বাড়তি ভাড়া নেওয়া হবে না বলা হলেও মানা হয়নি বলে প্রচুর অভিযোগ যাত্রীদের। তবে যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার যন্ত্রণা পোহাতে হয়নি তেমন; ট্রেনেও ছিল কিছুটা স্বস্তি, সুদিন ফিরেছে লঞ্চেও।
Published : 16 Jun 2024, 01:43 AM
রাত ১০টার বাস ধরতে মহাখালী টার্মিনালে একটু আগেভাগেই এসেছিলেন রোকন রাকিব। তিনি যাবেন নওগাঁ। তার বাস ছাড়ার তখনও আধা ঘণ্টা বাকি। আশপাশের যাত্রীদের কেউ কেউ তখনও সাড়ে ৬টার বাসের অপেক্ষায়। মনে মনে তিনিও লম্বা সময় অপেক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। শেষমেষ যদিও আশপাশের যাত্রীদের মত ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি; ঠিক সময়েই ছেড়েছে তার বাস।
শনিবার বেসরকারি একটি সংবাদমাধ্যমের কর্মী রাকিব উত্তরের পথে স্বস্তিতে রওনা দিতে পারলেও সবার বেলায় তা ঘটেনি। এদিন রাতের ওই সময়েও টার্মিনালে ভিড় ছিল প্রচুর; অনেকেই ছিলেন গাড়ির অপেক্ষায়।
টিকেট না পাওয়া, বাড়তি ভাড়া, নির্ধারিত সূচি ধরে বাস না ছাড়ার ভোগান্তির সঙ্গে এবার পথের যানজটের তিক্ততা ছিল অন্যান্যবারের চেয়ে কম। টিকেট না পেয়ে কিংবা বাড়তি ভাড়ার কারণে পণ্যবাহী ট্রাক ও পিকআপেও ঝুঁকি নিয়ে ঘরমুখো মানুষজনকে চলাচল করতে দেখা গেছে।
যাত্রীরা বলছেন, উত্তর বা দক্ষিণের জেলাগুলোর পথে কিংবা চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও সিলেট যেতে সেভাবে তাদের যানজটে পড়তে হয়নি। ঢাকার ছাড়ার পর কম ভোগান্তি সয়ে গ্রামের বাড়ির দিকে যাত্রা করতে পেরেছেন তারা।
সোমবার ঈদের আগের দু্ই দিনের বাড়তি ছুটিতে ঈদযাত্রা শুরু হয়ে যায় বৃহস্পতিবার থেকেই। সেদিন থেকেই প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে মানুষ ছুটছেন গ্রামের বাড়ির পানে। ওই রাতে ও শুক্রবার প্রথম ভাগে যানজটের কিছু খবর আসে বিভিন্ন দিক থেকে। তবে সময় গড়ানোর সঙ্গে তা কমে যায়।
টিকেট না পাওয়ায় কিংবা অফিসে দায়িত্ব পালনের কারণে যারা শনিবার ঢাকার ছাড়ছেন সন্ধ্যার পর তাদের ঈদযাত্রায় ঝক্কি নেমেছে।
সন্ধ্যার পর ঢাকার সায়েদাবাদ ও আশপাশের বিভিন্ন পরিবহনের কাউন্টার থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসের যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার হয়ে পোস্তগোলা পর্যন্ত ছিল লম্বা যানজট।
মধ্যরাতেও সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, শনির আখড়া, পোস্তগোলা, মানিকনগর এলাকায় তীব্র যানজট দেখা গেছে।
যাত্রীর চাপ বাড়ায় এদিন রাতে কমলাপুর রেল স্টেশনেও শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে। রাতে ছেড়ে যাওয়া ট্রেনের ছাদেও যাত্রী ছিল।
বাড়তি ভাড়ার অভিযোগ
এদিন বিভিন্ন পরিবহন যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন যাত্রীরা।
ঢাকা থেকে বরিশাল রুটের সাকুরা পরিবহনের যাত্রী মাসুদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় সায়েদাবাদ কাউন্টার থেকে বাস ছাড়ার কথা ছিল। তবে সেই বাস ছেড়েছে দুই ঘণ্টা পর সাড়ে নয়টায়, তাও যাত্রাবাড়ী থেকে। আর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ওই পরিবহনে ৭০০ টাকার ভাড়া নেওয়া হয়েছে ১২শ টাকা।
“আমাদের বাস ছিল সাড়ে সাতটায়। আমরা সাতটায় সায়েদাবাদ রেলগেট পৌঁছুতে পারি। রাস্তায় যানজট দেখে সেখান থেকে হেঁটে সায়েদাবাদের হুজুরের বাড়ির সামনে কাউন্টারে যাই। সেখানে গাড়ি নাই, গাড়ি রাখা হয়েছে যাত্রাবাড়ীর কোনো একটা রাস্তায়। সেখান থেকে একজন হেল্পারের সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে যাত্রাবাড়ী যাই, সেখানেও বাস পাইনি। পরে শহীদ ফারুক সরণিতে গিয়ে বাস ধরি। এই করতে করতে বাস ছাড়ে সাড়ে নয়টায়।”
