শুষ্ক-রুক্ষ চুল ও খুশকির সমস্যা এড়াতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার সময় এখন।
Published : 27 Oct 2024, 07:47 PM
শীত মৌসুম এগিয়ে আসার সাথে সাথে চুলও হয়ে যায় রুক্ষ। কারণ দিন দিন বাতাসের আর্দ্রতা কমতে থাকে।
তাই আবহাওয়া পরিবর্তনের সাথে যেমন ত্বকের পরিচর্যার ধরন পাল্টাতে হয় তেমনি বদলাতে হয় কেশ পরিচর্যার রুটিন।
যদিও সবার চুলের ধরন এক নয়। তারপরও অভিজ্ঞরা বলছেন- কিছু বিষয় সকলের জন্য পালন করা উপকারী।
যেভাবে চুলের যত্নের ধারা পাল্টাতে হবে
ঋতু পরিবর্তনের সাথে কয়েকটি পর্যায়ে কেশ পরিচর্যার ধাপগুলো পরিবর্তন করা দরকার পড়ে।
এই বিষয়ে ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে নিউ ইয়র্ক সিটি’র ‘শাফের ক্লিনিক ফিফ্থ অ্যাভনিউ’য়ের ত্বক-বিশেষজ্ঞ ড্যান্ডি এঙ্গেলম্যান বলেন, “চুল ও মাথার ত্বক আর্দ্র করে এবং আর্দ্রতা ধরে রাখে এমন পণ্য ব্যবহার করার পরামর্শ দেই আমি।”
মানে হল, এরই মধ্যে না করে থাকলে চুলে যত্নে তেল ব্যবহার করা শুরু করতে হবে। পাশাপাশি ‘কন্ডিশনিং মাস্ক’ এবং ‘স্কাল্প সেরাম’ ব্যবহার উপকারী হবে।
লস অ্যাঞ্জেলেস ভিত্তিক কেশ-পরিচর্যাকর দিমিত্রিস গিয়ান্নেতোস একই প্রতিবেদনে বলেন, “এছাড়া নিয়মিত চুল ছাঁটতে হবে। আবহাওয়া যত ঠাণ্ডা হবে চুল ছাঁটা ততই জরুরি। এতে আগা ফাটার সমস্যা রোধ করা সম্ভব হয়। আর ময়েশ্চারাইজার যুক্ত পণ্য ব্যবহার করা উপকারী হবে।”
শুষ্ক আবহাওতে চুলের যে অবস্থা হয়
শীত আসতে আসতে বাতাস শুষ্ক হতে থাকে। ফলে চুল ও মাথার ত্বক থেকেও আর্দ্রতা হারায় দিনে দিনে- মন্তব্য করেন সান ফ্রান্সিসকো ভিত্তিক কেশ-পরিচর্যাকর ব্রেন্ডনেটা অ্যাশলে।
“ফলে চুল হতে থাকে ভঙ্গুর, মাথার ত্বক হয় শুষ্ক, দেখা দেয় চুলকানি”- ডা. এঙ্গেলম্যান।
এছাড়া আর্দ্রতা হারানোর ফলে চুলের উজ্জ্বলতা কমে, শক্তি হারায়, দেখতে লাগে মলিন আর শুষ্ক অনুভব হয়।
গিয়ান্নেতোস বলেন, “শীতের বাতাস চুলের অগ্রভাগেও প্রভাব ফেলে। যদি নিয়মিত আগা ছাঁটা না হয় তবে দেখা দেয় আগা ফাঁটার সমস্যা।”
এই সময়ে যেভাবে কেশ পরিচর্যা করা উচিত
নানান ধরনের আর্দ্রতা বর্ধক উপাদান, যেমন- তেল, স্টাইলিং ক্রিম, লিভ-ইন্স এবং ‘স্ক্যাল্প সেরামস’ ব্যবহা করে শুষ্ক মৌসুমে চুলে স্বাস্থ্য ভালো রাখা যায়- জানান এই বিশেষজ্ঞরা।
গিয়ান্নেতোস বলেন, “যদি অতিরিক্ত ভার চুলে দিতে না চান তবে ‘লিভ-ইন কন্ডিশনার’ ব্যবহারে নরম মসৃণ চুল পাওয়া সম্ভব হবে।”
ময়েশ্চার যুক্ত শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার
চুলে ও মাথার ত্বকে আর্দ্রতা বৃদ্ধি করে এমন শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়। উদ্ভিজ্জ উপাদান ও অ্যামিনো অ্যাসিড সমৃদ্ধ শ্যাম্পু কিউটিকলস’য়ের ক্ষতি পোষাতে পারে।
খুশকির সমস্যা দূরে রাখতে গিয়ান্নেতোস বলেন, “স্যালিসাইলিং অ্যাসিড সমৃদ্ধ ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করা উপকারী।”
স্ক্যাল্প সেরাম ব্যবহার
বাজারে নানান ধরনের ‘স্ক্যাল্প সেরাম পাওয়া যায়। তবে অ্যালো ভেরা সমৃদ্ধ সেরাম ব্যবহারে মাথার ত্বকের চুলকানি ও অস্বস্তি দূর হয়।
এছাড়া স্ক্যাল্প এক্সফলিয়েটর, অ্যাপল সাইডার ভিনেগার সমৃদ্ধ ‘প্রি শ্যাম্পু’ ব্যবহারে সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে মাথার চুলকানি দূর হয়।
অ্যাশলে বলেন, “গজানো ও স্বাস্থ্যকর চুলের জন্য মাথার ত্বক সুস্থ রাখা জরুরি।”
যাদের চুল সোজা ও ঢেউ খেলানো
ঘন ঢেউ খেলানো কেশ যাদের তাদের জন্য চুলের পাতলা তেল ব্যবহার করতে পরামর্শ দেন, অ্যাশলে।
এছাড়া ঘন নয়, ময়েশ্চারাইজার যুক্ত হালকা মাত্রার লিভ-ইন ব্যবহার করা উপকারী। কারণ ঘন প্রসধানী ব্যবহারে এই ধরনের চুলে অতিরিক্ত ভারী অনুভূত হয়।
কোঁকড়া চুলের জন্য
“ডিপ কন্ডিশনার এবং তেল ব্যবহার করা কোঁকড়া চুলের অধিকারীদের জন্য উপকারী। কারণ এদের চুল অতিরিক্ত শুষ্ক হয় বলে আলাদা ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন হয়”- বলেন গিয়ান্নেতোস।
সানফ্লাওয়ার অয়েল ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা চুলে তৈলাক্ত আঠালোভাব তৈরি করে না। কেশ পরিচর্যায় এই উদ্ভিজ্জ তেল তাই উপকারী। এছাড়া নিয়মিত মাস্ক ব্যবহারে কোঁকড়া চুলে আনবে আলাদা উজ্জ্বলতা।
সব ধরনের চুলের জন্য
ডা. এঙ্গেলম্যান বলেন, “বন্ডিং ট্রিটমেন্ট যে কোনো ধরনের চুলের জন্য উপকারী। এটা ক্ষতি পুষিয়ে ভঙ্গুরতা দূর করতে পারে। যেমন- বিভিন্ন ধরনের মাস্ক ব্যবহার করা বা তেল মাখা।”
পাশাপাশি সাটিন বা সিল্কের বালিশ কভার ব্যবহারের পরামর্শ দেন এই চিকিৎসক। এতে চুলের সাথে বালিশের ঘষার পরিমাণ কমবে। ফলে ঘুমের মাঝে চুল ভেঙে যাওয়া সমস্যা রোধ হবে।
আরও পড়ুন