“সংসদীয় পদ্ধতির সরকার যেখানে আছে, সেখানে আসন ভাগাভাগি হয়," বলেন তিনি।
Published : 10 Dec 2023, 05:47 PM
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন ভাগাভাগির আলোচনা এখনও হয়নি জানালেও এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
সংসদে প্রধান বিরোধী দলটির এই নেতা মনে করেন, গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এই সমঝোতা একেবারেই স্বাভাবিক বিষয়।
রোববার দলীয় চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচন থেকেই আওয়মী লীগ ও জাতীয় পার্টি সমঝোতা করে নির্বাচন করে আসছে। এর মধ্যে নবম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে দুই দল ছিল মহাজোটের অংশ। বিএনপির বর্জনে দশম সংসদ নির্বাচনে জোট না হলেও আসন সমঝোতা ছিল।
এবারও বিএনপির ভোট বর্জনের মধ্যে জাতীয় পার্টি নিয়ে আওয়ামী লীগের ‘অঙ্কটি’ কী হয় সেই বিষয়টির ফয়সালা হয়নি এখনও।
চুন্নু এর আগে বলেছেন, তারা ‘সাবালক হয়েছেন’। আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কোনো ছাড় আর চান না।
তবে গত ৬ ডিসেম্বর রাতে দুই দলের শীর্ষ নেতারা রাজধানীতে বৈঠকও করেন। সেই আলোচনায় আসন সমঝোতার কোনো কথা হয়নি বলে পরে দাবি করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
সেই রাতের সেই আলোচনায় আসন ভাগাভাগি কোনো কথা হয়নি, এমন কথা বলেছেন চুন্নুও। তাহলে কী জন্য বসেছিলেন- সেই প্রশ্নে তিনি বলেন, “একটা ভালো নির্বাচন করার জন্য ভোটাররা যেন আসতে পারে, সেই পরিবেশ যেন তৈরি হয়, ভোটাররা যেন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেজন্য মাঠে থাকা বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আমরা আলোচনা করি।”
আলোচনা গত রাতেও হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এটা হবে। কারণ, আমরা একটা অর্থবহ, ভালো নির্বাচন চাই। সেটা করত গেলে সময়ে সময়ে ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। তারাও করে, আমরাও করি।
“ভোটাররা কীভাবে কেন্দ্রে আসবে এবং ভোটাধিকার প্রয়োগ করবে, আমাদের আগ্রহের জায়গা এটা। যত বেশি ভোটার কেন্দ্রে আসবে, আমাদের তত লাভ।”
তবে আসন নিয়ে সমঝোতা হবেই না, এমন সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না চুন্নু। ‘রাজনীতিতে শেষ বলে কিছু নেই’- এই কথাটি স্মরণ করে তিনি বলেন, “সংসদীয় পদ্ধতির সরকার যেখানে আছে, সেখানে আসন ভাগাভাগি হয়, অনেক দেশেই হয়। আবার হবে, এটাও ঠিক না, হবে না, এটাও ঠিক না। হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।”
আরও পড়ুন:
কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে চুন্নু গত তিনটি নির্বাচনে জিতেছেন আওয়ামী লীগের সমর্থনে। সেই আসনে এবার ক্ষমতাসীন দলের নেতা নাসিরুল ইসলাম খানকে প্রার্থী করা হয়েছে করিমগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করিয়ে। বাছাইয়ে তার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে গিয়েছিল। তবে নির্বাচন কমিশনে আপিলে সেই প্রার্থিতা তিনি ফিরে পেয়েছেন।
চুন্নু অবশ্য এই প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে ভয় পাচ্ছেন না। তিনি বলেন, “আমি নৌকার প্রার্থীকে সরিয়ে দিয়ে নির্বাচন করব, সেই মানসিকতা আমার ছিল না এবং নেই।”
তার প্রার্থিতা বাতিলে নাসিরুলের আপিলের বিষয়ে জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, “আমার নামে বাংলাদেশের কোনো ব্যাংকে কোনো লোন নাই। তাই ঋণখেলাপির কোনো সুযোগ নাই। ২০১২ সালে আদালত একটা জাজমেন্টের মাধ্যমে আমার গ্যারান্টারকে অব্যাহতি দিয়েছে।”
মামলার তথ্য গোপন করেছেন বলে নাসিরুল যে অভিযোগ এনেছেন, সে প্রশ্নে চুন্নু বলেন, “কোনো সিভিল মামলার তথ্য মনোনয়নপত্রে উল্লেখ করার সুযোগ নাই। মনোনয়নপত্রে শুধু ফৌজদারি মামলা উল্লেখ করার বিধান আছে।
“আমার মনে হয় তিনি ভুয়া একটি দরখাস্ত করেছে। তারটা বাতিল হওয়ায় তিনি রাগ বা জেদের বশবর্তী হয়ে এটা করেছেন।”
জাতীয় পার্টিকে ‘ছাড়’: ধোঁয়াশায় রাখল আওয়ামী লীগ