কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে ‘দায়িত্বহীন’ মন্তব্য করায় ‘মব’ উৎসাহ পাচ্ছে বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষকদের কেউ কেউ।
Published : 24 Feb 2025, 01:38 AM
কখনো ‘কিছু লোকের বাধা’, আবার কখনো ‘তৌহিদী জনতার আপত্তির’ মুখে বন্ধ হচ্ছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান; এর মধ্যে পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে ১০০ গরু জবাইয়ের প্রচারও চালানো হচ্ছে, যেখানে নববর্ষের ভোরে ছায়ানটের আয়োজন থাকে।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর প্রায় সব জায়গায় কর্তৃপক্ষের যে ভাষ্যটি আসে, তা হল- ‘তৌহিদী জনতা’ কিংবা ‘ছাত্র-জনতা’ বাধা দিয়েছে। অথবা ‘কিছু লোক’ এসে বাধা দিয়েছে।
এই ‘ছাত্র জনতা’, ‘তৌহিদী জনতা’ বা ‘কিছু লোক’ কারা? তা কেউই স্পষ্ট করে বলছেন না। বাধা দেওয়ার পর প্রায় সব ঘটনাকেই ‘মব’ বলা হচ্ছে।
কিন্তু এই ‘মব’ কারা তৈরি করছেন? তার উত্তর মিলছে না।
সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কিছু অনুষ্ঠান বন্ধ হওয়ার খবর তুমুল আলোচনা তৈরি করলেও যারা এসব বন্ধ করছেন, সেই পেছনের মানুষগুলো রয়ে যাচ্ছেন আলোচনার বাইরে।
রাজনীতি বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, সরকারের ‘উদাসীনতার’ কারণে ‘মব’ ব্যাপারটি ‘ভয়াবহ’ রূপ নিচ্ছে। তাদের থামানো যাচ্ছে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে ‘দায়িত্বহীন’ মন্তব্য করার কারণেও ‘মব’ উৎসাহ পাচ্ছে বলেও কারো কারো মত।
তবে এ ধরনের ঘটনায় দেশে সংস্কৃতিচর্চা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে- তেমনটা মনে করছেন না সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলছেন, “সারাদেশে প্রচুর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হচ্ছে, ফলে শিল্প-সাহিত্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, এই প্রপাগান্ডা ছড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা ঠিক না।”
যদিও কিছু কিছু জায়গায় এমন ঘটনার কথা স্বীকার করে উপদেষ্টা বলছেন, সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ হওয়া অনুষ্ঠান চালুর উদাহরণও টেনেছেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জোবাইদা নাসরীন অবশ্য বলছেন, সরকারের দিক থেকে কোনো অনুষ্ঠানে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে আবার কোনো অনুষ্ঠানে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না। এর মধ্যেই সরকারের ‘আদর্শিক রাজনীতি’ রয়েছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যারা গান বন্ধ করতে চায়। নাটক, কবিতা বন্ধ করতে চায়। মেয়েদের খেলা বন্ধ করতে চায়। কোনো কোনো উপদেষ্টার বক্তব্য তাদেরকেই প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। এটা হচ্ছে সবচেয়ে বড় দুর্ভাগ্যের কারণ।”
টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় হেফাজতে ইসলামের আপত্তির মুখে লালন স্মরণোৎসব বন্ধ করা হয়। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি এই উৎসব হওয়ার কথা ছিল। পরে মধুপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন সাংবাদিকদের বলেছেন, “সমঝোতার মাধ্যমে স্থগিত হওয়া লালন স্মরণোৎসবের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বড় আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি করা হবে।”
