চট্টগ্রামের মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেওয়া অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছে আদালত।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম আবদুল হালিম সোমবার শুনানি শেষে অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (প্রসিকিউশন) মো. কামরুল হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "আসামি পক্ষ নারাজি এবং পুনঃতদন্তের আবেদন করলেও শুনানি শেষে তা খারিজ করে দেয় আদালত।”
মিতু হত্যার ঘটনায় তার স্বামী বাবুল আক্তার ছয় বছর আগে যে মামলা করেছিলেন, তাতে তাকেই প্রধান আসামি করে গত ১৩ সেপ্টেম্বর আদালতে এ অভিযোগপত্র দেয় মামলার তদন্ত সংস্থা পিবিআই।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, আনোয়ার হোসেন, এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান মিয়া, কামরুল ইসলাম শিকদার ওরফে মুছা ও খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু। এদের মধ্যে মুছা ও কালু পলাতক।
এর আগে সন্দেহভাজন হিসেবে যাদের আসামি করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে আবু নছর গুন্নু, শাহ জামান, সাইদুল ইসলাম শিকদার, নুরুন্নবী ও রাশেদুল ইসলামের নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে অভিযোগপত্রে। তাদের মধ্যে নুরুন্নবী ও রাশেদুল ইসলাম সেই হত্যাকাণ্ডের কিছুদিন পর কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা গিয়েছিলেন।
অভিযোগপত্রে তদন্তকারী সংস্থা পিবিআই বলেছে, ‘পরকীয়ার ঘটনা জেনে যাওয়ায়’ সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার তার ‘সোর্সদের দিয়ে’ স্ত্রী মিতুকে ‘খুন করান’ বলে উঠে এসেছে তাদের অনুসন্ধানে।
২০ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে মোট সাক্ষী করা হয়েছে ৯৭ জনকে। তাদের পাঁচজন এ মামলার বর্তমান ও সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন সে সময় পুলিশ সুপার পদে থাকা বাবুল আক্তার।
মিতু হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে খোদ বাবুলের সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়ে গত ১২ মে তার করা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। এরপর সেদিনই বাবুলসহ ৯ জনকে আসামি করে নতুন হত্যা মামলা করেন মিতুর বাবা মোশাররফ।
২৫ জানুয়ারি মোশাররফ হোসেনের করা মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পিবিআই। ৬ মার্চ সেই চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আদালত। এখন নিজের করা মামলাতেই গ্রেপ্তার আছেন বাবুল।
বাবুল আক্তার পিবিআই হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে যে মামলার আবেদন করেছিলেন, তা খারিজ করে দিয়েছে আদালত। সেই সঙ্গে কারাগারে নিরাপত্তা চেয়ে যে আবেদন এই সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা করেছিলেন, তাও নাকচ করে দিয়েছেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ জেবুননেছা বেগম।
পুরনো খবর: