কখনও বলেননি, কিন্তু মনের গভীরে বিশ্বকাপে শতক করার স্বপ্ন দেখছিলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। চার নম্বরে ব্যাট করা এই ব্যাটসম্যানের সুযোগ এসেছিল স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই। সেই ম্যাচে পারেননি, ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তিন অঙ্কে পৌঁছে স্বপ্ন ঠিকই পূরণ করেছেন তিনি।
Published : 09 Mar 2015, 10:12 PM
ইংল্যান্ডকে হারিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে বাংলাদেশ
প্রশংসায় ভাসছেন ‘বিধ্বংসী’ রুবেল
সেই পেসাররাই জেতালেন বাংলাদেশকে
ইংল্যান্ড কোচের মাহমুদুল্লাহ স্তুতি
ধারাবাহিকতায় সন্তুষ্টি অধিনায়কের
সোমবার অ্যাডিলেইড ওভালে ইংল্যান্ডকে ১৫ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে পৌঁছায় বাংলাদেশ। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ জানান, বিশ্বকাপে নিজের প্রথম শতকটি করার স্বপ্ন দেখছিলেন তিনি।
“যতদিন খেলব, এই ইনিংস আমার জন্য বিশেষ হয়ে থাকবে। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও ভেবেছিলাম, কিন্তু হয়নি। আজ তেমন কিছু ভাবিনি। আমি শুধু জুটি গড়তে চেয়েছিলাম। যারা আমার সঙ্গে ব্যাট করেছে, তাদের ভূমিকাই বেশি মনে হয়।”
শতকে পৌঁছানোর আগে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ৮৬ ও মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ১৪১ রানের দুটি চমৎকার জুটি উপহার দেন মাহমুদুল্লাহ। তিনি জানান, তিন অঙ্কে পৌঁছানোর আগে একটু স্নায়ুচাপে ভুগছিলেন তিনি।
“একটু নার্ভাস লাগছিল। জেমস অ্যান্ডারসনের বলে ৯২ রান থেকে চার মেরে ৯৬ রানে গিয়ে একটু স্বস্তি পাই।”
মাত্র ৮ রানের মধ্যে দুটি উইকেট হারিয়ে ভীষণ বিপদে পড়েছিল বাংলাদেশ। অ্যান্ডারসন ও স্টুয়ার্ট ব্রডের সুইং তখন দুর্ভাবনায় ফেলেছিল মাশরাফি বিন মুর্তজার দলকে।
“শুরুতে (ব্যাটিং) খুব কঠিন ছিল। অ্যান্ডারসনকে খুব কঠিন মনে হচ্ছিল। তবে ভালো বল দেখেশুনে খেলে বাজে বলের জন্য অপেক্ষা করছিলাম। সুইং বন্ধ হওয়ার পর সহজই মনে হয়েছে। উইকেট ভালো ছিল। ব্যাট করতে ভালো লেগেছে।”
প্রতিরোধ গড়ে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেয়া মাহমুদুল্লাহ বলেন, “আমি খুব বেশি কিছু ভাবছিলাম না। আমি ছন্দে ছিলাম। আমি শুধু ব্যাট করে যেতে চেয়েছিলাম। খুব বেশি কিছু ভাবতে চাইনি।”
“আমি সৌম্যর সঙ্গে একটা জুটি গড়তে চেয়েছিলাম। আমরা পেরেছিলামও। এরপর মুশির সঙ্গে একটা ভালো জুটি গড়ি।”
বিশ্বকাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান শতক পান মাহমুদুল্লাহ। ওয়ানডেতে এটাই তার প্রথম শতক। ১০৩ রানের চমৎকার ইনিংসের সুবাদে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি।
গত বছর হঠাৎ করেই যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিলেন মাহমুদুল্লাহ। জিম্বাবুয়ে সিরিজের আগে ভীষণ চাপে ছিলেন তিনি। কিন্তু বছরের শেষ দিকে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে রানে ফিরেন তিনি।
বিশ্বকাপেও ছন্দ ধরে রাখা মাহমুদুল্লাহ বলেন, “মাঝে খুব কঠিন সময় গেছে। একটা বছর আশানুরূপ পারফর্ম করতে পারিনি। এটা শেখার একটা ব্যাপার ছিল। অনেক কিছু দেখেছি, অনেক কিছু শিখেছি।”
বাংলাদেশের ব্যাটিং এখন আরো অনেক পরিণত। এর জন্য কোচ চন্দিকা হাথুরুসিংহেকে কৃতিত্ব দিলেন ইংল্যান্ড ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় মাহমুদুল্লাহ।
“আমাদের একটা কোচের ভূমিকা আছে। তিনি সব সময় ইতিবাচক থাকতে বলেছেন। কোনো দ্বিধা না করে শট খেলতে বলেছেন। আমার মনে হয়, এই স্বাধীনতাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
গত বিশ্বকাপে নবম উইকেটে শফিউল ইসলামের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন ৫৮ রানের জুটি গড়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশকে দারুণ এক জয় এনে দিয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ। সেই ম্যাচের পার্শ্ব নায়ক, মাহমুদুল্লাহই এবার জেতালেন দলকে।
তবে জয়ের জন্য সতীর্থদেরই কৃতিত্ব দিয়ে এই অফস্পিন অলরাউন্ডার বলেন, “এটা আমাদের জন্য দারুণ একটা জয়। ছেলেরা যেভাবে লড়েছে তাতে আমি খুশি। বোলারদের ধন্যবাদ। ওরা অসাধারণ বল করেছে। রুবেল, মাশরাফি, তাসকিন সবাই ভালো বল করেছে।”