তবে অনুষ্ঠানে মধুপুর লালন সংঘ থেকে ‘বিতর্কিত’ বক্তব্য, তথ্য ও সংগীত উপস্থাপন না করার শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়। ফকির লালন সাইজির ১৩৪তম তিরোধান বর্ষ উপলক্ষে ‘মধুপুর লালন সংঘ’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজক।
তার আগে নারায়ণগঞ্জে ‘মহতি সাধুসঙ্গ ও লালন মেলা’ বন্ধ করে দেওয়া হয় ‘তৌহিদী জনতা’ পরিচয়ে স্থানীয় কয়েকজনের হুমকির কারণ।
১৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় অধিবেশনে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইলে লালন স্মরণোৎসব বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে সংস্কৃতি উপদেষ্টা বলেছেন, “অনেক জায়গায় (সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান) সফলভাবে হচ্ছে। যদি পাঁচটি জায়গায়ও কোনো ঝামেলা হয় আমরা সাথে সাথে অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করছি। ফলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে যেখানে যেখানে ট্রাবল দেখা যাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন সাথে সাথে সেখানে অ্যাড্রেস করছে।”
১৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের একটি অনুষ্ঠানে চিত্রশিল্পী রফিকুন নবীকে (রনবী) মঞ্চে উঠতে আপত্তি তোলা হয় বলে অভিযোগ এসেছে।
অনুষ্ঠানটির আয়োজকেরাও বলেছেন, কিছু লোক বিশৃংখলা করার পরিকল্পনা করছিল। রফিকুন নবীর সম্মান বাঁচাতে তাকে অনুষ্ঠানের মঞ্চে উঠতে মানা করেছেন তারাই।
রফিকুন নবী চারুকলা অনুষদেরই অগ্রজ শিক্ষক, এমিরেটাস অধ্যাপক।
তিনি মঞ্চে উঠলে কাদের আপত্তি? অঙ্কন ও চিত্রায়ণ বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইকবাল আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চারুকলার বাইরের কিছু লোকজন রফিকুন নবী স্যারকে অতিথি করা নিয়ে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করছিল।”
পুরনো খবর
টাঙ্গাইলে হেফাজতের আপত্তির মুখে লালন স্মরণোৎসব বন্ধ
চারুকলা থেকে ফিরে গেলেন রনবী, কী হয়েছিল সেখানে?
বাধার মুখে নারী তারকারা ও মেয়েদের ফুটবল
গত ২৫ জানুয়ারি হেফাজতে ইসলামের হুমকির মুখে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলায় প্রসাধন ও অন্যান্য সামগ্রীর একটি কোম্পানির বিক্রয়কেন্দ্র উদ্বোধনের অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়, যেটি উদ্বোধন করার কথা ছিল অভিনেত্রী পরীমনির।
এর আগে অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী এবং গায়িকা পড়শীও এমন হেনস্তার শিকার হয়েছেন, সে কথা তুলে ধরে চিত্রনায়িকা পরীমনি ফেইসবুকে লেখেন, “এত চুপ করে থাকা যায় নাকি! পরাধীন মনে হচ্ছে। শিল্পীদের এতো বাধা কেন আসবে? ইনসিকিউর ফিল হচ্ছে। এমন স্বাধীন দেশে নিরাপদ নই কেন আমরা।”
বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতে দেশের বিনোদন অঙ্গনের তারকারা যে বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন, তাতে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার বেশিরভাগই নারী শিল্পীদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়ার ঘটনার।
এ ধরনের তৎপরতা নিয়ে শিল্পীদের পক্ষ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে প্রতিবাদ হলেও শিল্পীদের সংগঠন থেকে তেমন জোরালো প্রতিবাদ আসছে না। বাধার মুখে পড়েছেন এমন শিল্পীদের মাঝে পরীমনি ছাড়া বাকিরা অনেকটা নীরবেই মেনে নিয়েছেন এসব ঘটনা।
