গাজীপুর সিটি: সর্বনিম্ন ভোট ১২.০৯%, সর্বোচ্চ ৮১.৪১%

টঙ্গী এলাকায় বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা। বাকি এলাকায় কম ভোট পান তিনি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 May 2023, 09:05 PM
Updated : 26 May 2023, 09:05 PM

শান্তিপূর্ণ ভোট শেষে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাধ্যমে আসা জয়-পরাজয় নিয়ে আলোচনা তৈরি করা গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে এবার সর্বনিম্ন ভোট পড়েছে একটি কেন্দ্রে ১২ শতাংশ; অপরদিকে আরেক কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ভোটের হার ৮১ শতাংশ।

ঢাকার লাগোয়া এ সিটিতে তৃতীয়বারের এ নির্বাচনে সবচেয়ে কম ভোটও পড়েছে এবার। বৃহস্পতিবার ইভিএমএ পদ্ধতিতে হওয়া এ নির্বাচনে ৪৮০ কেন্দ্রে গড়ে ৪৮.৭৬% ভোট পড়েছে।

ভোটগ্রহণ শেষে মাঝরাত পেরিয়ে এ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।

এ নির্বাচনে মেয়র পদে লড়েছেন আটজন; তাদের মধ্যে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন, যিনি সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা।

ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ৮০% এর উপরে ভোট পড়েছে দুটি কেন্দ্রে। যেটির একটিতে নৌকা এবং অপরটিকে টেবিল ঘড়ি বেশি ভোট পায়।

এরমধ্যে ১৪৫ নম্বর কেন্দ্রে ভোটের হার ৮১.৪১ শতাংশ। মজলিশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ কেন্দ্রে ৯৯৬ ভোট পেয়েছে নৌকা এবং টেবিল ঘড়ি পেয়েছে ৭৪৩ ভোট। এ কেন্দ্রের ২৩৮৮ ভোটারের মধ্যে ১৯৪১ জন ভোট দিয়েছেন।

অপরদিকে ২৩৩ নম্বর মৈরান আইডিয়াল স্কুল কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৮০.৭৭ শতাংশ। এরমধ্যে টেবিল ঘড়ি পেয়েছে ৭৬৪ ভোট এবং নৌকা পেয়েছে ২৯২ ভোট। এ কেন্দ্রে ১৪০৪ ভোটারের মধ্যে ১১৩৪ জন ভোট দিয়েছেন।

Also Read: গাজীপুরে জাহাঙ্গীরের জাদু কোন সমীকরণে

Also Read: জায়েদার বাড়ি ঘিরে জাহাঙ্গীর-সমর্থকদের উৎসবের দিন

Also Read: ফলাফল মেনে আজমত অভিনন্দন জানালেন জায়েদাকে

Also Read: গাজীপুরে আজমতের নৌকা ডুবিয়ে মাকে ভাসালেন জাহাঙ্গীর

আর সবচেয়ে কম ভোট দেওয়া হয় ১০৫ নম্বর ভোগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে; শতকরা হার ছিল ১২.০৯ শতাংশ। ২৮৯৬ ভোটারের মধ্যে ৩৫০টি ভোট পড়েছে এ কেন্দ্রে, যার মধ্যে নৌকা ১৯৩ ও টেবিল ঘড়ি পায় ১২৪ ভোট।

এছাড়া দ্বিতীয় সর্বনিম্ন ভোট পড়েছে ১০৭ নম্বর শহীদ বৃত্তি স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে; ভোটের হার ১৫.২৩ শতাংশ। এখানে ৩০৯২ ভোটারের মধ্যে ৪৭১ জন ভোট দিয়েছেন। নৌকা প্রতীকে আজমত উল্লা ১৮১ ভোট, টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন ২৩৩ ভোট পান।

তৃতীয় সর্বনিম্ন ভোট পড়ে ১৯৯ নম্বর কেন্দ্রে; ২০.৮৮ শতাংশ। হাজী আলাউদ্দিন মাতবর মাদ্রাসা কেন্দ্রে ২৪৬৭ ভোটারের মধ্যে ৫১৫ জন ভোট দিয়েছেন। এরমধ্যে নৌকা পেয়েছে ১৪৪টি এবং টেবিল ঘড়ি পেয়েছে ২৪৮টি।

এলাকাভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, টঙ্গী এলাকায় বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা। বাকি এলাকায় কম ভোট পেয়েছেন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হকের গাজীপুর ১ আসনের সংসদীয় এলাকার ১৮টি ওয়ার্ডে জায়েদা খাতুন ও আজমত উল্লার মধ্যে ভালো প্রতিযোগিতা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের ১ থেকে ১৮ নম্বর ওয়ার্ড পড়েছে এ আসনে। এসব ওয়ার্ডে ১৩২টি কেন্দ্র রয়েছে। এ এলাকায় নৌকা পেয়েছে ৬৪,৬৮৬টি ভোট। অপরদিকে টেবিল ঘড়ি পেয়েছে ৫৮,৬১৩ ভোট।

Also Read: গাজীপুরে কাউন্সিলর পদে জিতলেন যারা

Also Read: আওয়ামী লীগ জোর করে নিজের প্রার্থীকে জেতাতে যায়নি: কাদের

Also Read: ভোটের ‘আসল চিত্র’ দেখিয়েছে গাজীপুর: আমির খসরু

এছাড়া গাজীপুর ২ আসনের সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেলের এলাকায় এগিয়েছিল নৌকা। টঙ্গী পূর্ব ও পশ্চিম থানা (৪৩ থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড) এবং গাছা থানা (৩২-৩৮ নম্বর ওয়ার্ড) ও গাজীপুর সদর মেট্রো (২৩-৩১ নম্বর ওয়ার্ড) নিয়ে গাজীপুর ২ আসন। এ এলাকার ১৬৩টি কেন্দ্রে আজমত উল্লা পেয়েছেন ৭৩ হাজার ৭৮৪ ভোট এবং জায়েদা খাতুন পেয়েছেন ৫৫ হাজার ২৯২ ভোট। ৩ লাখ ৬৮ হাজার ৭০০ ভোটারের এই এলাকায় ভোট পড়েছে ১ লাখ ৬৬ হাজার ৭৭২ ভোট।

আর গাজীপুর ৫ আসনের সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকির সংসদীয় এলাকায় নৌকাকে পেছনে ফেলে টেবিল ঘড়ি। সিটি করপোরেশনের ৩৯ থেকে ৪২ নম্বর পর্যন্ত চারটি ওয়ার্ড পড়েছে গাজীপুর ৩ আসনের সীমানার মধ্যে, যেখানে ৩২টি ভোটকেন্দ্র রয়েছে। এসব কেন্দ্রে জায়েদা খাতুনের ভোটের সংখ্যা ২০,১৪৩টি ও আজমত উল্লার ১৫,৫০৪টি।

এক নজরে

>> জায়েদা খাতুন ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। 

>> আজমত উল্লা খান দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট পেয়েছেন।

>> ব্যবধান ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটের । 

>> ২০১৩ সালেও এ সিটি নির্বাচন করে বিএনপি সমর্থিত এম এ মান্নানের কাছে হেরেছিলেন আজমত উল্লা খান। তখনকার চেয়ে এবার তার ভোট আরও কমেছে। আজমত উল্লা তখন ২ লাখ ৫৮ হাজার ৮৬৭ ভোট এবং এম এ মান্নান পেয়েছিলেন ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৪ ভোট। তখন ভোটার ছিল ১০ লাখ ২৬ হাজার।