২২ নভেম্বর কারামুক্ত হওয়ার পর সহিদুর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন।
Published : 28 Nov 2023, 05:26 PM
আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি আদালতে আত্মসমর্পণের পর আবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে সহিদুর টাঙ্গাইল প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। শুনানি শেষে বিচারক মো. মোস্তফা শাহরিয়ার খান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (এপিপি) মনিরুল ইসলাম খান জানান।
২০ নভেম্বর উচ্চ আদালত থেকে সহিদুর ছয় মাসের অন্তর্বতীকালীন জামিন পেয়ে ২২ নভেম্বর কারামুক্ত হয়েছিলেন।
এরপর ২৬ নভেম্বর আপিল বিভাগের আদেশের তথ্য গোপনসহ সহিদুরের জামিন আবেদন ঘিরে কিছু অসংগতির অভিযোগ তুলে রাষ্ট্রপক্ষ। তার পরিপ্রেক্ষিতে সহিদুরের জামিনাদেশ প্রত্যাহার করে হাই কোর্ট।
বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাই কোর্টের ওই বেঞ্চ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সহিদুরকে টাঙ্গাইলের বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।
২২ নভেম্বর কারামুক্ত হওয়ার পর সহিদুর টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান।
মঙ্গলবার দুপুরে হুইল চেয়ারে বসে সহিদুর আদালতে আসেন। এ সময় তার বাবা টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনের সংসদ সদস্য আতাউর রহমান খান এবং তার ভাই সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা সঙ্গে ছিলেন।
আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যা: জামিনে মুক্ত টাঙ্গাইলের সাবেক মেয়র
তথ্য গোপন: টাঙ্গাইলের সাবেক মেয়র মুক্তির জামিন বাতিল
টাঙ্গাইলে ‘খান পরিবারে’ নেই নৌকার প্রার্থী
হত্যা মামলায় ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে অন্তর্বর্তী জামিন পেয়েছিলেন সহিদুর। পরে মামলার বাদী অন্তর্বর্তী জামিনের মেয়াদ বর্ধিত না করার জন্য আদালতে আবেদন করেন।
শুনানি শেষে একই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি আদালত জামিন বাতিলের আদেশ দেয়; এরপর থেকে সহিদুর কারাগারে ছিলেন বলে জানান তিনি।
মামলার বরাতে এপিপি আরও বলেন, ২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি কলেজপাড়ায় নিজ বাসার পাশ থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ফারুক আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ২০১৪ সালের অগাস্টে আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
পরে আদালতে তাদের দেওয়া স্বীকারোক্তিতে হত্যার সঙ্গে তৎকালীন সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার তিন ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী জাহিদুর রহমান খান কাকন ও ছাত্রলীগের তৎকালীন সহসভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। এরপর তারা আত্মগোপনে চলে যান।
পরে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে পুলিশ আমানুর রহমান খান ও তার তিন ভাইসহ ১৪ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী।
মামলাটি বর্তমানে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে ছয় বছর পলাতক থাকার পর ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর সহিদুর আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানান আইনজীবী মনিরুল।
আরও পড়ুন:
আওয়ামী লীগ নেতা ফারুক হত্যার আসামির কারা হেফাজতে মৃত্যু
টাঙ্গাইলে ফারুক হত্যার নয় বছরেও বিচার পায়নি পরিবার
টাঙ্গাইলের ফারুক হত্যা মামলা ৬ মাসে নিষ্পত্তির নির্দেশ
ফারুক হত্যা মামলা: টাঙ্গাইল পৌরসভার সাবেক মেয়র মুক্তির অন্তবর্তী জামিন
মুক্তিযোদ্ধা ফারুক হত্যা মামলায় সাংসদ রানার জামিন স্থগিত