তার মত রাজধানীর মধ্যে যানজটে পড়ার তিক্ততার কথা বলছেন ঢাকা থেকে বরিশালের আরেক যাত্রী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।
রাতে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সন্ধ্যর পর যাত্রাবাড়ী ও সায়েদাবাদ এলাকার সড়কে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছিল।
“আমি অনলাইনে টিকেট কিনেছি, তাই নির্ধারিত ভাড়াই নিয়েছে। কিন্তু রাস্তায় যানজট খুব ভুগিয়েছে। সায়েদাবাদ থেকে পোস্তগোলা পর্যন্ত আসতে দুই ঘণ্টার বেশি সময় লেগেছে।”
ট্রেনে কিছুটা স্বস্তি
ঢাকার কমলাপুর থেকে ঈদের আগে প্রতিদিন বিভিন্ন রুটে ৬৯টি ট্রেন ছেড়ে যায়।
রেলে ঈদযাত্রা গত বুধবার শুরুর পর থেকে কমলাপুর ও বিমানবন্দর স্টেশনে কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। গত কয়েকদিন টিকেট ছাড়া কাউকে স্টেশনে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। আবার ট্রেনের ছাদেও যাত্রীদের উঠতে দেওয়া হচ্ছে না।
তবে শুক্রবার রাতে কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গের কয়েকটি ট্রেনের ছাদে যাত্রীদের উঠতে দেখা গেছে।
শনিবার বিমানবন্দর স্টেশনে এগারোসিন্ধুর, একতা ও সিলেটের পারাবাত এক্সপ্রেস ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার সময় ট্রেন তিনটিতে যাত্রীদের চাপ তেমন ছিল না। এ সময় কোনো যাত্রীকে ছাদে উঠতে দেখা যায়নি।
কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী মোহাম্মদ মোহসিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, "অন্য সময়ের তুলনায় ট্রেনের জার্নি ভালো মনে হচ্ছে। কমলাপুরে যাত্রীদের টিকেট চেক করে স্টেশনে ঢুকতে দিচ্ছে। এছাড়া স্ট্যান্ডিং যাত্রীও কম। ৩ মিনিট দেরি করে ট্রেন ছেড়েছে। এটা খুব বেশি দেরি নয়।”
আরেক যাত্রী মাহফুজুর রহমান বলেন, “এবার ঈদযাত্রায় রেলওয়ের ব্যবস্থাপনা ভালো। ট্রেনের সময়সূচী মোটামুটি ঠিক থাকছে। তবে স্ট্যান্ডিং টিকেট দেওয়ায় ট্রেনে যাত্রীদের ভিড় বেশি হচ্ছে।”
তবে উত্তরবঙ্গের ট্রেনগুলো জয়দেবপুর স্টেশনে যাওয়ার শৃঙ্খলা আর ধরে রাখতে পারছে না। ওই স্টেশন থেকে প্রচুর যাত্রী বিভিন্ন ট্রেনের ছাদে উঠে পড়ছেন।
শুক্রবার ভোরে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেনে পরিবার নিয়ে নাটোর গিয়েছেন এএসএম আতিকুর রহমান। তিনি বলেন, “শুরুর স্টেশন থেকে ট্রেনে যাত্রীদের তেমন চাপ ছিল না। তবে জয়দেবপুর স্টেশনে যাওয়ার পর ট্রেনে যাত্রীদের ভিড় ছিল। আমি কেবিনে এসেছি, কেবিনের করিডোরে প্রচুর যাত্রী দেখেছি। পথে ছয়টা ক্রসিং দেওয়াতে আমাদের ট্রেন দুই ঘণ্টা দেরি করেছে। তবে সবমিলিয়ে এবারের ট্রেন জার্নি মোটামুটি ভালোই ছিল।”
এবার রেলপথে চাপ কম থাকার কারণ ব্যাখ্যা করে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রেলওয়ের সবার সম্মিলিত চেষ্টায় শৃঙ্খলা ফেরানো সম্ভব হয়েছে। পাশাপাশি ছুটি দীর্ঘ হওয়ার প্রভাবও পড়েছে।
“আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে। এক্ষেত্রে সবাই কাজ করেছেন। আর যেহেতু ঈদের আগেই ছুটি পড়ে গেছে, সেজন্য যাত্রীরা ধাপে ধাপে বাড়ি গেছেন। এতেও আমাদের কাজটা সহজ হয়ে গেছে।”
জয়দেবপুর গিয়ে ট্রেন আর শৃঙ্খলা রাখতে পারছেন কেন জানতে চাইলে মাসুদ সারওয়ার বলেন, “ওই স্টেশনে আমাদের লোকবল কম। আর স্টেশনের চারপাশে খোলা। এছাড়া ওই স্টেশন থেকে প্রচুর গার্মেন্টসকর্মী ট্রেনে ওঠেন। ফলে তাদের আটকে রাখা কঠিণ হয়ে পড়ে।”
