tried to flick one over fine leg. Has done a good job through the middle. Time for Neesham! 201-4, 38.4 #CT17 pic.twitter.com/0XemNd6XvF
— BLACKCAPS (@BLACKCAPS) June 9, 2017
নিল ব্রুমকে নিয়ে নিউ জিল্যান্ডকে এগিয়ে নিচ্ছেন রস টেইলর। নিউ জিল্যান্ডের মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান পেয়েছেন টুর্নামেন্টে নিজের প্রথম অর্ধশতক।
৬৭ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পথে ৫টি চার হাঁকিয়েছেন টেইলর।
৩৬ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ১৮১/৩। টেইলরের রান ৫২, নিল ব্রুমের ১৯।
রান আউটে ফিরলেন উইলিয়ামসন
মাশরাফি বিন মুর্তজা আর সাকিব আল হাসানের আঁটসাঁট বোলিংয়ে রানের জন্য হাঁসফাঁস করছিলেন রস টেইলর ও কেন উইলিয়ামসন। রানের চাকা সচল রাখতে রানিং বিটুইন দ্য উইকেটে ঝুঁকি নিচ্ছিলেন তারা। তারই মাশুল দিয়ে ফিরেন উইলিয়ামসন।
সাকিব আল হাসানের করা ৩০তম ওভারের প্রথম বলে ফিরতে পারতেন টেইলর। সেবার মোসাদ্দেক হোসেনের আন্ডারআর্ম থ্রো স্টাম্পে লাগেনি। শেষ বলে আবার সুযোগ আসে। এবার মোসাদ্দেকের থ্রো ধরে স্টাম্প ভেঙে দেন সাকিব। অনেক এগিয়ে যাওয়া উইলিয়ামসনের ফেরার কোনো সুযোগই ছিল না।
৬৯ বলে ৫টি চারে ৫৭ রান করে অধিনায়ক ফেরার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ১৫২/৩। ৪৪ রান করা টেইলরের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন নিল ব্রুম।
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০০, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ৮৭ রানের পর বাংলাদেশের বিপক্ষে অর্ধশতকে পৌঁছেছেন কেন উইলিয়ামসন। ৫৮ বলে ক্যারিয়ারের ৩১তম অর্ধশতকে পৌঁছাতে ৫টি চার হাঁকিয়েছেন নিউ জিল্যান্ড অধিনায়ক।
২৬ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ২ উইকেটে ১৩৮ রান। উইলিয়ামসনের রান ৫২, রস টেইলরের ৩৫।
নিউ জিল্যান্ডের একশ
প্রথম দুই ওভারে খরুচে বোলিং করা মুস্তাফিজুর রহমানকে ১৯তম ওভারে আক্রমণে ফেরান অধিনায়ক। বাঁহাতি পেসারের প্রথম বলটি ছিল ওয়াইড, সেই রানে তিন অঙ্কে যায় নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ। মুস্তাফিজ দ্বিতীয় স্পেলের প্রথম ওভারে দেন ৬ রান।
দারুণ বোলিংয়ে নিউ জিল্যান্ডের রানের গতিতে খানিকটা রাশ টেনেছেন রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদ। দেশের সবচেয়ে দ্রুত গতির দুই পেসার নিয়েছেন একটি করে উইকেট, রুবেল ৪ ওভারে ১৫ রান দিয়ে, তাসকিন ৫ ওভারে ২৫ রানে।
২০ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের সংগ্রহ ১০৯/২। কেন উইলিয়ামসনের রান ৩৭, রস টেইলরের ২১।
রুবেল হোসেনের পেসে পরাস্ত হয়ে ফিরেছেন মার্টিন গাপটিল। একটু ভেতরে ঢোকা বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে গিয়ে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি নিউ জিল্যান্ডের বিস্ফোরক উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান। আম্পায়ার এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেওয়ার পর অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে কথা বলে রিভিউ না নিয়েই বিদায় নেন তিনি।
চারটি চার আর একটি ছক্কায় ৩৫ বলে ৩৩ রান করে ত্রয়োদশ ওভারে গাপটিলের ফেরার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৬৯/২। উইলিয়ামসনের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন অভিজ্ঞ রস টেইলর।
খরুচে মুস্তাফিজুর রহমানের জায়গায় বোলিংয়ে এসে নিজের দ্বিতীয় ওভারে ‘ব্রেক থ্রু’ এনে দিয়েছেন তাসকিন আহমেদ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথমবারের মতো খেলতে নেমে তরুণ এই পেসার ফিরিয়েছেন লুক রনকিকে।
অষ্টম ওভারে রনকি ফিরে যাওয়ার সময় নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ৪৬/১। ৩০ রান করা মার্টিন গাপটিলের সঙ্গে ক্রিজে যোগ দিয়েছেন কেন উইলিয়ামসন।
