ক্ষতিগ্রস্ত ত্বক সারিয়ে তুলতে কয়েকটি প্রসাধনী এড়াতে পরামর্শ দিচ্ছেন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞরা।
সুস্থ ত্বকের জন্য ত্বক বিশেষজ্ঞরা ময়েশ্চারাইজার, সানস্ক্রিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ব্যবহারের পরামর্শ দেন।
তবে ইন্ডিয়াটুডে ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ত্বকের ক্ষতি করতে পারে এমন কিছু পণ্য ও সেগুলোর বিকল্প ব্যবহার সম্পর্কে জানান ত্বক-বিশেষজ্ঞরা।
অ্যালকোহল সমৃদ্ধ টোনার
দিল্লির ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. কিরণ লোহিয়া বলেন, “অ্যালকোহল উপকার না করে বরং ধীরে ধীরে ক্ষতি করে। এটা ত্বকের সকল পুষ্টি উপাদান শুষে নিয়ে ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে। যে কারণে অকালে বয়সের ছাপ ফেলে।”
বিকল্প উপায়: “অ্যালকোহল টোনারের পরিবর্তে গোলাপজল বা শসার নির্যাস সমৃদ্ধ আর্দ্রতারক্ষাকারী স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে”, বলেন লোহিয়া।
স্টেরোয়েড সমৃদ্ধ ক্রিম
মুম্বাই ভিত্তিক ত্বক বিশেষজ্ঞ এবং ‘এইজ ইরেইজ’ বইয়ের লেখক ডা রেশ্মি শেঠি বলেন, “ফর্সাকারী অনেক ব্র্যান্ডের প্রসাধনীতে স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয় যা ত্বক পাতলা করে, ফাটাভাব, দৃশ্যমান কৌশিক নালী, লালচেভাব ইত্যাদি সৃষ্টি করে। এছাড়াও, স্টেরোয়েড ব্রণ তৈরির জন্য দায়ী।”
বিকল্প উপায়: নিয়াসিনামাইড, কজিক অ্যাসিড, গ্লাইকোলিক অ্যাসিড, মালবেরি এক্সাটাক্ট এবং আরবুটিন সমৃদ্ধ প্রসাধনী ব্যবহার উপকারী, জানান শেঠি। এছাড়াও অন্যান্য উপাদান ত্বকে ব্যবহার উপকারী কিনা সে সম্পর্কে ত্বক বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া যেতে পারে।
দানাদার এক্সফলিয়েটর
কড়া, শক্ত স্ক্রাব ঘন ঘন ব্যবহারে ত্বক শক্ত ও শুষ্ক হয়ে যায়।
মুম্বাই ভিত্তিক ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. মাধুরি আগারওয়াল বলেন, “শক্তিশালী এক্সফলিয়েটিং উপাদানগুলো অনেক বেশি ঘর্ষণের সৃষ্টি করে। ফলে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, জ্বলুনির সৃষ্টি হয় এবং সংবেদনশীলতা বাড়ে।”
বিকল্প উপায়: মিহি দানার ওটস ও কাঁচ দুধ দিয়ে সপ্তাহে একবার এক্সফলিয়েট করার পরামর্শ দেন, ডা. আগারওয়াল। এতে কোনো ক্ষতি ছাড়াই মসৃণ ত্বক পাওয়া যায়।
“এছাড়াও, চাইলে ‘মাইক্রোডার্মাব্রেইশন’ করা যায়। সেক্ষেত্রে ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে।
স্যালনে তৈরি উপাদান
দিল্লি ভিত্তিক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা বন্দনা চতরাথ বলেন, “আমি কখনই স্যালনের তৈরি ক্রিম ব্যবহার করি না, তাতে তারা যত রকমের ভিটামিনের কথাই বলুক না কেনো!”
অনেক সময় ত্বক পরিচর্যাকারী স্থানীয়ভাবে নিজের তৈরি করা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন, সেক্ষেত্রে তাকে নিষেধ করা উচিত।
ডা. বন্দনা বলেন, “পণ্যের ব্র্যান্ড নাম ও উপকরণ তালিকা ছাড়া কোনো প্রসাধনী ব্যবহার করা উচিত না।”
বিকল্প উপায়: দোকান থেকে ভালো মানের প্রসাধনী কিনতে হবে। ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ময়েশ্চারাইজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের পণ্য ব্যবহার করাই উচিত।
এএইচএ সমৃদ্ধ ‘আন্ডার আই ক্রিম’
চোখের চারপাশের ত্বক অনেক বেশি পাতলা।
মুম্বাই ভিত্তিক চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অপর্ণা সান্থানাম জোর দিয়ে বলেন, “আলফা-হাইড্রোক্সি অ্যাসিড’ ও ‘বেটা-হাইড্রোক্সি অ্যাসিড সমৃদ্ধ ‘আন্ডার আই ক্রিম’ যেমন- গ্লাইকোলিক এবং স্যালিসাইলিক অ্যাসিড চোখের নিচে ব্যবহার করা ঠিক না।”
তিনি বলেন, “এসব উপাদান চোখের নিচের পাতলা ত্বককে আরও পাতলা করে দেয়।”
বিকল্প উপায়: উচ্চ আর্দ্রতা রক্ষাকারী এবং ভিটামিন ই সমৃদ্ধ ক্রিম ব্যবহার করা যায়। বলিরেখা কমাতে রেটিনল সমৃদ্ধ পণ্য ব্যবহার করা যায়।
সাধারণ সাবান
মুম্বাই ভিত্তিক কসমেটিক ত্বক বিশেষজ্ঞ ডা. জয়শ্রী শারদ বলেন, “আমি মুখে কখনও সাবান ব্যবহার করিনি।”
সাবানের বার ত্বকের পিএইচকে আরও ক্ষারীয় করে তোলে এবং ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়। এর ফলে জ্বলুনি সৃষ্টি হয় এমনকি ত্বকের বাইরের সুরক্ষার স্তর দুর্বল হয়ে পড়ে।
বিকল্প উপায়: সাবান মুক্ত তরল ক্লেঞ্জার ব্যবহারের পরামর্শ দেন, ডা. শারদ। ত্বকের যত্নে স্বচ্ছ ও সুগন্ধহীন পণ্য ব্যবহার করা উপকারী।
আরও পড়ুন