খোকন সেরনিয়াবাত বরিশালকে আধুনিক ও নতুন শান্তিময় নগরীতে পরিণত করার প্রতিশ্রুত দেন।
Published : 20 Apr 2023, 09:09 PM
মেয়র নির্বাচিত হলে বরিশাল নগরীর মানুষকে শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও সেবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল নগরীর শহীদ সোহেল চত্বরে দলীয় কার্যালয়ে দেওয়া গণসংবর্ধনায় তিনি এ প্রতিশ্রুতি দেন।
আসন্ন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন খোকন সেরনিয়াবাত।
সংবর্ধনার জবাবে খোকন সেরনিয়াবাত তার বক্তব্যে বলেন, “আমি বরিশালকে ভালবাসি। বরিশাল নগরীর প্রতিটি মানুষকে শ্রদ্ধা, ভালবাসা ও সেবা দিয়ে মনের আশা পূরণ করব।”
তিনি বলেন, “আজ থেকে বরিশাল নগরী নতুন শ্লোগান–নতুন বরিশাল, জয় শেখ হাসিনা।”
দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী হিসেবে বরিশাল এসেছেন উল্লেখ করে খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, “আমার উপর আস্থা রেখে মেয়র প্রার্থী হিসেবে আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। আমার উপর তার আস্থার শতভাগ প্রতিদান দেব।”
১৯৭৫ সালে নিহত হওয়া জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, “আমিও সেদিন গুলিবিদ্ধ হয়েছিলাম। আমার বাঁচা আলৌকিক ঘটনা।”
তার বাবা মৃত্যুর আগ পর্যন্ত দেশ ও দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে কাজ করেছেন; তার তার সন্তান হিসেবে তিনিও এ অঞ্চলের মানুষের সেবা করতে চান বলে জানান।
“আমি আপনাদের আকুণ্ঠ সমর্থন পেলে, মেয়র নির্বাচিত হলে এই মুখ থুবড়ে পড়া বিধ্বস্ত বরিশালকে তিলোত্তমা নতুন বরিশাল উপহার দেব। আমি আপনাদের কষ্ট-বেদনার কথা জানি, বরিশাল নগরীকে আধুনিক নগরীতে পরিণত করব। আমি বরিশালকে নতুন শান্তিময় বরিশাল নগরীতে পরিণত করব। আমি বেঁচে থাকতে নগরীতে কোনো অন্যায়, অনিয়ম ও অপরাধ হতে দেব না।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের রাতে ঢাকার মিন্টো রোডে আবদুর রব সেরনিয়াবাতের বাড়িতেও হামলা হয়েছিল। সেই হামলায় রব সেরনিয়াবাতসহ পরিবারের ছয় সদস্য নিহত হন। সেই রাতে গুলিবিদ্ধ হলেও বেঁচে যান খোকন সেরনিয়াবাত।
বরিশালের বর্তমান সেরনিয়াবাত মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ হলেন খোকন সেরনিয়াবাতের ভাতিজা। আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে জিতে গেছেন চাচা।
বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের আয়োজনে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক।
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফম বাহাউদ্দিন নাসিম, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতা আনিসুর রহমান, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, জেলা সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস ও মহানগরের সহ-সভাপতি আফজালুল করিম।
অন্যান্যের মধ্যে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাইদুর রহমান রিন্টু, সাবেক সংসদ সদস্য জেবুন্নেছা আফরোজ, মহানগর যুবলীগের আহবায়ক নিজামুল ইসলাম নিজাম, যুগ্ম আহবায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন, মীর আমিনউদ্দিন মোহন, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি জসিমউদ্দিন মঈন তুষারসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী খোকন সেরনিয়াবাত। তার পক্ষে ভোট চাইতে দুইজন প্রেসিডিয়াম সদস্য, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দকে পাঠিয়েছেন।
“তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে বরিশাল তিলোত্তমা নগরীতে পরিণত করে দেবেন জননত্রেী শেখ হাসিনা।”
প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান মনোনয়ন প্রসঙ্গে বলেন, “মনোনয়ন বোর্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন আমার ভাই ও ভাতিজা। আমি কাকে মনোনয়ন দেব?’
“মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেছেন–আপনার সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত সিদ্বান্ত। সেই সিদ্বান্তই বরিশালবাসী মেনে নেবে।”
আব্দুর রহমান আরও বলেন, “কিছু কথা তো বাতাসের আগে ধেয়ে আসে। কোনো ধরনের সুযোগ সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করবেন না। আমরা সকলে এক এবং ঐক্যবদ্ধ।”
তিনি দলের সবাইকে শৃঙ্খলার সঙ্গে মাঠে কাজ করার আহ্বান জানান।
দুপুর ১২টার দিকে বরিশালে প্রবেশ করেন খোকন সেরনিয়াবাতের গাড়িবহর। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ব্রিজ থেকে বহরকে স্বাগত জানান নেতাকর্মীরা। সেখানে থেকে নগরীর দলীয় কার্যালয়ে এসে পৌঁছান দুপুর দেড়টায়। পথে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ তাদের ফুল ছিটিয়ে শ্লোগান দিয়ে বরণ করেন।
আরও পড়ুন
বরিশালে সাদিক আব্দুল্লাহ কেন এবার বাদ?
ভোটে চাচার বিপক্ষে ‘যাবেন না’ সাদিক আব্দুল্লাহ
‘অপরিচিত’ খায়ের আব্দুল্লাহর মনোনয়নে আওয়ামী লীগের আনন্দ মিছিল
বরিশাল সিটি নির্বাচন: আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে চাচা-ভাতিজা