তার আগে ২০২৪ সালের ২ নভেম্বর চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজারে একটি লাইফ-স্টাইল পণ্যের শোরুম উদ্বোধন করার কথা ছিল অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীর। তিনি যাওয়ার আগেই ‘রিয়াজউদ্দিন বাজারের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও তাওহীদি জনতা’ ব্যানারে প্রতিরোধ করা হয়। সার্বিক নিরাপত্তার কথা ভেবে তিনি আর উদ্বোধনী আয়োজনে অংশ নেননি।
এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে একটি পোস্টে মেহজাবিন লেখেন, যেখানে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কিছু সমস্যা হওয়ার কথা শুনে আয়োজক ও তিনি শোরুমে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পরে গাড়ি ঘুরিয়ে বিমানবন্দরের দিকে ফিরে যান এবং ঢাকায় ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নেন।
তবে যোগাযোগ করা হলেলে মেহজাবীন চৌধুরী আর কথা বলতে চাননি।
গত ২৮ জানুয়ারি জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় নারী ফুটবল খেলা বন্ধ করতে মাঠে দেওয়া টিনের বেড়া ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে একদল লোকের বিরুদ্ধে। পরে সেই ম্যাচটি বাতিলও করা হয়।
সেদিনই দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলায় ‘তৌহিদী জনতা’র সঙ্গে আয়োজক কমিটির সদস্যদের সংঘর্ষে ১০ জন আহত হওয়ার পর নারী ফুটবল টুর্নামেন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে ম্যাচটি ফের আয়োজন করার নির্দেশ দেয় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়।
পুরনো খবর
'আসেন ঘুমাই সবাই', অনুষ্ঠান স্থগিতের প্রতিক্রিয়ায় পরীমনি
হেফাজতের 'হুমকি': টাঙ্গাইলে পরীমনির বিক্রয়কেন্দ্র উদ্বোধনের
'তৌহিদী জনতা'র বাধায় নারী ফুটবল খেলা বন্ধ, সংঘর্ষে আহত ১০
কোথাও হচ্ছে কনসার্ট, কোথাও মিলছে না অনুমতি
গত ডিসেম্বরে পাকিস্তানি গায়ক রাহাত ফহেত আলী এবং আতিফ আসলামের তিনটি কনসার্ট ঢাকায় হলেও অনুমতি মেলেনি লোকসংগীত আসরের।
রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে ২১ ডিসেম্বর রাহাত ফতেহ আলীর কনসার্ট আয়োজন করে ‘স্পিরিটস অব জুলাই’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।
২৩ ডিসেম্বর মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) মিউজিক ফেস্টের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘ইকোস অব রেভল্যুশন’ কনসার্টে গান করেন রাহাত ফতেহ আলী খান।
তার আগে ২৯ নভেম্বর আর্মি স্টেডিয়ামে ‘ম্যাজিক্যাল নাইট ২.০’ শিরোনামের একটি কনসার্টে গান করেন পাকিস্তানি আরেক গায়ক আতিফ আসলাম। ওই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ট্রিপল টাইম কমিউনিকেশন।
এদিকে পাঁচ বছরের বিরতি ভেঙে ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোক ফেস্ট’র মঞ্চে ফেরার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, তা ফের অনিশ্চয়তায় ডুবে যায়। জানুয়ারির ২৩, ২৪ ও ২৫ তারিখে আর্মি স্টেডিয়ামে ফোক ফেস্টের আসর বসবে বলে জানিয়েছিল আয়োজক প্রতিষ্ঠান সান কমিউনিকেশনস।
এই আয়োজনটির জন্য ভেন্যু বরাদ্দ দিয়েও তা বাতিল করে আর্মি স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ। ফলে লোকসংগীতের এই আসর কবে হতে পারে সে বিষয়ে কোনো দিনক্ষণ নির্ধারণ করতে পারছেন না আয়োজকরা।
আর্মি স্টেডিয়ামে রাহাত ফতেহ আলী ও আতিফ আসলামের কনসার্ট আয়োজন নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বক্তৃতায় বলেছেন, “বিগত সরকারের আমলে শিল্পী আসত ভারত থেকে আর এখন আসে পাকিস্তান থেকে; এসব চলতে পারে না।”
এই ধারা বদলানোর কথা তুলে ধরে বিএনপি নেতা বলেন, “দেশের শিল্পীদের অবজ্ঞা করার এই ধারা আমরা বদলাতে চাই। দেশের পল্লীগীতি, বাউল সংগীতকে আমরা তুলে ধরব। বড় আয়োজনে দেশের শিল্পীরাই অংশ নেবেন।”
