খাওয়া নিয়ে জোর করলে শিশু আরও বিরক্ত হতে পারে।
Published : 17 Aug 2023, 01:45 PM
খাবার নিয়ে বড্ডা বাড়াবাড়ি, খেতে চায় না সবজি। অথচ পিৎজা বার্গারে তাদের অভক্তি নেই।
শিশুদের এমন খাবার অভ্যাসে অনেক অভিভাবকই পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে গিয়ে হিমসিম খান। আর ঠিক মতো খায় না বলে ক্ষুধাভাব থাকে এবং এলোমেলো খাবারের প্রতি ঝোঁক বাড়ে।
ভারতের পুনে’তে অবস্থিত ‘মাদারহুড হসপিটাল খারাদি’র পরামর্শক নিওনেটোলোজিস্ট ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. জগদীশ কাথাওয়াতি এই বিষয়ে বলেন, “গবেষণায় দেখা গেছে শিশুদের এই ধরনের খাদ্যাভ্যাস খুবই সাধারণ।”
হেল্থশটস ডটকমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “সন্তানের সবজি বা ফল খেতে না চাওয়ার বিষয়টা বাবা মায়ের মাঝে হতাশা কাজ করতে পারে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে শিশুর এই অভ্যাস চাইলের পরিবর্তন করা যায়।”
শিশুকে সুষম খাবার গ্রহণে উৎসাহিত করার উপায়
কিছু বিষয় অনুশীলন করার মাধ্যমে শিশুর খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা যায়।
শিশুর খাওয়ার ধরন পরিপাটি রাখা: পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ও ‘মুড সুইং’ নিয়ন্ত্রণে শিশুর সঠিক খাদ্য বিন্যাস- তিন বেলার খাবার, দুই বার নাস্তা ও প্রতিদিন তিন থেকে চার ঘন্টা বিরতি দিয়ে পর্যাপ্ত তরল গ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে।
সঠিক খাদ্য বিন্যাসের মাধ্যমে শিশুর এলোমেলো খাবার গ্রহণের মাত্রা কমানো যায়।
সুষম খাদ্য বিন্যাস: রাতে ভারী খাবার তৈরি নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। বরং সুষম খাবারের দিকে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত। সেগুলো হতে পারে শস্যের তৈরি খাবার যেমন- রুটি, ভাত, সবজি ও প্রোটিন-জাতীয় খাবার যেমন- পনির বা মটর।
শিশুর পছন্দের খাবারের যাচাই করা: অভিভাবক হিসেবে শিশুর খাবারের পুষ্টির চাহিদা নিশ্চিত করার দায়িত্ব আপনার। একইভাবে শিশু কোন খাবার খাবে সেটা তার ওপরেই নির্ভর করবে। শিশুকে শাক সবজি খাওয়ার জন্য বার বার জোর করা হিতে বিপরীত ফল দিতে পারে।
নতুন খাবারের সাথে ধীরে ধীরে পরিচয় করিয়ে দেওয়া: নতুন খাবারের সাথে শিশুরা অভ্যস্ত নয়, তাদের স্বাদ গ্রন্থিও আলাদা। খাবারের সাথে অভ্যস্ত হতে কিছুটা সময় লাগে। যদি মনে হয় যে, শিশু পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে না তাহলে শিশু-বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
পরিবেশনে সৃজনশীলতা: পুষ্টিকর খাবার পরিবেশনে সৃজনশীল হওয়া প্রয়োজন। এতে শিশুরা পুষ্টিকর খাবার গ্রহণে আগ্রহী হয়।
শিশুর রন্ধন দক্ষতা বৃদ্ধি: শিশুকে রান্নার কাজে সাহায্য করতে উৎসাহ দিতে হবে, এর ফলে সে নিজের তৈরি খাবারের প্রতি আগ্রহী হবে। বাজার করতে গেলে শিশুকে ছোট খাট পণ্য ধরতে দেওয়া, তার পছন্দ অনুযায়ী বাজার করা, বয়স অনুযায়ী মাঝে মধ্যে শিশুকে সবজি বা সালাদ কাটতে দেওয়া যেতে পারে।
রান্নার কাজের শিশুকে যুক্ত করলে তাকে পুষ্টিকর খাবারের প্রতি আগ্রহী করে তোলে।
পুরস্কার হিসেবে শিশুকে পছন্দের খাবার খাওয়ানো: মাঝে মধ্যে শিশুকে তার পছন্দের খাবার যেমন- পিৎজা, বার্গার, ফ্রাইস, চিপ্স বা কেক খাওয়ানো যেতে পারে।
প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে শিশুর খাদ্যাভাসে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা যায়।
আরও পড়ুন
শিশুর অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার লক্ষণ