গ্রহটির খোঁজ মিলেছিল ২০০৫ সালে। এর পর থেকে এক্সোপ্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডল সংশ্লিষ্ট গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এটি।
Published : 09 Jul 2024, 06:42 PM
দূরের এক ভয়ঙ্কর গ্রহে ‘পচা ডিমের মতো দুর্গন্ধ’ থাকতে পারে, সম্প্রতি এমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
এ অর্জন শুধু বিভিন্ন অতি গরম ভিন গ্রহ সম্পর্কে মানুষের প্রচলিত বোঝাপড়াই বাড়ায় না, বরং ভিন্ন গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রেও সহায়ক হিসেবে কাজ করতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
নতুন গবেষণা অনুসারে, হাইড্রোজেন সালফাইডের অস্তিত্ব থাকতে পারে ‘এইচডি ১৮০৭৩৩বি’ নামের গ্যাস জায়ান্ট এক্সোপ্ল্যানেটে, যা আকারে বৃহস্পতির সমান।
দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি বিজ্ঞানীদেরকে নতুন তথ্যও দিচ্ছে এ অণুটি, যেখানে সালফার, যা কোনো গ্রহের গঠনপ্রক্রিয়ায় ‘বিল্ডিং ব্লক’ হিসাবে কাজ করে, সেটি কীভাবে সৌরজগতের বাইরের বিভিন্ন গ্রহ বা এক্সোপ্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডলে প্রভাব ফেলতে পারে।
সূর্য ও বুধ গ্রহের মধ্যকার দূরত্বের তুলনায় গ্রহটি নিজের কেন্দ্রীয় তারার চেয়ে প্রায় ১৩ গুণ কাছে। আর কোনো কক্ষপথ প্রদক্ষিণের বেলায় এটি মাত্র পৃথিবীর দুই দিন সমান সময় নিয়ে থাকে।
গ্রহটির তাপমাত্রা প্রায় ৯২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা এর চরম বৈরি আবহাওয়ার জন্য পরিচিত। এর মধ্যে রয়েছে কাঁচওয়ালা বৃষ্টিপাত, যা আড়াআড়িভাবে প্রতি ঘণ্টায় আট হাজার ৪৮ কিলোমিটার বেগে প্রবাহিত হয়।
“সেখানে যে হাইড্রোজেন সালফাইডের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ অণু রয়েছে, সেটা আমরা জানতাম না”,বলেন এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি’র জোতির্পদার্থবিদ গুয়াংওয়েই ফু।
“আমাদের অনুমান ছিল, এটা শুধু বৃহস্পতি গ্রহেই থাকতে পারে। তবে আমরা আসলে সৌরজগতের বাইরে একে কখনও শনাক্ত করে দেখিনি।”
“আমরা এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজছি না। কারণ এটা অনেক গরম। তবে, এতে হাইড্রোজেন সালফাইড পাওয়ার বিষয়টি অন্যান্য গ্রহে এই অণু খুঁজে পাওয়া ও বিভিন্ন ধরনের গ্রহ কীভাবে গঠিত হয়, সে সম্পর্কে আরও তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনায় এটি একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।”
‘জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটি’র নতুন এ গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার’-এ, যেখানে নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের তথ্য ব্যবহার করেছেন গবেষকরা।
‘হট জুপিটার’ নামে ডাকা এই গ্রহটির অবস্থান পৃথিবী থেকে মাত্র ৬৪ আলোকবর্ষ দূরে হওয়ায় জোতির্বিদরা এর কেন্দ্রীয় তারার সামনে দিয়ে চলে যাওয়ার গতিবিধিও পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ পাবেন।
গ্রহটির খোঁজ মিলেছিল ২০০৫ সালে। এর পর থেকে এক্সোপ্ল্যানেটের বায়ুমণ্ডল সংশ্লিষ্ট গবেষণার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে এটি।
এদিকে, জেমস ওয়েবের পাওয়া নতুন তথ্যে ‘এইচডি ১৮৯৭৩৩ বি’-তে মিথেনের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনাও নাকচ হয়ে গেছে।
“আমরা ভেবেছিলাম, অতিরিক্ত মিথেন থাকার কারণে গ্রহটি খুব উত্তপ্ত। তবে এখন আমরা জানি, বিষয়টি এমন নয়,” বলেন ফু।