“যারা চিহ্নিত দরিদ্র শতকরা ২০ ভাগ, তাদের জন্য এক কোটি কার্ড, প্রয়োজনে আরও ৫০ লাখ কার্ড বাড়ানো যেতে পারে,” পরামর্শ তার।
Published : 29 May 2024, 01:38 AM
নির্বাচনি ইশতেহার বিবেচনায় নিয়ে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণকে বাজেটে অগ্রাধিকারে রাখার পরামর্শ দিয়ে গত সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান চাল, ডাল ও তেলের মত পণ্যকে পুরোপুরি শুল্ক ও ভ্যাটমুক্ত রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।
নতুন সরকারের প্রথম বাজেটকে সামনে রেখে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের মুখোমুখি হয়ে তিনি তুলে ধরলেন তার বাজেট ভাবনা।
তার মতে, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে টেকসই এবং গ্রামীণ স্বাস্থ্যসেবাকে ‘আরও শক্তিশালী করা’ সরকারের অগ্রাধিকারে থাকা উচিত।
তিনি বলেন, “অগ্রাধিকার মনে হয়, সরকার না চাইলেও হয়ে গেছে। সরকার যেহেতু, মানুষ দ্বারা, মানুষের ভোট দ্বারা নির্বাচিত, মানুষের মন বুঝে… সরকারকে এই মুহূর্তে দ্রব্যমূল্যকে ‘আক্রমণ’ করতেই হবে, অত্যন্ত জনপ্রিয় একটা বিষয়।”
টানা চারবারের সংসদ সদস্য মান্নান দুই মেয়াদে সরকার পরিচালনায় জড়িত ছিলেন। ২০১৪ সালে দশম সংসদ নির্বাচনের পর হন অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী, যদিও সে সময় দুটি আলাদা মন্ত্রণালয় ছিল।
শুরুতে তাকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর চার মাস পর পোর্টফোলিওতে যুক্ত হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ও।
২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর তাকে করা হয় পরিকল্পনামন্ত্রী।
গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের পর যে সরকার গঠন হয়, সেখানে মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি মান্নানকে, যিনি আগের সরকারে বেশ স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য পরিচিত ছিলেন। তাকে এবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে।
আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের অগ্রাধিকার থাকা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিদ্যুৎটাকে টেকসই করতে হবে, অত্যন্ত জনপ্রিয় বিষয়। স্বাস্থ্যসেবা গ্রামে যেটা আছে, কমিউনিটি ক্লিনিক- এটাকে শক্তিশালী করতে হবে, আরও উদার করতে হবে। আরও বেশি বিনামূল্যে ওষুধ দিতে হবে।
“স্কুল বই দেবে, শিক্ষক দেবে আর বিনামূল্যে খাবার দেবে। এগুলা সরকারের অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা।”
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কী করা যেতে পারে, এই প্রশ্নে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান বলেন, “মূল্যস্ফীতিকে কমাতে হলে সাপ্লাই সাইডটাকে বাড়াতে হবে। বাজারে জিনিসপত্রের সরবরাহ নির্বিঘ্ন করতে হবে, নিশ্ছিদ্র করতে হবে, বাড়াতে হবে।