আঁটসাঁট মাশরাফি, খরুচে মুস্তাফিজ
প্রথম দুই ওভারে মাত্র এক রান দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার প্রথম ওভারে মাত্র একটি সিঙ্গেল নিতে পারেন মার্টিন গাপটিল। অধিনায়কের পরের ওভারটি খেলেন মেডেন।
দুই চারে মুস্তাফিজুর রহমানকে স্বাগত জানান গাপটিল। বাঁহাতি পেসারের পরের ওভারে চার হাঁকান লুক রনকি। মুস্তাফিজের দুই ওভার থেকে আসে ১৯ রান।
৪ ওভার শেষে নিউ জিল্যান্ডের স্কোর ২০/০।
চার পেসার নিয়ে বাংলাদেশ
দুটি পরিবর্তন হয়েছে বাংলাদেশের একাদশে। নিউ জিল্যান্ডে বিপক্ষে চার পেসার নিয়ে খেলছে তারা। অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের জায়গায় দলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথমবারের মতো খেলবেন তাসকিন আহমেদ।
টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েসের জায়গায় দলে ফিরেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। তিনে ব্যাট করবেন সাব্বির রহমান। মিডল অর্ডারে মোসাদ্দেক।
বাংলাদেশ একাদশ: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, সাব্বির রহমান, মাহমুদউল্লাহ, মোসাদ্দেক হোসেন, মাশরাফি বিন মুর্তজা, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন।
নিউ জিল্যান্ড একাদশ: কেন উইলিয়ামসন, কোরি অ্যান্ডারসন, ট্রেন্ট বোল্ট, নিল ব্রুম, মার্টিন গাপটিল, অ্যাডাম মিল্ন, জিমি নিশাম, লুক রনকি, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, রস টেইলর।
টসে হেরেও মাশরাফির ইচ্ছে পূরণ
বাংলাদেশের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টস জিতে ব্যাটিং নিয়েছেন নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি জানিয়েছেন, টস জিতলে ফিল্ডিংই নিতেন তিনি।
New Zealand has won the toss and elected to bat v Bangladesh today! #CT17 #NZvBAN pic.twitter.com/gFCfQnNJ1N
— ICC (@ICC) June 9, 2017
এক ঘণ্টা দেরিতে টস
নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা পর স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় হবে বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড ম্যাচের টস। বৃষ্টির জন্য এক ঘণ্টা সময় নষ্ট হলেও ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমেনি।
খেলা না হলেও সম্ভাবনা থাকবে বাংলাদেশের
বৃষ্টিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচ ভেসে গেলে ফিরে যেতে হবে কেন উইলিয়ামসনের দলকে। নেট রান রেটে নিউ জিল্যান্ডের চেয়ে (-১.৭৪০) চেয়ে এগিয়ে থাকায় টুর্নামেন্টে কোনো ম্যাচ না জিতেও লড়াইয়ে থাকবে বাংলাদেশ (-০.৪০৭)।
বাংলাদেশ ও নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার দুটি ম্যাচই পরিত্যক্ত হওয়ায় তাদের কোনো রান নেট রেট নেই। বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে পরদিন ইংল্যান্ডের কাছে বড় ব্যবধানে হারলে বিদায় নেবে স্টিভেন স্মিথের দল। স্বাগতিকদের হারালে, ওই ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে বা ছোটো ব্যবধানে হারলে রান রেটে এগিয়ে শেষ চারে যাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
Warming up in Cardiff #CT17 #NZvBAN pic.twitter.com/gZiI9h3uPu
— ICC (@ICC) June 9, 2017
কার্ডিফে বৃষ্টির বাধা
সকাল থেকে হয়ে গেছে কয়েক দফা বৃষ্টি। নির্ধারিত সময়ে টস হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। আম্পায়াররা মাঠ পরিদর্শন করবেন স্থানীয় সময় সকাল পৌনে এগারটায়।
টিকে থাকতে জিততেই হবে
সেমি-ফাইনালে খেলা নিজেদের হাতে নেই বাংলাদেশ ও নিউ জিল্যান্ডের। হারলে ফিরে যেতে হবে কার্ডিফ থেকেই। জয়ী দলকে থাকতে হবে অপেক্ষায়। পরদিন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়া জিতলে বিদায় নিতে হবে তাদেরও। বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা হারলে সুযোগ মিলবে শেষ চারে খেলার।