২০২৩ সালের ১৬ ডিসেম্বরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঠের খোলা চত্বরে ছায়ানট ‘বিজয় উৎসব’ আয়োজন করেছিল। গতবার তারা অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছে নিজেদের মিলনায়তনের ভেতরে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছায়ানটের নির্বাহী সভাপতি সারওয়ার আলী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বিজয় উৎসবের জন্য আমরা রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চটি বরাদ্দ পেতে আবেদন করেছিলাম। যথাসময়ে বরাদ্দ পাওয়া যায়নি।”
তবে একই দিন বিজয় দিবস উদযাপনে বিএনপি আয়োজন করে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ শিরোনামে কনসার্ট। রাজধারীর মানিক এভিনিউয়ে সংসদ ভবনের সামনে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় এই কনসার্টটি হয়।
আবার ‘মব সৃষ্টির’ আশঙ্কায় স্থগিত হয়েছে খোদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কনসার্টও। শনিবার আগারগাঁওয়ে পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে ‘রিবিল্ডিং দ্য নেশন’ নামে এই কনসার্ট আয়োজনের ঘোষণার পর তা স্থগিত করেন আয়োজকরা।
জুলাই-অগাস্টজুড়ে দেশব্যাপী চলা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের চেতনাকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যেই এ কনসার্টের আয়োজন করার কথা ছিল। কনসার্টে থাকার কথা ছিল ব্যান্ডদল ‘নগর বাউল জেমসে’র। এছাড়া কনসার্টে চিরকুট, আর্টসেল, সোনার বাংলা সার্কাস, বেঙ্গল সিম্ফনি, বাংলা ফাইভ, ক্রিপটিক ফেইট, কুঁড়েঘর, কাকতাল, সংগীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ানসহ অনেকের গান পরিবেশন করার কথা ছিল।
আয়োজকদের একজন বলেছেন, “বর্তমান রাজনৈতিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার কথা চিন্তা করেই আমরা কনসার্ট স্থগিত করেছি। এটা যেহেতু ওপেন কনসার্ট, মবের সম্ভাবনা রয়েছে। সেটা মাথায় রেখেই আমরা স্থগিত করেছি।”
‘মব’ তৈরি হতে পারে এটি কীভাবে বুঝলেন– এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমাদের মনে হয়েছে, এই রকম কিছু হতে পারে, পারিপার্শ্বিক অবস্থা দেখেই ভাবা।”
পুরনো খবর
বাংলাদেশ সবসময় আমার 'সেকেন্ড হোম', মঞ্চে উঠে আতিফ
আর্মি স্টেডিয়ামে বরাদ্দ বাতিল, 'অনিশ্চয়তায়' ফোক ফেস্ট'
গানের তালে তালে মাতোয়ারা বিজয় দিবসের কনসার্ট
কেন স্থগিত হল 'রিবিল্ডিং দ্য নেশন' কনসার্ট
ঢাকা ও চট্টগ্রামে বসন্ত উৎসবে বাধা
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও মহানগর পুলিশ থেকে যথাযথ নিয়মে অনুমতি নেওয়ার পরও এবার উত্তরায় বসন্ত উৎসব করতে পারেনি ‘জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষৎ’।
প্রতিবছরের মতই এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুলতলা এবং পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের পাশাপাশি উত্তরায় উন্মুক্ত মঞ্চে এই আয়োজনটি করার কথা ছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটির বাধার মুখে উৎসবটি বন্ধ হওয়ার অভিযোগ আসে।
তবে নাগরিক কমিটির উত্তরা জোনের পক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সদস্য সৈয়দ হাসান ইমতিয়াজ একটি লিখিত বক্তব্য পাঠান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে।
এতে বলা হয়, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই যে জাতীয় নাগরিক কমিটি কোনো ধরনের অনুষ্ঠান বাতিলের ক্ষমতা রাখে না এবং এ ধরনের ক্ষমতা ব্যবহারের যে সংস্কৃতি রয়েছে তা পুরোপুরি ভাঙতে আমরা বদ্ধপরিকর।”