“যেগুলো নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস, চাল-ডাল-তেল, সম্পূর্ণ শুল্কমুক্ত, ঝামেলামুক্ত, ভ্যাটমুক্ত- ঝুট ঝামেলামুক্ত রাখতে হবে; এটা প্রথম কাজ।”
এক কোটি দরিদ্র মানুষকে টিসিবির মাধ্যমে সাশ্রয়ী দামে পণ্য বিক্রির জন্য যে কার্ড দেওয়া হয়েছে সেটির আওতা আরও বাড়ানোর পরামর্শও দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, “যারা চিহ্নিত দরিদ্র শতকরা ২০ ভাগ, তাদের জন্য এক কোটি কার্ড, প্রয়োজনে আরও ৫০ লাখ কার্ড বাড়ানো যেতে পারে। তাদের সাশ্রয়ী মূল্যে বিভিন্ন জিনিস দেওয়া যেতে পারে।
“সড়কপথে মাল চলাচল আগের তুলনায় এখন ভালো, আরও ভালো করা যায়, আরও দ্রুত করা যায়। বাজারগুলো যেন নির্বিঘ্নে বসতে পারে, এগুলো করলে কিন্তু এটা (পণ্যমূল্য) কমে আসবে বলে আমি মনে করি।”
নজর যাক গ্রামে
মন্ত্রীর দায়িত্ব থাকাকালে সময় পেলে গ্রামে ছুটে যেতেন এম এ মান্নান। সরকারে না থাকায় এখন গ্রামে বেশি সময় কাটানোর সুযোগ পাওয়ার কথা বলছেন সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-শান্তিগঞ্জ) আসনের এই সংসদ সদস্য।
গ্রামের বাড়ি থেকেই গত শনিবার টেলিফোনে এই সাক্ষাৎকার দেন তিনি। বলেন, “গ্রামের মানুষের চাহিদার জায়গায় এখন বেশ ‘পরিবর্তন এসেছে’।
“গ্রামের মানুষ বিদ্যুৎ পেয়ে খুশি। এখন তারা চায় বিদ্যুৎ যেন সব সময় থাকে, ২৪ ঘণ্টা যেন থাকে। জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, কিন্তু তারা এটা সহ্য করে। তারা চায়, ১ কোটি কার্ডের জায়গায় বাড়িয়ে যেন আরও কার্ড দেওয়া হয়। আরও কম টাকায় জিনিস দেওয়া হয়।
“গ্রামের মানুষ স্কুলে ভালো পড়াশোনা চায়, মাদ্রাসায় ভালো পড়াশোনা চায়। এগুলো গ্রামের দাবি এবং আমিও গ্রামের দাবির সঙ্গে একমত। এইগুলোই সরকারের প্রথম এবং প্রধান কাজ হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।”
‘শান্তি-শৃঙ্খলা’ প্রান্তিক মানুষের অগ্রাধিকারে থাকার কথা তুলে ধরে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার, এক নম্বরে গ্রামের মানুষ যেটা চায়, দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা। এই হচ্ছে তাদের প্রথম দাবি- চুরি-ডাকাতি হবে না, জোর জবরদস্তি হবে না, কাজ করে খাওয়ার পরিবেশ। স্থিতিশীল সরকার চায়, শুদ্ধ ভাষায় বলতে গেলে।
“শান্তি-শৃঙ্খলার সুরক্ষা চায়, কোর্টকাচারিতে গিয়ে যেন তাড়াতাড়ি বিচার পেতে পারে, এগুলো চায় মানুষ। এগুলো তাদের প্রাধান্য। তারা জানে, সরকার আমাকে ঘরে এনে ভাত খাওয়াবে না। কাজ করার পরিবেশ চায়।”
‘আমলাতন্ত্রের ঢিলেমি’
চলতি বছর সাত মাসে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপি বাস্তবায়নের হার ২৭ শতাংশ, যা ১২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
এমন পিছিয়ে থাকার বিষয়ে এক প্রশ্নে মান্নান তোলেন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে ‘প্রয়োজনীয় লোকবলের সংকট’ এবং বাজেটে আর্থিক ‘টানাটানির’ কথা।
তিনি বলেন, “এই যে ৬, ৭ বা ৮ শতাংশ করে অর্থনীতি বাড়ছে, এর তুলনায় প্রয়োজনীয় লোক যারা কাজ করে, এর সংখ্যা বাড়ে নাই।
