বিভিন্ন কারণে ত্বক পরিচর্যার প্রসাধনীর কার্যাকারিতা কমে যেতে পারে।
Published : 08 Jan 2020, 11:53 AM
ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নানান ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করা হয়। প্রথম অবস্থায় ফলাফল ভালো দিলেও সময়ের ব্যবধানে সেগুলোর কার্যকারিতা কমতে থাকে।
অন্যতম কারণ হতে পারে সেসব প্রসাধনীর ক্ষেত্রে ত্বকের প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়া।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের ওপর প্রকাশিত প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের ত্বক বিশেষজ্ঞ মার্নি নুসবাউম বলেন, “প্রসাধনীর কিছু উপাদান সময়ের ব্যবধানে ত্বকের উপর প্রভাব ফেলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। এই অবস্থার নাম ‘ট্যাকিফিলাক্সিস’। এটা যখন হয় তখন শরীর ‘মলিকিউলার’ পর্যায়ে সংকেতের পরিবর্তণ ঘটায়, ফলে প্রসাধনী পণ্য আর আগের মতো কাজ করে না।”
যে কারণে ত্বকে প্রসাধনী কাজ করা বন্ধ করে দেয়
ডা. নুসবাউম বলেন, “আপনি কোন প্রসাধনী ব্যবহারের প্রথমেই সবচেয়ে ভালো ফলাফল পাবেন। এর মানে হল, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পণ্যটি কাজ করছে। দৃশ্যমান ফলাফল হয়ত হ্রাস পাচ্ছে অথবা তা সনাক্ত করা দুষ্কর হয়ে পড়ছে।”
“এছাড়াও, আপনি যদি নিয়মিত প্রসাধনী পরিবর্তন করে থাকেন তবে বিভিন্ন ধরনের উপাদান একসঙ্গে মিশে ঠিক মতো কাজ করতে পারেনা। যেমন- ভিটামিন সি’ জারিত করতে পারে বেঞ্জয়েল পারঅক্সাইড। আর এই দুই উপাদান একসঙ্গে কাজ করতে পারেনা। ভিটামিন সি এবং রেটিনয়েডস আলাদাভাবে সকাল ও বিকালে ব্যবহার করা উপকারী।” বলেন ডা. নুসবাউম।
পরিবেশও এর উপরে প্রভাব রাখে। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, তাই সিরাম বা লোশনের পক্ষে মৃত কোষের কারণে ত্বকের সমস্যা খুঁজে বের করে কাজ করাটা বেশ কষ্টকর হয়ে পড়ে বলে জানান এই ত্বক বিশেষজ্ঞ।
পরিবেশের পরিবর্তন যেমন- অতিরিক্ত সিগারেটের ধোঁয়া, গৃহস্থালী রাসায়নিক উপাদান, অথবা সূর্যরশ্মি, ত্বকে উন্মুক্ত রেডিকেল বৃদ্ধি করে। এসব কারণে প্রসাধনী ঠিক মতো কাজ করতে পারেনা।
কিছু উপাদান আছে যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভালো কাজ করে যেমন-রেটিনল।
ডা. নুসবাউম বলেন, “অধিকাংশ মানুষই মনে করেন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রেটিনয়েডস কম কাজ করে। আসলে এর উল্টোটা হয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ত্বক এতে সহিষ্ণু হয়ে ওঠে। কোনো রকম লালচেভাব বা চামড়া ওঠার সমস্যা ছাড়াই তা ত্বকে কাজ করতে থাকে।”
যখন প্রসাধনী পরিবর্তন করা প্রয়োজন
নিউইয়র্ক এবং লস অ্যাঞ্জেলেস’য়ের ‘স্যালনস অ্যান্ড স্কিন কেয়ার’য়ের প্রতিষ্ঠাতা জোয়ানা ভার্গাস বলেন, “যখন প্রসাধনী ত্বকে কোনো রকমের পরিবর্তন আনতে পারেনা তখনই প্রসাধনী পরিবর্তন করা প্রয়োজন।”
প্রয়োজন হলে প্রসাধনী পরিবর্তন করতে হবে বলে জানান তিনি। এটা হতে পারে শুষ্ক শীতকালে সিরাম থেকে লোশন অথবা লোশন থেকে ক্রিমে পরিবর্তন করা।
ডা. নুসবাউম বলেন, “রূপচর্চায় নতুন উপাদান যোগ করতে চাইলে খারাপ সমন্বয়গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। সকাল ও রাতের প্রসাধনী আলাদা করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে। একটার জন্য অন্য আরেকটা পণ্যকে বাদ না দিয়ে অথবা একবারে বেশি প্রসাধনী ব্যবহার না করে সময় আলাদা করে ব্যবহার করলে উপকার পাওয়া যায় বেশি।”
প্রসাধনীর কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী করার উপায়
ডা. নুসবাউমের মতে, সপ্তাহে দুএকবার নিয়ম করে ত্বক এক্সফলিয়েট করা উচিত। এত মৃত কোষ দূর হয়। আর কার্যকরী উপাদান কাজ করতে পারে। ভালো ফলাফল পেতে যে কোনো প্রসাধনী ব্যবহারের আগে ত্বক থেকে মেইকআপ ও ময়লা ভালো ভাবে দূর করে নিতে হবে।
উন্মুক্ত রেডিকেল ধীরে ধীরে ত্বকের কোষকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ফলে ত্বক হয়ে যায় শুষ্ক, নির্জীব। আর বলিরেখা ও বয়সের ছাপ দৃশ্যমান হয়ে ওঠে বলে জানান, নুসবাউম।
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন