শিশুর অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার লক্ষণ

লবণ বেশি খেলে হাত-পায়ে পানি আসা থেকে শুরু করে নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে।

লাইফস্টাইল ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 March 2023, 07:35 AM
Updated : 2 March 2023, 07:35 AM

লবণ খাবারের স্বাদ বাড়ায়। তবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া শরীরের ক্ষতিও করে।

বড়দের লবণ খাওয়ার ক্ষেত্রে বাছবিচার করা হলেও পরিবারের ছোট শিশুটি লবণ পরিমিত খাচ্ছে কি-না সেদিকে খেয়াল রাখা হয় না। এতে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে।

ঘন ঘন তৃষ্ণা পাওয়া

সোডিয়াম দেহে পানি ধরে রাখে। তাই এর সঠিক ভারসাম্য থাকা প্রয়োজন।

যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার অবসর প্রাপ্ত শিশুরোগ-বিশেষজ্ঞ ও স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. মে লু প্যারেন্টস ডটকম’য়ে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলেন, “লবণ বা সোডিয়াম যেহেতু দেহে পানি ধরে রাখে সেহেতু বেশি লবণের কারণে পানি গ্রহণের ইচ্ছাটাও বাড়ে।”

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে দেহে পানির চাহিদা বেড়ে যায় ফলে ঘন ঘন তৃষ্ণা লাগে। তবে শিশুদের পিপাসার লাগার আরও অনেক কারণ থাকতে পারে।  

গাঢ় বা হলদে প্রস্রাব

শিশু সব সময় তৃষ্ণার্তবোধ করলে, বার বার প্রসাব করতে গেলে, তার প্রস্রাবের রং খেয়াল রাখতে হবে।

এই বিষয়ে একই প্রতিবেদনে ডালাসের ‘চিলড্রেন’স হেল্থ’য়ের প্রধান শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ‘ইউরোলজিস্ট’ ডা. ক্রেইগ পিটার্স বলেন, “বিভিন্ন কারণে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ হতে পারে। এর মধ্যে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণও রয়েছে।”

অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার ফলে প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ এবং তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত হয়। এই ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শে মূত্র পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

হাত ও পায়ে ফোলাভাব বা পানি আসা

শিশু অতিরিক্ত লবণ খেয়ে থাকলে দেহে সোডিয়াম পানি ধরে রাখবে এবং দেখতে ফোলা ফোলা অথবা পানি আসার মতো জটিলতা দেখা দিবে।

ডা. লু পরামর্শ দেন, শিশুর মাঝে ফোলাভাব বা পানি আসার সমস্যা দেখা দিলে, হাত ও পায়ে সবার আগে প্রকাশ পাবে। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি

বাড়তি লবণসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া রক্তচাপ বাড়ায়, এটা কেবল প্রাপ্ত বয়স্ক না শিশুদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

‘আমেরিকান ফ্যামিলি ফিজিশিয়ান’য়ে প্রকাশিত সমীক্ষা অনুযায়ী, তিন থেকে ১৮ বছরের শতকরা সাত শতাংশ শিশু ‘প্রি-হাইপারটেনশন’ বা ‘হাইপারটেনশন’য়ে ভুগে থাকেন। 

স্বাভাবিকের তুলনায় রক্ত প্রবাহের চাপ বৃদ্ধি পেলে উচ্চ রক্তচাপ বা ‘হাইপারটেনশন’ দেখা দেয়। এই সময়ে ধমনীর দেয়ালে রক্তের চাপ বৃদ্ধি পায়। ফলে হৃদরোগ- হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোক ইত্যাদির ঝুঁকি বাড়ে।

শিশুর যতটা লবণ গ্রহণ করা উচিত

‘ইউকে ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস’ অনুযায়ী এক থেকে তিন বছর বয়সি শিশুদের দৈনিক লবণ ২ গ্রামের (০.৮ গ্রাম সোডিয়াম) বেশি নয়।

চার থেকে ছয় বছরের শিশুদের দৈনিক ৩ গ্রাম লবণ (১.২ গ্রাম সোডিয়াম), সাত থেকে ১০ বছর বয়সিদের ৫ গ্রাম লবণ (২ গ্রাম সোডিয়াম), ১১ বছর ও এর উর্দ্ধে ৬ গ্রাম (২.৪ সোডিয়াম) বেশি নয় এবং এক বছরের কম বয়সিদের ক্ষেত্রে ১ গ্রামের কম লবণ খাওয়া উচিত।    

শিশু খুব বেশি লবণ খেলে করণীয়

প্রথমেই শিশুর লবণ খাওয়ার পরিমাণ কমানোর দিকে মনোযোগ দিতে হবে। খাবারের লবণের মাত্রা বেশি থাকলে খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন আনতে হবে। স্বাস্থ্যকর খাবার ও ফল খাওয়ানোর অভ্যারে রপ্ত করতে হবে।

স্যান্টা মনিকা’তে অবস্থিত ‘প্রভিডেন্স সেইন্ট জন’স হেল্থ সেন্টার’য়ের চিকিৎসক এস.ড্যানিয়েল জানজিয়ান বলেন, “এক্ষেত্রে শিশুকে যতটা সম্ভব তরল পান করাতে হবে। ফলে শরীর থেকে বাড়তি সোডিয়াম বের হয়ে যাবে।”

পটাসিয়াম দেহে সোডিয়ামের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে উপকারী খনিজ হিসেবে কাজ করে। কলাতে প্রচুর পরিমাণে এই খনিজ রয়েছে। এছাড়ও ব্রকলি, সবুজ শাক সবজি ও দই থেকেও মিলবে পটাসিয়াম।

তাই শিশুর খাবার তালিকায় এসব রাখা যেতে পারে।

আরও পড়ুন

Also Read: উচ্চ রক্তচাপে উপকারী খাবার

Also Read: যেসব খাবার শিশুর ওপর বাজে প্রভাব ফেলে