থানচিতে গোলাগুলির প্রসঙ্গে ডিআইজি বলেন, “তারা কুকি-চিনের সশস্ত্র সংগঠনের ব্যক্তি। তারা পুলিশের দিকে গুলি করেছিল, কিন্তু আমরা প্রতিরোধ করেছি।”
Published : 05 Apr 2024, 07:26 PM
একদিনের ব্যবধানে রুমা ও থানচিতে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি ও অর্থ লুটের ঘটনায় ছয়টি মামলা করেছে পুলিশ।
শুক্রবার রাতে বান্দরবান জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রুমা থানায় দায়ের করা চারটি এবং থানচি থানায় দুটি মামলায় ‘কেএনএফ সন্ত্রাসীদের’ দায়ী করা হয়েছে।
২০০৯ সালের সন্ত্রাস বিরোধী আইন, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন এবং দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে।
এর আগে দুপুরে থানচি থানা পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স) সঞ্জয় সরকার ছয়টি মামলা দায়ের হওয়ার কথা বলেন।
মঙ্গলবার রাতে এবং বুধবার দুপুরে বান্দরবানের রুমা এবং থানচি উপজেলার কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা চালায় সশস্ত্র লোকজন।
তারা টাকা লুট করে, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধর করে, একজন ব্যাংক ব্যবস্থাপককে অপহরণ করে নিয়ে যায়। টাকার পাশাপাশি লুট করে বেশ কিছু অস্ত্র ও গুলি।
রুমায় সোনালী ব্যাংকে হামলা-ডাকাতি এবং ব্যবস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে অপহরণের ঘটনাটি মঙ্গলবার রাতে প্রথম ভাগে ঘটলেও; থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে হামলা হয়েছে বুধবার ভরদুপুরে।
দুটি ঘটনাতেই পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ এর নাম এসেছে; যারা পাহাড়ে ‘বম পার্টি’ নামে পরিচিত।
এ নিয়ে দুই উপজেলার মানুষের ভয় আর আতঙ্কের মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে ব্যাপস্থাপক নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করে র্যাব। তার কিছু পরেই থানচিতে ব্যাপক গোলাগুলি ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (অ্যাডমিন অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স) সঞ্জয় সরকার বলেন, “সেদিন সোয়া ৮টার দিকে টহলরত সদস্যরা দেখতে পায় যে তিনটি গাড়িতে করে বেশ কিছু অস্ত্রধারী লোকজন তাদের দিকে লক্ষ্য করে ফায়ার করছে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও ওপেন ফায়ার করে; তখন দুপক্ষের মধ্যে গোলাগুলি হয়।
“পরবর্তীতে আমরা জেনেছি যে, তারা একটা সংগঠন। নিশ্চিত হয়েছি যে, তারা কুকি-চিনের সশস্ত্র সংগঠনের ব্যক্তি। তারা পুলিশের দিকে গুলি করেছিল, কিন্তু আমরা প্রতিরোধ করেছি।"
পাশেই পুলিশের থানা এবং দুপাশে দুটি বিজিবি ক্যাম্প ছিল, তারপরও এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “এ ঘটনায় মামলা হবে; তদন্ত করলে আরও লোকজনদের জিজ্ঞেস করলে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে।
“কীভাবে কী হয়েছিল। তারা কোথা থেকে আসছিল। তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল। প্রাথমিকভাবে এখনও নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, তাদের আলটিমেটলি কী টার্গেট ছিল।”
স্থানীয় অনেকে ঘরে তালা দিয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যাচ্ছেন বিষয়টি নজরে এসেছে কী-না? এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে সঞ্জয় সরকার বলেন, “এ বিষয়ে সবাইকে দ্ব্যর্থহীভাবে বলতে চাই রুমা, থানচি এবং আরও অন্যান্য উপজেলায় বলেন…এখনও এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়নি যে লোকজন ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে এলাকা ছেড়ে অন্যদিকে চলে যাবে।
“এলাকা ছাড়ার ঘটনা আমাদের নজরে আসেনি।”
আরও পড়ুন-
ভালো আছি, কৃতজ্ঞতা: ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম
ঘণ্টাখানেক গোলাগুলির পর থমথমে থানচি
‘সক্ষমতা জানান দিতেই’ কেএনএফের হামলা: র্যাব
দুই দিনে ৩ ব্যাংকে ডাকাতি: পাহাড়ে ফের ‘বম পার্টি’ আতঙ্ক
রুমায় ব্যাংক ডাকাতি: ‘লড়বি না, লড়লেই গুলি করে দেব’
থানচিতে রাস্তাঘাট ফাঁকা, বন্ধ দোকানপাট
এবার ভরদুপুরে থানচির দুই ব্যাংকে ডাকাতি
ব্যাংক ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা: আইজিপি
ব্যাংক ম্যানেজার নেজামকে তারাবির নামাজ থেকে তুলে নিয়ে যায় সশস্ত্ররা
রুমায় ব্যাংক লুট: সন্ধান মেলেনি ‘অপহৃত’ ব্যবস্থাপকের
রুমায় ব্যাংক ডাকাতি, সন্দেহে ‘বম পার্টি’