১৫ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের সিআরবিতে ‘প্রমা আবৃত্তি সংগঠন’ এর বসন্তবরণ উৎসবের মাঝপথে অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিল করে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। এতে দিনের বাকি আয়োজন সম্পন্ন করতে পারেননি আয়োজকরা।
গত ১৫ বছর ধরে সিআরবির শিরীষতলায় বসন্ত বরণ অনুষ্ঠান করে আসছে প্রমা আবৃত্তি সংগঠন।
প্রমা আবৃত্তি সংগঠনের সভাপতি রাশেদ হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “বেলা ১টার পর রেলওয়ের পক্ষ থেকে টেলিফোনে বিকালের অনুষ্ঠানের অনুমতি বাতিলের বিষয়টি জানানো হয়।”
২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে চট্টগ্রামের বোস ব্রাদার্স সংলগ্ন টিঅ্যান্ডটি অফিসের সামনের গেইটে ‘চট্টগ্রাম আবৃত্তি সম্মিলনের’ অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে যায় ‘জাসাস নেতাদের’ বাধায়। সেইসঙ্গে এক আবৃত্তিকারকে হেনস্তা করারও অভিযোগ ওঠে।
এ বিষয়ে জাসাস নেতারা বলেন, ‘স্থানীয় জনগণই জনস্বার্থে’ ওই অনুষ্ঠান বন্ধ করেছে। তারা ‘সঙ্গে ছিলেন মাত্র’।
পুরনো খবর
বাধার মুখে বাতিল উত্তরার বসন্ত উৎসব
উত্তরায় বসন্ত উৎসব বাতিল: অবস্থান জানাল নাগরিক কমিটি
চট্টগ্রামে অনুষ্ঠান চলাকালে অনুমতি বাতিল, বসন্ত উৎসব হল আংশিক
চট্টগ্রামে বাধায় পণ্ড আবৃত্তি অনুষ্ঠান, হেনস্তারও অভিযোগ
মহানগর নাট্যোৎসব স্থগিত
সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার পরও ‘একদল ব্যক্তির হুমকির মুখে’ গত ১৫ ফেব্রুয়ারি স্থগিত হয় ‘ঢাকা মহানগর নাট্য উৎসব’।
ঢাকার নাটক সরণির মহিলা সমিতি মিলনায়তনে এই উৎসব উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিল।
প্রথম সন্ধ্যায় মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’ মঞ্চস্থ হওয়ার কথা ছিল। উৎসবের তিনটি পর্যায়ে একটি করে নাটক মঞ্চস্থ করার কথা ছিল ৮৫টি নাট্যদলের।
নিরাপত্তা শঙ্কার কারণে উৎসব স্থগিতে বাধ্য হওয়ার কথা জানান ঢাকা মহানগর নাট্য পর্ষদের আহ্বায়ক ঠান্ডু রায়হান।
উৎসব উদযাপন পরিষদের সদস্য সচিব কামাল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছেন, “শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ মহিলা সমিতির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমাদের জানান যে, রমনা থানা থেকে ফোনে নাট্যোৎসব বন্ধ করতে বলা হয়েছে।”
তবে সে দিন রাতে সংবাদমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব ‘বন্ধ বা স্থগিত’করার কোনো নির্দেশনা পুলিশ দেয়নি বলে দাবি করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, নাট্যকর্মীদের ‘বিক্ষুব্ধ একটি অংশের’ দাবির পরিপ্রেক্ষিতিই মহিলা সমিতি থেকে উৎসবের ভেন্যু বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।
তাদের পরিচয় না লিখে ‘মব’বলে চালিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য কী– উৎসব আয়োজকদের দিকে এমন প্রশ্নও ছুঁড়েছেন উপদেষ্টা।
প্রাচ্যনাটসহ কয়েকটি নাট্যদলের উৎসব আয়োজন এবং শিল্পকলা একাডেমি থেকে নানা উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে বলেও তুলে ধরেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।
অন্যদিকে উৎসব আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা উপদেষ্টার কাছেই বিরোধিতাকারীদের নাম জানতে চেয়েছেন। তাদের প্রশ্ন, নাট্যকর্মীদের মধ্যে কারা উৎসব বন্ধ করতে চাইল?
বইমেলায় চড়াও ‘তৌহিদী জনতা’
তসলিমা নাসরিনের বই রাখায় ১০ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় বাংলা একাডেমির অমর একুশে বইমেলায় ‘তৌহিদী জনতা’ পরিচয়ে একদল লোক ‘সব্যসাচী প্রকাশনা’ এর স্টলে গিয়ে প্রকাশককে ঘিরে ধরে স্লোগান দিতে শুরু করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ সব্যসাচীর প্রকাশক শতাব্দী ভবকে বইমেলায় তাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে নিয়ে যায়।
ঘটনার পর থেকে বন্ধ আছে সব্যসাচীর ১২৮ নম্বর স্টলটি। তবে বাংলা একাডেমি বলছে, তারা স্টল বন্ধ করেনি।
সব্যসাচীর স্টলের ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। তার দপ্তর বলেছে, “এ ধরনের বিশৃঙ্খল আচরণ বাংলাদেশে নাগরিকের অধিকার এবং দেশের আইন উভয়ের প্রতিই অবজ্ঞা প্রদর্শন করে।”
পুরনো খবর
হুমকির মুখে স্থগিত ঢাকা মহানগর নাট্যোৎসব
নাট্যোৎসব বন্ধের নির্দেশনা পুলিশ দেয়নি: ডিএমপি
নাট্যকর্মীদের কারা উৎসব বন্ধ চাইল: উপদেষ্টাকে আয়োজকদের প্রশ্ন
বইমেলায় তসলিমা নাসরিনের বই নিয়ে উত্তেজনা, স্টলে চড়াও 'তৌহিদী জনতা
বইমেলার স্টলে ‘বিশৃঙ্খলা’: দোষীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
কবি গালিককে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ৮টার দিকে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার সানারপাড় থেকে কবি সোহেল হাসান গালিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করে তাকে ১৭ ফেব্রুয়ারি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।
গালিবের মুক্তির দাবিতে লেখক, শিল্পীদের একটি অংশ বিবৃতি দেওয়ার পাশাপাশি বইমেলায় এসে প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানবন্ধব করেছে।
২০২৪ সালে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান উজান থেকে প্রকাশিত বইয়ে গালিবের লেখা একটি কবিতা ঘিরে আলোচনা শুরু হয়; সেখানেও ‘তৌহিদী জনতার’ কথা ছিল। এই ঘটনায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে বইমেলায় বন্ধ রয়েছে উজানের স্টল।
কবি গালিবের গ্রেপ্তার বিষয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “তিনি কবি, এটা নিয়ে আপনি যতটা ব্যথিত, আমরাও ব্যথিত। এটা নিয়ে বলবার ঠিক লোকটা বোধহয় আমি না। এটা নিয়ে কথা বলার ঠিক মানুষটা হচ্ছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অথবা আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে যারা জড়িত রয়েছে।
“সংস্কৃতিক কর্মী হিসেবে আমি আমার কাজটা করছি কি না, আমি আমার সব কাজ তো ফেইসবুকে ঘোষণা দিয়ে করব না। অনেক কাজ আমি আড়ালে করব। যেটা হয়ত আমরা বলবার প্রয়োজন মনে করি না, আমাদের কাজ হচ্ছে কাজটা করা।
“সব কাজ ঘোষণা দিয়ে ক্রেডিট নিতে হবে, তা না। পেছেন থেকে অনেক কাজ যেমন করছি, এই কাজটাও করছি।”
সরকারের ভূমিকা কী
এসব ঘটনায় সাম্প্রতিক সময়ে দেশের শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতিচর্চার পথ রুদ্ধ হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষক ও সংস্কৃতি সংশ্লিষ্টরা।
আনু মুহাম্মদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোনো অনুষ্ঠানে গিয়ে ‘কিছু লোক’ বাধা দিল, তারপর অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এটা দৃষ্টান্ত হিসেবে খুবই খারাপ।