তবে রাতের বেলা আর দিনের মত শৃঙ্খলা ছিল না কমলাপুর রেল স্টেশনে। বেসরকারি অফিস ও কারখানা ছুটির পর যাত্রীর ভিড়ে সব বিধি নিষেধ একাকার হয়ে যাওয়ার খবর মিলেছে।
উত্তরের সড়কে চাপ থাকলেও জট নেই
শনিবার সকাল থেকে উত্তরের পথে মহাসড়কে সাধারণ মানুষের ঢল নেমেছে। বাস, খোলা ট্রাক, পিকআপ যে যেভাবে পারছেন ঈদযাত্রায় শামিল হচ্ছেন। গাজীপুর-টাঙ্গাইল, গাজীপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও এদিন যাত্রী সংখ্যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে। এতে গাড়ির চাপ বাড়লেও সকাল থেকে মধ্যরাত পেরিয়েও লম্বা যানজটের খবর আসেনি। তবে কিছু পয়েন্টে যাত্রী উঠানামা করায় হঠাৎ থেমে যাচ্ছে যানবাহন।
উত্তরের জেলাগুলোতে যেতে অন্য সময়ের চেয়ে যানজট কিছুটা স্বস্তি দিলেও বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ ছিল যাত্রীদের।
বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা পর্যন্ত কয়েকটি জায়গায় যানজটে পড়তে হয় যানবাহনকে। এই ধারা চলে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত। আবার শুক্রবার দুপুরের পর থেকে শনিবার পর্যন্ত সড়কে যানজট কিছুটা কম ছিল।
তবে শনিবার সন্ধ্যার আগে আগে গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে কালিয়াকৈর এবং টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত যানজট দেখা গেছে।
ঢাকা থেকে দিনাজপুরগামী একটি মাইক্রোবাসের চালক মোহাম্মদ শাকিল বলেন, বৃহস্পতিবার বেলা ৪টায় রওনা হন তিনি। দিনাজপুর পৌঁছান ১৪ ঘণ্টা পর শুক্রবার ভোর ৬টায়।
তিনি বলেন, “ঢাকার শ্যামলী থেকে নবীনগর, বাইপাইল হয়ে চন্দ্রা পৌঁছাতে লাগে ৫ ঘণ্টা। চন্দ্রা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত থেমে থেমে গাড়ি চলেছে। বগুড়া পর্যন্ত রাস্তায় যানবাহনের অনেক চাপ ছিল। গোবিন্দগঞ্জ এসে প্রায় দেড় ঘন্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয়েছে।”
ঈদে বাসে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন যাত্রীদের অনেকে। বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম থেকে পীরগঞ্জ যেতে শ্যামলী পরিবহনের বাসে উঠেছিলেন আরমান আযম নামে এক যাত্রী।
তিনি বলেন, ওই বাসে বাড়তি ভাড়া দিতে হয়েছে তাকে।
“চট্টগ্রাম থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের ভাড়া ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা। কিন্তু ঈদের সময় ওই ভাড়া নিয়েছে ২ হাজার টাকা করে। পত্রিকায় পড়ছি ঈদ উপলক্ষে বাড়তি ভাড়া না নেওয়ার ঘোষণা দিচ্ছেন পরিবহন মালিক শ্রমিকরা। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।”
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকের টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে। তবে তেমন যানজট ছিল না। বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে শুক্রবার রাত ১২টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতুর ওপর দিয়ে ৫৩ হাজার ৭০৮টি যানবাহন চলাচল করেছে। এই সংখ্যা সেতু তৈরির পর সর্বোচ্চ।
যানবাহনের এই চাপের মধ্যে বৃহস্পতিবার শেষ রাতে টাঙ্গাইলের পুংলি এলাকায় মালবাহী ট্রাক উল্টে গেলে সড়কে অন্তত ১৫ কিলোমিটার যানজট তৈরি হয়। শুক্রবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজট পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়।
যানবাহনের চাপ বেড়ে যাওয়ায় যানজট ঠেকাতে শনিবার দুপুর বারোটা থেকে দেড়টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে কোনো যানবাহনকে ঢাকার দিকে আসতে দেওয়া হয় হয়নি। এ সময় ওই লেন ধরে ঢাকা থেকে উত্তরবঙ্গমুখী যানবাহনকে যেতে দেওয়া হয়।
