আল-শিফায় ৬৫০ জনের মতো রোগী, ২০০ থেকে ৫০০ চিকিৎসা কর্মী ও আশ্রয় নেওয়া প্রায় দেড় হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি আছে।
Published : 15 Nov 2023, 11:53 AM
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলা বলেছেন, গাজার আল-শিফা হাসপাতালে সামরিক অভিযান চালানোর মাধ্যমে ইসরায়েল ‘মানবতাবিরোধী নতুন অপরাধ’ করছে।
ফিলিস্তিনের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা ডব্লিউএএফএ-তে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে কাইলা বলেছেন, “আল-শিফার চিকিৎসা কর্মী, রোগী ও সেখানে থাকা উদ্বাস্তুদের জীবনের জন্য দখলদার বাহিনী সম্পূর্ণ দায়ী বলে ধরবো আমরা।”
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ ইসরায়েলে অধিকৃত পশ্চিম তীরের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করে। পশ্চিম তীরের এই অংশগুলো পুরোপুরি ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে নেই। ফিলিস্তিনের কর্তৃপক্ষে ফাতাহ আন্দোলনের আধিপত্য আছে যারা হামাসের প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক গোষ্ঠী।
আল-কাইলার নেতৃত্বাধীন ফিলিস্তিন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পৃথক প্রতিষ্ঠান।
আল-শিফা ফিলিস্তিনি ছিটমহল গাজার বৃহত্তম হাসপাতাল। এই হাসপাতালটিতে ৬৫০ জনের মতো রোগী, ২০০ থেকে ৫০০ কর্মী ও আশ্রয় নেওয়া প্রায় দেড় হাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনি আছে বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
এই হাসপাতালের নিচে, ভূগর্ভে হামাসের একটি কমান্ড সেন্টার আছে বলে অভিযোগ করেছে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
কিন্তু নিজেদের অভিযোগে অটল ইসরায়েল বুধবার ভোররাত থেকে এই হাসপাতালটিতে ঝটিকা অভিযান শুরু করে ‘হাসপাতালের নিচে টানেলে থাকা হামাস যোদ্ধাদের’ আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছে।
কয়েকদিন ধরে আল-শিফা হাসপাতাল অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। তারা সেখান থেকে কাউকে বের হতে দিচ্ছে না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিবিহীন হাসপাতালটিতে নাজুক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। বিদ্যুৎ না থাকায় কয়েক ডজন নবজাতককে তাদের ইনকিউবেটর থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, এদের সবার মৃত্যু হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অক্সিজেনের অভাবে ইতোমধ্যে সাত শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালের ম্যানেজার জানিয়েছেন।
মৃত রোগীদের বাইরে নেওয়া যাচ্ছে না। হাসপাতালেই মৃতদেহের স্তূপ জমে আছে। লাশগুলোতে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাধ্য হয়ে মৃতদের সমাহিত করতে হাসপাতালের ভেতরেই গণকবর খোঁড়া হচ্ছিল।
এর মধ্যেই সেখানে আশ্রয় নেওয়া উদ্বাস্তুদের মধ্যে হামাসের যোদ্ধারা আছে আর হাসপাতালের নিচে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির কমান্ড সেন্টার আছে অভিযোগ করে সেখানে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে জানিয়েছেন, হাসপাতালের ভেতরে ছয়টি ইসরায়েলি ট্যাংক অবস্থান নিয়েছে এবং শতাধিক সেনা জরুরি বিভাগে প্রবেশ করেছে। কিছু সেনা মাস্ক পরা আর তারা আরবিতে চিৎকার করে বলছে, ‘কেউ নড়চড়া করবেন না, নড়াচড়া করবেন না’।
সেনারা হাসপাতালের ভেতরে স্মোক বোমা নিক্ষেপ করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন:
গাজার বৃহত্তম হাসপাতালে ইসরায়েলি সেনাদের ঝটিকা অভিযান
গাজার অবরুদ্ধ হাসপাতালের ভেতরে খোঁড়া হচ্ছে গণকবর
গাজার আল-শিফা হাসপাতাল মৃতদের দাফন করতে পারছে না: ডব্লিউএইচও