“সংস্কৃতি চর্চার সাংগঠনিক তৎপরতার সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের মাঝে আতঙ্ক তৈরি হচ্ছে, অনিশ্চয়তা তৈরি হচ্ছে। এটা পুরো দেশের জন্যই ক্ষতিকর। সরকারের যে গ্রহণযোগ্যতা, তাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সরকারের প্রতি সাধারণ মানুষের যে আস্থা, তা নষ্ট করে।”
দায়িত্বশীলদের ‘দায়িত্বহীন মন্তব্য’ এসব ঘটনাকে আরো উসকে দিচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, “এসব ঘটনার পর যখন দায়িত্বশীল জায়গায় বসে কোনো কোনো উপদেষ্টা এই বিষয়গুলোকে অস্বীকার করেন। তখন পুরো সরকারই প্রশ্নের মুখে পড়েন।”
‘দলবদ্ধ, সংঘবদ্ধ আক্রমণের কারণে’ সৃজনশীল চর্চার পথ ‘রুদ্ধ হচ্ছে’ অভিযোগ করে আনু মুহাম্মদ বলেন, “আরও সমস্যা তৈরি হচ্ছে যখন সরকার এসব ‘মব’ বন্ধ করার ব্যাপারে সক্রিয় কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। বরং কোনো কোনো উপদেষ্টা এমনভাবে কথা বলছেন, তাতে ‘মব’ আরও উৎসাহিত হচ্ছে।”
সংস্কৃতি চর্চা প্রবহমান বিষয়, কোনো সমঝোতার মধ্য দিয়ে তা চলতে পারে না মন্তব্য করেন জোবাইদা নাসরীন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশে যে বৈচিত্র্যপূর্ণ সংস্কৃতি রয়েছে, তার চর্চা করার জন্য এখন প্রশাসনিক সমঝোতার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে, এটাই তো দুর্ভাগ্যজনক।
“সংস্কৃতি একটি স্বতঃস্ফূর্ত বিষয়, সংস্কৃতি একটি গতিশীল বিষয় এবং সংস্কৃতি একটি চলমান বিষয়। এটি কিন্তু কোনো ধরনের বন্দোবস্ত করে, সমঝোতা করে চর্চা করার বিষয় নয়। এই সমঝোতা করার যখন প্রয়োজন হয়, তখন বুঝতে হবে যে সংস্কৃতিচর্চা হুমকির মুখে আছে।”
সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে ব্যাপারগুলোকে ‘প্রপাগান্ডা’ হিসেবে দেখা নিয়েও সমালোচনা করেন জোবাইদা।
তিনি বলেন, “আমরা গণমাধ্যমের খবরে দেখেছি, সারা দেশে অনেকগুলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ হয়েছে। লালন স্মরণোৎসব বন্ধ হচ্ছে। এখন এগুলো কারা বন্ধ করছে? কী উদ্দেশ্যে বন্ধ করছে?
“এই উদ্দেশ্যগুলোকে অ্যাড্রেস না করে যদি সরকারের দায়িত্বশীল জায়গা থেকে ‘প্রপাগান্ডা’ বলা হয় কিংবা আয়োজকদের নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। তাহলে বুঝতে হবে, যারা হুমকি দিচ্ছে, এগুলো বন্ধ করছে- তাদের পক্ষেই কিন্তু সরকারের অবস্থান।”
১৮ ফেব্রুয়ারি ডিসি সম্মেলনে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বিভিন্ন জায়গায় সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ হওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টার মন্তব্য জানতে চাওয়া হলে ফারুকী বলেন, “এই না যে আমি অস্বীকার করছি সারাদেশে কোথাও কিছু ঘটেনি, নিশ্চয়ই ঘটেছে। যেমন আমরা লালন মেলার কথা জানি, কিন্তু আবার এটাও দেখেছেন যে লালন মেলা স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে মিটিংয়ের মাধ্যমে আবার ২৩ ফেব্রুয়ারি হচ্ছে।”
পহেলা বৈশাখে রমনা বটমূলে ১০০ গরু জবাই করার যে প্রচার ফেইসবুকে চালানো হচ্ছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে উপদেষ্টা বলেন, “সোশাল মিডিয়ায় অনেকে অনেক কথা বলবে, প্রত্যেকটা কথার উত্তর আমরা দিতে পারি না রাষ্ট্রের একটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গা থেকে।
“পহেলা বৈশাখ বাঙালি জাতির একটা বড় উৎসব। এই উৎসব প্রত্যেকবার যেভাবে পালিত হয় এবারও সেভাবেই পালিত হবে।”
পুরনো খবর