“অপ্রয়োজনীয় লোক আমলাতন্ত্রে কিছু ভিড়ে যায়, না চাইলেও বেড়ে যায়। কিন্তু প্রয়োজনীয় লোকের সংখ্যা কম। এটা হল এক নম্বর ইস্যু।”
যত টাকার বাজেট করা হয়, অত টাকা সংগ্রহ করা যায় না, টানাটানি পড়ে যায় মন্তব্য করে তিনি বলেন, “এগুলো অপরিচিতি সমস্যা নয়। আমরা জানি এগুলো হবেই। এগুলো ম্যানেজ করতে হয়। যে কোনো সরকার, স্থিতিশীল সরকার যদি হিসাবনিকাশ ঠিক করে চলে, এগুলো মোকাবিলা করা যাবে।”
সরকারি চাকুরেদের কর্মস্পৃহা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “টাকা পায় দেরিতে। বরাদ্দ ছাড়ে না, অনেকে আটকে নিয়ে বসে থাকে। অনেক সরকারি অফিস সময়মত কাজ করে না, ঢিলেমি করে, অফিসাররা মাঠে থাকে না, গ্রামে থাকে না। শহরে বাস করে, গ্রামের মানুষকে অরক্ষিত রেখে।
“সেবা না দিয়ে বেতনভাতা শহরে বসে খায়। বহু আছে এই রকম। এগুলো যোগ করলে বিরাট একটা সমস্যা সৃষ্টি হয়। এই হল মোট কথা।”
বিদেশি ঋণের প্রকল্পে আলাদা কিছু ঝামেলা থাকার কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, “ঋণের অনেক শর্ত আছে, এগুলা মোকাবেলা করতে হয়। সময় বয়ে যায়, তারা দেখতে আসে মাঝে মাঝে, তারা দেরি করে আসে, দেরি করে যায়। তাদের নিয়মনীতি আমাদের চেয়ে ভিন্ন।”
প্রথম সাত মাসে ২৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হলেও শেষ পর্যন্ত সেটি ৯০-৯২ শতাংশ হয়ে যাবে মন্তব্য করে মান্নান বলেন, “এগুলা কোনো ম্যাজিক নয়, এগুলো হতে বাধ্য। বিলগুলো ক্লিয়ার হয়ে আসে, হিসাব ক্লিয়ার হয়ে আসতে দেরি হয়, এজন্য এগুলো হয়।”
‘লোক দেখানো প্রকল্প নয়’
ব্যক্তিগতভাবে বড় প্রকল্প গ্রহণের পক্ষে হলেও মানুষের উপকারের বিষয়কে প্রথমে বিবেচনার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী।
তিনি বলেন, “আমি ব্যক্তিগতভাবে বড় প্রকল্পের পক্ষে। কোন বড় প্রকল্প? যে প্রকল্প বড়ভাবে মানুষের উপকারে আসে।”
‘ছয় কোটি মানুষকে উজ্জীবিত করার’ পদ্মা সেতু, ‘যানজট থেকে স্বস্তির’ মেট্রোরেল এবং মানুষের চলাচলের ‘পথ সুগম করা’ ঢাকা-কক্সবাজার রেলওয়ের উদাহরণ দেন মান্নান।
তিনি বলেন, “এমন প্রকল্প যত বেশি হবে, আমি খুশি। আমি চাই, এগুলো নিয়ে আমার কোনো আপত্তি নাই। তবে লোক দেখানো প্রকল্প, যেখান থেকে আমি রিটার্ন পাব না, এর বিরুদ্ধে সমাজে সার্বিকভাবে আমাদের অবস্থান নিতে হবে এবং কাজের কাজ করতে হবে।”
বড় প্রকল্পে স্বচ্ছতার জন্য আমলাতন্ত্রকে ‘ঝালাই’ করতে হবে মন্তব্য করে সাবেক মন্ত্রী মান্নান বলেন, “আমলাতন্ত্র অপ্রয়োজনীয় অনেক খরচ রাখে, ১০ টনের জায়গায় ২০ টন করে… সরকারি অর্ডারগুলো ইলেকট্রনিক্যালি, ডিজিটালি দিতে হবে, মানুষ দ্বারা নয়।”
প্রকল্প বাস্তবায়নে সময় বেঁধে দেওয়ায় জোর দিয়ে তিনি বলেন, “এতদিনের মধ্যে যদি না করে, জরিমানা হবে।
“আমাকে, কেরানিকে, পিয়নকে, প্রত্যেকের কাজ টাইম-বাউন্ড এবং ডিজিটালি করতে হবে। এভাবে কাজ করলে আমাদের গতিবেগ অনেক বেড়ে যাবে।”
অর্থনীতির চাপ ‘অস্বাভাবিক নয়’
