বরিশাল মহানগরীর মানুষ অনেকদিন ধরে বঞ্চিত, তারা মৌলিক সেবাটুকুও পায়নি বলে অভিযোগ করেছেন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)।
নৌকার কাণ্ডারি হিসেবে মনোনয়ন লাভের পর প্রথম ঈদ উৎসবে শরিক হয়ে নগরীর সাধারণ মানুষ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে দিনভর শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এই মেয়র পদপ্রার্থী।
শনিবার সকালে নগরীর কেন্দ্রীয় হেমায়েত উদ্দিন ঈদগাহ ময়দানে ঈদের প্রধান জামাতে অংশ নেন খোকন সেরনিয়াবাত।
নামাজ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “এখানকার মানুষ অনেকদিন ধরে অনেক কিছু থেকে বঞ্চিত। মৌলিক সেবাও মানুষ পাচ্ছেন না। প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে এখানে মেয়র পদে মনোনীত করেছেন। মানুষ সুযোগ দিলে আমার দায়িত্ব শতভাগ পূরণ করব।
“ঈদ ও নির্বাচন- মানুষের মনে অন্যরকম একটা অনুভূতি। আমি সর্বস্তরের মানুষের অন্তর থেকে সাক্ষাৎ পেয়েছি। নগরবাসীকে শুভেচ্ছা ও আন্তরিক ভালোবাসা জানাই”, যোগ করেন খোকন সেরনিয়াবাত।
নামাজ শেষে নগরীর কালু শাহ সড়কের ভাড়া বাসার নীচতলায় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শুরু করেন তিনি।
সেখানে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ড থেকে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক এসে তার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এরই মাঝে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে একান্ত বৈঠকও করেছেন।
গত সাড়ে চার বছর ধরে বরিশালের মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ হলেন খোকন সেরনিয়াবাতের ভাতিজা। সাদিক, খোকনের বড় ভাই আবুল হাসানত আব্দুল্লাহর বড় ভাইয়ের ছেলে।
হাসানাতের পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক নেই খোকন সেরনিয়াবাতের। যদিও মনোনয়ন পাওয়ার পর খোকন বড় ভাইয়ের ঢাকার বাসায় গিয়ে তার সঙ্গে দেখা করে এসেছেন। এ সময় তার সঙ্গে সাদিক আব্দুল্লাহও উপস্থিত ছিলেন।
সাদিকও মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে জিতে গেছেন চাচা। তারপর সাদিক নেতাকর্মীদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে চাচার পক্ষে ভোট করার কথা বলেন।
ঈদ শুভেচ্ছার সঙ্গে নির্বাচনী প্রচারও
এদিকে বরিশালে ঈদ আনন্দের সঙ্গে চলছে মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচার। ঈদ জামাত শেষ করে বাসায় ফিরে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মেয়র প্রার্থীরা। আর বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন।
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি না যাওয়ার ঘোষণার মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটে লড়াইয়ের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র আহসান হাবীব কামালের ছেলে কামরুল আহসান রূপম। তিনি ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সদস্য।
রূপম সকালে নগরীর কালু শাহ সড়ক জামে মসজিদে ঈদ জামাত শেষে নেতাকর্মীদের নিয়ে বাসভবনে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
নগরবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “সকাল থেকে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। শুভেচ্ছা বিনিময় করা হয়েছে। এ ছাড়া নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ঈদ ও নির্বাচনী মতবিনিময় দুটোই একসঙ্গে করেছি।
জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী প্রকৌশলী ইকবাল হাসেন তাপস নগরীর অক্সফোর্ড মিশন রোড জামে মসজিদে ঈদের জামাত আদায় করেন। এরপর নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন এবং মিষ্টি মুখ করান।
তাপস নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডে গিয়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করছেন।
প্রকৌশলী তাপস বলেন, “নির্বাচন নিয়ে মানুষের হতাশা রয়েছে। যে হতাশা এখনও জনগণ কাটিয়ে উঠতে পারেনি। সরকার দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তন বরিশালবাসী ভালভাবে মেনে নিতে পারছে না। আওয়ামী লীগ পরিবারতন্ত্র থেকে বের হতে পারেনি। মানুষ দেখতে চায় ১২ জুনের ভোটে পরিবরাতন্ত্রের বিজয় হবে নাকি গণতন্ত্রের বিজয় হবে। আমি আশা করি, গণতন্ত্রের বিজয় হবে।
নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
এ ছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হিসেবে প্রচার চালাচ্ছেন মো. আলী হোসেন হাওলাদার।
নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করছেন বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আবিদ হোসেন। তিনি এলাকাবাসীর সঙ্গে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদে গিয়ে ঈদের জামাতে অংশ নিয়েছেন। ভোটারদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন।
আরও পড়ুন: