প্রসাধনীর ‘অ্যাক্টিভ’ উপাদান সম্পর্কে ধারণা

ত্বকের যত্নের জন্য বিভিন্ন প্রসাধনীতে থাকা ‘অ্যাক্টিভ’ উপাদান সম্পর্কে ধারণা থাকা দরকার।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Sept 2021, 06:11 AM
Updated : 8 Sept 2021, 06:11 AM

কারণ একটি প্রসাধনীতে সাধারণত একটি উপাদান বেশি সক্রিয় থাকে, বাকিগুলো সহ-উপাদান হিসেবে কাজ করে।

তাই কোন ধরনের সক্রিয় উপাদান আপনার ত্বকের ক্ষেত্রে মানাবে সেই ধারণা থাকলে প্রসাধনী বাছাই করতেও সুবিধা হয়।

ত্বকে ব্যবহৃত সেরাম, মাস্ক, ময়েশ্চারাইজার এবং অন্যান্য প্রসাধনীর কার্যকারিতাও নির্ভর করে এতে থাকা সক্রিয় উপাদানগুলোর ওপর।

‘ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে, ত্বকচর্চার প্রসাধনীর দুই রসায়নবিদ ‘কেমিস্ট কনফেশন্স ডটকম’য়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ‘স্কিনকেয়ার ডিকোডেড’ বইয়ের লেখক গ্লোরিয়া লু এবং ভিক্টোরিয়া ফু ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত প্রসাধনীর উপাদানগুলোর গুরুত্ব ও বাদ দেওয়া যাবে এমন উপাদানগুলো সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন।

‘অ্যাক্টিভ’ উপাদান আসলে কী?

‘অ্যাক্টিভ’ শব্দটি সাধারণত সৌন্দর্য এবং ত্বকের যত্নে ব্যবহৃত প্রসাধন শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এগুলো ত্বকে দীর্ঘমেয়াদী ফলাফল দেয় বলে জানান, লু।

উদাহরণ স্বরূপ- ত্বক উজ্জ্বল করা, প্রশান্ত করা, বয়সের ছাপ বা বলিরেখা কমানো, অথবা ‘হাইপারপিগমেন্টেইশন’ কমাতে এগুলো ব্যবহৃত হয়।

লু বলেন, “অ্যাক্টিভ’ শব্দটা নিয়ন্ত্রিত না অর্থাৎ এর কার্যকারিতার পার্থক্য ঘটতে পারে। প্রকৃত অর্থে কোনো উপাদানকে ‘সক্রিয়’ বলে বিবেচনা করার আদর্শ মাপকাঠি নেই। তবে ‘অ্যাক্টিভ’ বলতে রসায়নবিদ, গবেষক, ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতারা তাদের দাবি করা উপাদানটির কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে সফল হয়েছেন বলে বোঝায়।”

যেভাবে বুঝবেন সক্রিয় উপাদান কার্যকর

মান নির্ধারণের ঘাটতি থাকায় আদৌ ‘অ্যাক্টিভ’ উপাদান কতটা কার্যকর সে সম্পর্কে দ্বিধা থেকে যায়। প্রতিটা সক্রিয় উপাদানের একটা আলাদা আদর্শ আছে। তাই এর অতিরিক্ত ব্যবহার সবসময় ভালো ফলাফল নাও দিয়ে পারে।

লু বলেন, “দুই থেকে ৫ শতাংশ ‘নায়াসিনামাইড’ ব্যবহারের কার্যকারিতা সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যায়।”

তার মতে, কোনো ব্র্যান্ডের ‘নায়াসিনামাইড’যুক্ত পণ্য থাকলে তার আশপাশের উপাদানগুলোও এতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

লু বলেন, “একটা পণ্যের লেবেল দেখে এর ক্ষমতা বা কার্যকারিতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যায় না।”

তিনি ব্যাখ্যা করেন, “আমরা সাধারণত দুই ধরনের মাত্রা ব্যবহার করে থাকি- ঘনত্বের স্বচ্ছতা এবং ক্লিনিকাল পরীক্ষা। যদিও ঘনত্বের দিকে খেয়াল করলে এর সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাওয়া যাবে না।”

ঘনত্বের স্বচ্ছতা অনেক সময় বাহকের সঙ্গে মিলে সংখ্যাগত বিভ্রান্তি বাড়াতে পারে। এর মাত্রা বৃদ্ধিতে ত্বকে জ্বালাপোড়া বা অস্বস্তি দেখা দিতে পারে। তাই কোনো পণ্য ব্যবহারের আগে সেটার সম্পর্কে খানিকটা খোঁজ খবর নেওয়া প্রয়োজন বলে করেন লু।

ত্বকে কোনো পণ্য ব্যবহারের আগে ত্বক বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়া ভালো। এছাড়াও পণ্য সম্পর্কে দ্বিধা থাকলে তাদের পণ্য বা ব্র্যান্ডের ক্লিনিকাল পরীক্ষা সম্পর্কে খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন, লু এবং ফু।

জানা প্রয়োজন

লু এবং ফু ‘বিগ ৪’ বা মূল চারটি ‘অ্যাক্টিভ’ উপাদান ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

যদিও এটা সম্পূর্ণ তালিকা নয় তবে এর মধ্যে রয়েছে- ভিটামিন সি, রেটিনল, আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড (এএইচএ), গ্লাইকোলিক বা ল্যাক্টিক অ্যাসিড এবং নায়াসিনামাইড। 

ফু বলেন, “এই উপাদানগুলোর কার্যকারিতা ও উপকারিতা সম্পর্কে যথেষ্ট গবেষণা করা হয়েছে এবং কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে জানা গেছে। এছাড়াও অন্যান্য উপাদানগুলোর মধ্যে ‘হাইয়ালুরোনিক অ্যাসিড’, বিএইচএ’এস, পেপটাইড ও সেরামাইডের উপকারিতাও লক্ষ করা যায়।”

আগে কোনো ‘অ্যাক্টিভ’ উপাদান ব্যবহার করে না থাকলে ধীরে ধীরে তা ত্বক পরিচর্যায় যুক্ত করা হল আদর্শ উপায়। এতে ত্বক কেমন প্রতিক্রিয়া করে তা বিবেচনা করে পরের ধাপে যেতে হবে।

যেমন- রেটিনল প্রথম ব্যবহার শুরু করলে প্রথমে কম ঘনত্বের (০.১ থেকে ০.৩ শতাংশ) ও সপ্তাহে দুতিনবার ব্যবহার করে দেখতে পারেন।

ত্বক এতে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া না দেখালে ধীরে ধীরে এর মাত্রা ও ব্যবহার বাড়ানো যেতে পারে।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যে ‘অ্যাক্টিভ’ উপাদানই ব্যবহার করা হোক না কেনো, ত্বককে ভালো রাখতে সানব্লক ব্যবহার এড়ানো যাবে না।

ত্বকের যত্নে সক্রিয় উপাদান থাকুক বা না থাকুক, নিয়মিত সানস্ক্রিন ব্যবহার জরুরি বলে মনে করেন, ফু।

ছবি: রয়টার্স।

আরও পড়ুন