মহামারীর পর রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের ধাক্কায় বাংলাদেশ যে চাপের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, সেটাকে ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে মানছেন না মান্নান।
তিনি বলেন, “আমাদের একটা উন্নয়নশীল অর্থনীতি, সব সময় চাপের মধ্যে থাকে। টানাটানির সংসার, এই চাপে আমরাও আছি। এটা অন্যায় কোনো চাপ নয়। এই চাপ না থাকলে আমরা মৃতপ্রায় অর্থনীতি হয়ে যেতাম। যেহেতু অর্থনীতি বড় হচ্ছে, সেহেতু এই চাপগুলো আসতেছে।
“এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। দুনিয়ার সমস্ত দেশ, যারা উন্নত, তারাও এই চাপের মধ্য দিয়ে গিয়েছে। আমাদের জনগণ যেহেতু সচেতন, ফেইসবুক, সোশাল মিডিয়ায়, আমরা বেশি শুনি এবং দেখি। একশ বছর আগে, ৭০ বছর আগে এই রকম ছিল না। এটা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নাই।”
অপচয় রোধ, দুর্নীতি পরিহার এবং মিতব্যয়িতার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, “আমি মনে করি, যে কোনো পরিবার, সমাজ এবং রাষ্ট্রে অপচয় রোধ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুর্নীতি পরিহার, অপচয় রোধ এবং মিতব্যয়িতার মাধ্যমে যদি আমরা জৌলুস পরিহার করি, এইগুলো কোনো সমস্যা।
“আরেকটা বিষয় হল বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে, কাজের মত কাজে। যে কাজে ফায়দা আসবে। যেসব প্রকল্পের ব্যয়ে বা কাজে আমার রিটার্ন নাই, এগুলো থেকে সরে আসতে হবে। এই হল কথা।”
বিদেশি ঋণের চাপ কমাতে জোর
প্রয়োজনীয় খাতে বিদেশি ঋণের উপর নির্ভর করলেও নিজেদের অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী করতে উৎপাদন বাড়ানো এবং বিদেশে দক্ষ কর্মী পাঠানোর উপর জোর দেন সাবেকমন্ত্রী এম এ মান্নান।
তিনি বলেন, “ঋণ নেওয়া বন্ধের পক্ষে আমি নই। ঋণ না হলে ভালো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারব না। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ- এগুলোতে নিতেই হবে ঋণ। তবে হ্যাঁ, বাস্তবায়নের হার বাড়াতে হবে, অপচয় রোধ করতে হবে। দ্রুত কাজ করতে হবে।
“দেশের উৎপাদন, চাল, ডাল, মাছ, মুরগি, হাঁস পরিমাণে বাড়াতে হবে। যাতে আমরা নিজেরা খেয়ে বিদেশে রপ্তানি করতে পারি। শিল্প উৎপাদন বাড়াতে হবে। কাপড়ে, সুতায় অন্যান্য খাতে, যেখানে আমাদের সম্ভাবনা আছে, সুযোগ বাড়াতে হবে।
“আর লোকজনকে অধিক পরিমাণে বিদেশে পাঠানোর সুযোগ করে দিতে হবে। ট্রেইনিং দিতে হবে। বিনা প্রশিক্ষণে লোক পাঠালে ক্ষতি, কম বেতন পায়। এক মাসের প্রশিক্ষণ হলেও কিছু কাজ শিখিয়ে বিদেশে পাঠানো উচিত।”
আরও পড়ুন:
বাজেট: বাড়ছে বয়স্ক ও বিধবা ভাতাভোগীর সংখ্যা
বাজেটে সর্বোচ্চ গুরুত্ব থাকছে মূল্যস্ফীতি রোধে: অর্থ প্রতিমন্ত্রী
ভর্তুকি দিয়ে সবটা চলবে না: নতুন বাজেট নিয়ে প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান
বাজেট ২০২৪-২৫: এনবিআরের ওপর বাড়ছে কর আদায়ের সেই পুরনো চাপ
বাজেট: সামাজিক সুরক্ষার পরিধি বাড়ছে, 'সীমিত হচ্ছে' কর অবকাশ