গোলের জন্য ভিনিসিউসকে কৃতিত্ব দিয়ে টনি ক্রুস নিজের পাস সম্পর্কে বললেন, এটি এমন বিশেষ কিছু নয়।
Published : 01 May 2024, 12:53 PM
একটি পাস, এক মুহূর্তের বিস্ময় আর যেন এক জীবনের ঘোর! জিনেদিন জিদান একবার বলেছিলেন, ‘বার্সা ৪০টি পাস দিয়ে যা করে, টনি ক্রুস তা এক পাসেই করে ফেলে।” সেই পাসের ইন্দ্রজালে আবার মুগ্ধ করলেন রেয়াল মাদ্রিদের ‘জার্মান স্নাইপার।’ তার সেই পাসের জাদুতে মুগ্ধ ফুটবলবিশ্ব। অথচ তিনি নিজে বলছেন, ওই পাস এমন বিশেষ কিছু নয়!
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমি-ফাইনালের প্রথম লেগে মঙ্গলবার ম্যাচের প্রথম ২৩ মিনিটে বায়ার্ন মিউনিখের দাপট ছিল একচেটিয়া। কয়েকটি সুযোগও তারা পেয়েছিল ওই সময়ে। কিন্তু ২৪তম মিনিটে ক্রুসের একটি পাসই ভোজবাজির মতো বদলে দেয় সবকিছু।
মাঝমাঠের সামান্য ওপরে বল পেয়ে আলতো গতিতে দুই পা এগিয়ে আচমকা প্রতিপক্ষের চার জনের মাঝ দিয়ে চোখধাঁধানো এক থ্রু পাস বাড়ান ক্রুস। ভিনিসিউসের সঙ্গে তার বোঝাপড়া ছিল অসামান্য। চোখের পলকে ছুটে গিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের রক্ষণকে হতভম্ব করে দিয়ে ভিনিসিউস প্রথম ছোঁয়াতেই বল জালে পাঠান গোলকিপার মানুয়েল নয়ারকে পরাস্ত করে।
ম্যাচে দারুণ কিছু পারফরম্যান্স দেখা গেছে এর পরের সময়টাতেও। উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ড্র হয়েছে ২-২ গোলে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে ক্রুসের পাসই সবচেয়ে বেশি আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
এমনিতে গত ১০ বছর ধরেই তিনি রেয়ালের মাঝমাঠের ভরসা। ম্যাচের পর ম্যাচ, দিনের পর দিন, মৌসুমের পর মৌসুম অসাধারণ পারফরম্যান্স দিয়ে চলেছেন। পাদপ্রদীপের আলো যদিও তার ওপর পড়ে তুলনামূলকভাবে কমই, আড়াল থেকেই নিজের কাজটা করে যান। তবে কখনও কখনও তার দ্যুতিতে ম্লান হয়ে যায় অন্য সবাই। বায়ার্নের বিপক্ষে এই ম্যাচটি যেমন।
তার পাস নিয়ে চর্চা চলছে চারপাশে। কিন্তু তিনি নিজে ম্যাচের পর সেই পাসের চেয়ে বেশি কৃতিত্ব দিলেন ভিনিসিউসকে।
“কৃতিত্ব অনেকটুকুই ভিনির। তার মুভমেন্টই আমাকে সুযোগ করে দিয়েছে পাসটি দেওয়ার। ফাঁকা জায়গাটা সে গড়ে নিয়েছে।”
“আমি খেয়াল করেছিলাম, ওদের সেন্টার ব্যাক সবসময় ভিনিকে অনুসরণ করছে এবং জানতাম যে, সে ভিনির তুলনায় কিছুটা মন্থর হবে। ওই পাস শেষ পর্যন্ত এমন স্পেশাল কিছু হয়নি, তবে ভিনির মুভমেন্ট ছিল স্পেশাল। সে দারুণ গতিময় তো বটেই, পাশাপাশি খুবই স্মার্ট এবং ভালো করেই জানে, কখন মুভ করতে হয়।”
ক্রুসের অসাধারণ পাসের পর ভিনিসিউসের ফিনিশিংও ছিল নিখুঁত। দারুণ গতিতে ছুটে ঠাণ্ডা মাথায় কাজ শেষ করেছেন তিনি। দ্বিতীয়ার্ধে রেয়াল ২-১ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর পেনাল্টিতে দলকে সমতায় ফেরান এই ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গারই। শেষ দিকে লুকা মদ্রিচের দুর্দান্ত পাস থেকে গোলের আরেকটি সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন। তবে নয়ারকে পরাস্ত করতে পারেননি।
সবমিলিয়ে ভিনিসিউসের পারফরম্যান্স ছিল দারুণ। ম্যান অব দা ম্যাচও হয়েছেন তিনিই। ম্যাচ শেষে তাকে ঘিরে পুরোনো প্রশ্নটি আবার করা হলো ক্রুসকে, ‘ভিনিসিউস কি এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা ফুটবলার? উত্তরটা সরাসরি না দিয়ে ক্রুস তুলে ধরলেন তাদের দলের গভীরতা।
“জানি না (ভিনিই সেরা কিনা)… বলাটা কঠিন। এটা সপ্তাহে সপ্তাহে কিংবা প্রতি দুই সপ্তাহে বদলাতে পারে। ভালো ফুটবলার অনেক আছে এবং সে অবশ্যই তাদের একজন। এই তো, সপ্তাহখানেই আগেই সবাই বলছিল যে জুড বেলিংহ্যাম বিশ্বের সেরা। আজকে বলছে ভিনির কথা। এসবের মানে হলো, আমাদের দলে অনেক ভালো ফুটবলার আছে।”