অবাক হওয়ার মতো বিষয় নয়, পানি পান দেহের বাড়তি ওজন কমানোতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
গ্রীষ্মের তাপদাহে আর্দ্র থাকতে পর্যাপ্ত পানি পান জরুরি। পিপাসা মেটাতে আর পানিশূন্যতা রোধে পানি পানের জুড়ি নেই। তবে যারা ওজন কমানোর যাত্রায় আছেন তাদের পর্যাপ্ত পানি পানের বিষয়টাও গুরুত্ব দিতে হয়।
ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ‘দ্যা ফার্স্ট টাইম মম’স প্রেগনেন্সি কুকবুক’, ‘দ্যা সেভেন ইনগ্রিডিয়েন্স হেলদি প্রেগনেন্সি কুকবুক’ এবং ‘ফুয়েলিং মেইল ফার্টিলিটি’ বইয়ের মার্কিন লেখক নিবন্ধিত পুষ্টিবিদ লরেন মানাকার বলেন, “ভাজাপোড়া ও মিষ্টি খাবার বাদ দেওয়া, শারীরিক কসরতে মনোযোগী হওয়াসহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর বিষয়ে অভ্যস্ত হওয়ার পাশাপাশি পর্যাপ্ত পানি পান ওজন কমানোর প্রক্রিয়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।”
কোমল এবং অন্যান্য মিষ্টিজাতীয় পানীয়র মতো শুধু পানিতে আলাদা কোনো ক্যালরি, কার্ব, চিনি, লবণ ও চর্বি কিছুই নেই। তাই পিপাসা মেটাতে গিয়ে অন্যান্য পানীয় পানের পরিবর্তে শুধু পানি গ্রহণ করলে অতিরিক্ত ক্যালরি দেহে যোগ হয় না। উল্টো বিকাপীক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়।
এই বিষয়ে ‘পাবমেড’ সাময়িকীতে প্রকাশিত, মুম্বাইয়ের ‘পাতিল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল’য়ের গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, পানি পানের ফলে বিপাক প্রক্রিয়ার মাত্রা উন্নত হয়। ফলে বিশ্রামে থাকার পর্যায়েও চর্বি পোড়ানোতে সহায়ক ভূমিকা রাখে।
‘নিউট্রিশন অ্যান্ড ডায়াবেটিস’ সাময়িকীতে প্রকাশিত সুইজারল্যান্ডের ‘ইউনিভার্সিটি অফ ফ্রিবার্গ’য়ের করা গবেষণার ফলাফলে জানানো হয়, আধা লিটার পানি পানের মাধ্যমে শরীরে জমে থাকা শক্তি খরচে সহায়ক ভূমিকা রাখে। অর্থাৎ যারা এই পরিমাণ পানি পান করেন না, তাদের তুলনায় যারা করেন তাদের শরীর বেশি ক্যালরি খরচ করতে পারে।
বিশ্রামে থাকার সময় পানি শুধু এভাবে ক্যালরি পোড়াতেই সহায়ক ভূমিকা রাখে না, চর্বি গলাতেও সাহায্য করে।
‘ফর্চুন ইন নিউট্রিশন’ সাময়িকীতে প্রকাশিত ফ্রান্সের ‘ভান্ডারভোরে লা’ন্সি’ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা অনুসারে, পর্যাপ্ত তরল গ্রহণ চর্বি ভাঙতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে যে পরিমাণ পানি পান করা জরুরি
দেহের ওজন, কী পরিমাণ ব্যায়াম করা হচ্ছে, কী পরিমাণ ঘাম হচ্ছে- এই ধরনের বিষয়গুলো ওজন কমাতে পানি পানের ক্ষেত্রে নির্ভর করে।
যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ মেডিসিন’য়ের তথ্যানুসারে- সাধারণভাবে একজন স্বাস্থ্যবান পুরুষের দৈনিক ৩.৭ লিটার তরল গ্রহণ করা প্রয়োজন; অন্যদিকে নারীর প্রয়োজন হয় দৈনিক ২.৭ লিটার।
পানি ছাড়াও এই তরলের পরিমাণের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে- বিভিন্ন রকম পানীয়, তরল খাবার যেমন- তরমুজ বা শসা (এসবে অধিকাংশই পানি)।
তবে মনে রাখতে হবে, শুধু পানি পান করলে তো হবে না। বাস্তবমুখি চিন্তাও করতে হবে।
মানাকার বলেন, “প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা শুরু করলেন কিন্তু সঠিক খাবার খেলেন না, নিয়মিত ব্যায়াম করলেন না, ভালো ঘুম দিলেন না- তাহলে কার্যকর হবে না।”
তাই সব পদ্ধতির সমন্বয়ে পর্যাপ্ত পানি পানের অভ্যাসে ওজন কমানোতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।
আরও পড়ুন