“রজনীগন্ধা এখনও কাত হয়ে আছে। এয়ার লিফটিং করে আগের চেয়ে বেশি দৃশ্যমান করা হয়েছে।”
Published : 24 Jan 2024, 06:00 PM
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় পদ্মা নদীতে ফেরি ডুবির ঘটনার সপ্তম দিনে আরও একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়েছে; এ নিয়ে উদ্ধার হল মোট আটটি ট্রাক।
এছাড়া একাংশ দৃশ্যমান হওয়া ফেরি রজনীগন্ধা পুরোপুরি উদ্ধারের চেষ্টাও অব্যাহত রয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা অঞ্চলের উপ-মহাব্যবস্থাপক শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানান, বুধবার বেলা ৩টার দিকে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটের ২০০ মিটার দূর থেকে আরও একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, “ডুবে যাওয়া নয়টি যানবাহনের মধ্যে এ পর্যন্ত আটটি উদ্ধার করা হল।”
মানিকগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হামিদ মিয়া বলেন, “উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও বিআইডব্লিউটিএ এর ডুবুরিরা কাজ করছেন। আর একটি যানবাহন উদ্ধার করা হলে সবগুলোই উদ্ধার হয়ে যাবে।”
১৭ জানুয়ারি সকাল ৮টার দিকে পাটুরিয়া ঘাটের ৫ নম্বর ফেরিঘাটের ২০০ মিটার অদূরে পদ্মায় নয়টি যানবাহন নিয়ে ডুবে যায় ফেরি রজনীগন্ধা-৭।
ওই দিনই উদ্ধারকারী জাহাজ ‘হামজা’ গিয়ে একটি কভার্ডভ্যান ও একটি ট্রাক উদ্ধার করে। পরদিন আরেক উদ্ধারকারী জাহাজ ‘রুস্তম’ গিয়ে উদ্ধার করে তুলা বোঝাই একটি ট্রাক। রোববারও একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়। এরপর মঙ্গলবার পর্যন্ত বাকি ট্রাকগুলো উদ্ধার হয়।
একে একে ট্রাক উদ্ধার করা গেলেও রজনীগন্ধা তোলা সম্ভব হচ্ছিল না। এর পেছনে প্রচণ্ড শীত ও বৈরি আবহাওয়াকে কারণ দেখায় বিআইডব্লিউটিসি। দুর্ঘটনার ছয়দিন পর মঙ্গলবার রজনীগন্ধার একাংশ দৃশ্যমান হয়।
৫ দিন পর ভেসে উঠল ফেরির সহকারী মাস্টারের লাশ
উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়ের’ সাহায্যে পাটুরিয়া ৫ নম্বর ঘাটের ২০০ মিটার দূর থেকে রজনীগন্ধা ফেরির একাংশ টেনে তোলা হয় বলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন-বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক খালেদ নেওয়াজ জানান।
রজনীগন্ধার সবশেষ অবস্থান জানতে চাইলে বুধবার নৌবাহিনীর ডুবুরি দলের প্রধান শাহ পরাণ ইমন বলেন, “রজনীগন্ধা এখনও কাত হয়ে আছে। এয়ার লিফটিং করে আগের চেয়ে বেশি দৃশ্যমান করা হয়েছে। এখন ফেরিটি উল্টানোর কাজ চলছে। পরে টেনে তীরে আনা হবে।”
ফেরি ডুবে যাওয়ার পর অন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পাড়ে ফিরলেও ফেরি রজনীগন্ধার সহকারী মাস্টার হুমায়ুনের খোঁজ মিলছিল না। ঘটনার পাঁচদিন পর সোমবার বিকাল ৪টার দিকে হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীতে তার লাশ ভেসে ওঠে।
ফেরি ডুবির কারণ অনুসন্ধানে জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ গঠিত দুটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে কমিটির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।
তবে রজনীগন্ধা গাড়ি নিয়ে কেন ডুবে গেল, সেই প্রশ্নের সুনিশ্চিত জবাব পাওয়া যায় নাই।
দুর্ঘটনার পর নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী মালবাহী একটি ছোট জাহাজের ধাক্কার কথা বলছেন। তবে তা নাকচ করছেন ফেরিতে থাকা গাড়ির চালকরা। তাদের বক্তব্যে ফেরির পেছনের দিকে একটি গোল ঢাকনার মতো জায়গা দিয়ে নিচ থেকে পানি ওঠার কথা উঠে এসেছে।
আর চালকদের ভাষ্য, সেখানে অন্য কোনো নৌযানের ধাক্কার কোনো ঘটনা দেখেননি। বরং ধীরে ধীরে কাত হয়ে ফেরিটিকে ডুবতে দেখেছেন তারা।