শনিবার ওই সড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও কোনো যানজট তৈরি হয়নি।
চার লেনের সড়ক চালু হওয়ায় বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল এলাকা বৃহস্পতিবারের পর থেকে খুব বেশি যানজট তৈরি হয়নি।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি ইসরাইল হোসেন বাবু্র, ঈদের প্রস্তুতি হিসেবে সড়কের ওই অংশ প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া ফোর লেইন চালু হওয়ায় ওই অংশে যানবাহনের গতি কম থাকলেও তেমন যানজট তৈরি হয়নি।
এলেঙ্গা হাইওয়ে থানার ওসি মীর মোহাম্মদ সাজিদুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা এবং ঈদের আগে টানা ছুটি পড়ায় এবার সড়কে চাপ কম পড়েছে।
“এই সড়কে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। এটা চলে শুক্রবার পর্যন্ত। শনিবার থেকেই সড়কে যানবাহন অনেকটাই কমে গেছে। আমার মনে হয় যারা চাকুরি করেন তারা বৃহস্পতিবার অনেকেই বাড়ি গেছেন। শুক্রবারও গেছেন অনেকে। ছুটি বেশি থাকায় ধাপে ধাপে লোকজন যেতে পারছেন, এ কারণে যানজট কম হয়েছে।”
ভিড় বেড়েছে লঞ্চে
পদ্মা সেতু চালুর পর দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীদের কাছে লঞ্চের কদর কমেছে মনে করা হলেও শুক্রবার সদরঘাটে গিয়ে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। একই অবস্থা ছিল শনিবার সন্ধ্যায়ও।
শুক্রবার সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি লঞ্চ ছিল যাত্রীতে পূর্ণ। একই অবস্থা দেখা গেছে শনিবারও। তবে বরিশাল রুটের লঞ্চে যাত্রী ছিল কিছুটা কম।
শনিবার সকালে সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া একটি লঞ্চে চাঁদপুর গেছেন আবদুল্লাহ আল মামুন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আগের সঙ্গে তুলনা করলে বলতে হয় ভিড় কিছুটা কমেছে। কিন্তু তারপরও আমরা কেবিন পাইনি। পরে বিজনেস ক্লাসের টিকেট কেটে এসেছি। আমার কাছে জার্নি স্মুথ মনে হয়েছে, অন্য সময় অনেক ভিড় থাকে।”
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের যুগ্ম পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, শনিবার দিনে ১০০টির বেশি লঞ্চ সদরঘাট টার্মিনাল ছেড়ে যাওয়ার কথা। সন্ধ্যার মধ্যেই অর্ধেকের বেশি লঞ্চ ছেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতু হওয়ার ভিড় কমেছিল, কিন্তু গত তিন দিনে আগের চিত্র ফিরে এসেছে।
“শুক্রবার প্রতিটি লঞ্চ যাত্রীতে পূর্ণ ছিল। আজও একই অবস্থা। ঈদযাত্রা উপলক্ষে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। র্যাব, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। যাত্রীর চাপ বাড়ায় কোনো সময়সূচি হিসাব করা হচ্ছে না। যাত্রীতে পূর্ণ হলেই লঞ্চগুলো ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হচ্ছে।”
ঈদযাত্রায় বাড়তি বাস ভাড়া, ফেরার পথে যাত্রী না পাওয়ার ‘অজুহাত’
ঈদযাত্রা: উত্তরের পথে চাপ আছে, তবে দীর্ঘ জট নেই
স্বস্তিতে শুরু ঈদযাত্রা, ২ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে কুমিল্লা
ঈদযাত্রার তৃতীয় দিনে ট্রেন ছাড়ছে 'সময়মতো'
ঈদযাত্রা: পদ্মা সেতুর সাত বুথে টোল আদায়, তারপরও কমছে না গাড়ির চাপ
টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ মহাসড়কে দীর্ঘ যানজট নেই, চাপ আছে
বঙ্গবন্ধু সেতুতে একদিনে রেকর্ড পৌনে ৪ কোটি টাকা টোল আদায়
ঈদযাত্রায় চিরচেনা ভিড় নেই গাবতলীতে, মহাখালীতে চাপ
অন্যের এনআইডিতে টিকেট সংগ্রহ, ফেইসবুকে বিজ্ঞাপন দিয়ে চড়া দামে বিক্রি