একক গানের পরিবেশনা শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় মঞ্চে আসতে শুরু করে ব্যান্ড দলগুলো।
Published : 17 Dec 2024, 01:28 AM
নগরবাউল জেমসের 'পাগলা হাওয়া' গান দিয়ে শেষ হয়েছে দীর্ঘ নয় ঘণ্টার বিজয় দিবসের উন্মুক্ত কনসার্ট ‘সবার আগে বাংলাদেশ’।
সোমবার বেলা দেড়টার দিকে ঢাকার মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে শুরু হয়েছিল এ কনসার্ট; যাতে শুরু থেকেই ছিল শ্রোতা-দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়।
একের পর এক শিল্পীদের গান ও সুরের মুর্ছনায় দুপুর থেকেই জমজমাট হয়ে উঠেছিল উন্মুক্ত এ কনসার্ট।
শিল্পী খুরশীদ আলমের কণ্ঠে ‘পাখির নাম দোয়েল', 'ফুলের নাম শাপলা', 'দেশের নাম বাংলাদেশ সুফলা সুফলা’ গান দিয়ে শুরু হয় কনসার্ট। পরে গান করেন নাসির খান ও প্রীতম হাসান।
সংগীতশিল্পী ইথুন বাবু ও মৌসুমী বেলা আড়াইটায় মঞ্চে উঠেন। তারা গেয়েছেন 'আমি মেজর জিয়া বলছি' গানটি।
এরপরেই গান মঞ্চে ওঠেন আলম আরা মিনু। ‘যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছে লক্ষ মুক্তি সেনা’, ‘সোনা দানা দামি গহনা’ গান গেয়ে মঞ্চ ত্যাগ করেন তিনি।
‘চিঠি’ ও ‘প্রেমের তাজমহল’ গান গেয়ে শোনান মনির খান।
এরপর শুরু হয় কনকচাঁপার পরিবেশনা। তিনি গেয়েছেন ‘তোমায় দেখলে মনে হয়’ ও ‘সাগরিকা’ গান।
পরে বাউল গান দিয়ে মঞ্চ মাতান ইলিজা পুতুল, গোলাপি, আলিয়া বেগম ও চিশতি বাউল।
কনসার্টে একের পর এক গান পরিবেশনা করছেন একগুচ্ছ সংগীতশিল্পী।
বিকালের পর্বে সাড়ে ৪ টায় মঞ্চে উঠেন ইমরান মাহমুদুল। তিনটি গান 'বলতে বলতে চলতে চলতে', 'আমি এমন একটা তুমি চাই', 'দিল দিল' গেয়ে মঞ্চ ছাড়েন তিনি। এরপর উঠেন দিলশাদ নাহার কনা।
মাগরিবের নামাজের বিরতির পর শুরু হয় আসিফ আকবরের গানের পরিবেশনা। 'বেশ বেশ সাবাস বাংলাদেশ' গান দিয়ে শুরু করে 'ও প্রিয়া তুমি কোথায়' গান দিয়ে শেষ হয় তার পরিবেশনা।
এরপর মঞ্চে উঠেন সংগীতশিল্পী বেবি নাজনীন। ১৫ বছর পর উন্মুক্ত কনসার্টে পারফর্ম করছেন এ শিল্পী।
বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা ও কনসার্টের আয়োজকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে এই শিল্পী গেয়েছেন 'সবার আগে বাংলাদেশ' নামের গান। এরপর ' সূর্যোদয়ে তুমি সূর্যাস্তেও তুমি', 'এক নজর না দেখিলে বন্ধু' গান গেয়ে মঞ্চ মাতিয়ে তুলেন তিনি।
কনসার্ট ঘিরে মানিক অ্যাভিনিউ চত্বরে দুপুর হওয়ার আগেই জড়ো হতে থাকেন হাজারো মানুষ।
ভিড় বেশি হওয়ায় কনসার্টের মাঝে বেশ কয়েকবার বিশৃঙ্খলারও সৃষ্টি হয়। মিডিয়া মঞ্চ ভেঙে পড়া, গাছে থেকে পড়ে যাওয়া, ব্যারিকেড ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টাসহ বেশ কিছু পৃথক ঘটনা ঘটে।
সংসদ ভবনের সামনে বিএনপির 'সবার আগে বাংলাদেশ' কনসার্ট
সেখানে উপস্থিত সাংবাদিক গোলাম রাব্বানি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,"দুপুরের দিকে হঠাৎ করেই হুড়োহুড়ি শুরু হয়ে মিডিয়া মঞ্চে উঠে পড়ে বিপুল সংখ্যক মানুষ। এতে করে মঞ্চ ভেঙ্গে পড়ে বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়। আয়োজকরা চেষ্টা করছিলেন নিয়ন্ত্রণ করার কিন্তু ভিড় বেশি হওয়ায় বারবার ব্যারিকেড ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করছিলেন মানুষ।"
শ্রোতা-দর্শকের এমন আগ্রহ আর ভিড়ের মধ্যেই জমজমাট হয়ে ওঠে কনসার্ট। গানের সুরে বিজয়ের আনন্দে মেতে ওঠেন তারা।
বেবি নাজনীনের পরিবেশনা শেষে মঞ্চে উঠে ‘সবার আগে বাংলাদেশ’ কনসার্টের আয়োজক সংগঠন।
কনসার্টের আহ্বায়ক বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, "ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নানা অত্যাচার, অনাচারের কারণে এভাবে বিজয় দিবস উদযাপন করা সম্ভব হয়নি। এর আগে নানা ধরনের কনসার্ট হয়েছে, অন্য দেশের শিল্পীদের নিয়ে গান হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের শিল্পীদের নিয়ে বিপুল মানুষকে একত্রিত করে এই কনসার্ট আগে হয়নি। আমরা আবারও স্বাধীনতা দিবসে এমন আয়োজন করতে চাই।"
একক গানের পরিবেশনা শেষে এদিন সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় শুরু হয় ব্যান্ড সংগীতের পরিবেশনা।
প্রথমেই মঞ্চে আসে 'ডিফারেন্ট টাচ'। 'এই বাংলা আমার' গান দিয়ে শুরু করেন তারা। 'শ্রাবণের মেঘগুলো জড়ো হলো আকাশে' গান দিয়ে শেষ করেন তারা।
'ডিফারেন্ট টাচ'র পর 'কমলা নৃত্য করে' গান দিয়ে মঞ্চ মাতিয়ে তোলেন জেফার। একে একে গেয়েছেন ব্যান্ড সোনার বাংলা সার্কাস, শিরোনামহীন, আর্ক, অ্যাভয়েড রাফা।
এরপর মঞ্চে উঠেছেন সোলস ব্যান্ড। পার্থ বড়ুয়া গেয়েছেন 'বৃষ্টি দেখে অনেক কেঁদেছি' ও 'কেন এই নিঃসঙ্গতা'।
রাত সাড়ে ৯ টার পর মঞ্চে উঠে প্রায় ৪৫ মিনিটের মত টানা গান গেয়েছেন জেমস।
'কবিতা' গান দিয়ে শুরু করে একে একে গেয়েছেন 'দিওয়ানা মাস্তানা', 'গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া', 'মা', 'দুষ্ট ছেলের দল', 'মীরাবাঈ', 'আসবার কালে আসলাম একা', 'তারায় তারায় রটিয়ে দিব'। 'পাগলা হাওয়া' গান দিয়েন শেষ হয়েছে নয় ঘণ্টার কনসার্ট।