ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ-নির্বাচনের প্রার্থী 'নিখোঁজ'

আসিফের পরিবার বিষয়টি প্রশাসন কিংবা পুলিশকে জানায়নি; কোনো আইনগত ব্যবস্থাও নেয়নি।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Jan 2023, 12:48 PM
Updated : 29 Jan 2023, 12:48 PM

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের উপ-নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের খোঁজ মিলছে না বলে অভিযোগ করেছেন তার স্বজনরা। 

রোববার দুপুরে তার স্ত্রী মেহেরুন্নিছা সাংবাদিকদের বলেন, “গত শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) রাত থেকে আসিফ নিখোঁজ রয়েছেন। তার মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে।” 

তবে আসিফের পরিবার বিষয়টি প্রশাসন কিংবা পুলিশকে জানায়নি; কোনো আইনগত ব্যবস্থাও নেয়নি। 

এর আগে আবু আসিফ আহমেদ জানিয়েছিলেন, ২৫ জানুয়ারি রাত থেকে তার শ্যালক ও নির্বাচন পরিচালনাকারী কমিটির প্রধান সমন্বয়ক শাফায়েত হোসেন (৩৮) 'নিখোঁজ' রয়েছেন।   

একই দিন মধ্যরাতে আসিফের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মুসা মিয়াকে (৮০) একটি মারামারির মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। ভোটে দাঁড়ানোয় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

রোববার সন্ধ্যায় আবু আসিফের স্ত্রী মেহেরুন্নিছা সাংবাদিকদের বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে আসিফকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তার মোবাইল ফোনটিও বন্ধ রয়েছে। তিনি কোথায় এবং কী অবস্থায় আছেন তা বুঝতে পারছেন না। প্রতিনিয়ত তাদের হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে। বাড়িতে পুলিশ এসে অযথা তল্লাশি করে হয়রানি করছে। বাড়ির সামনেও কিছু পুলিশ আসা যাওয়া করছে। 

“এখন নির্বাচনে ভোট কেন্দ্রে যে এজেন্ট দেব, তাও খুঁজে পাচ্ছি না। কারণ সবাইকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাদের ভয়ে আমি নিজেই পালিয়ে ছিলাম। আজকের মধ্যে খোঁজ না পেলে কাল [সোমবার] সকালে থানায় অভিযোগ করব।” 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশ তার (আবু আসিফ) বাড়িতে গিয়ে হয়রানি করেনি। পুলিশ কখনোই তার বাড়িতে যায়নি এবং এখনও নেই। 

“তিনি নিখোঁজ কিনা সে বিষয়েও আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেইে। এ ব্যাপারে পুলিশের কাছে কোনো অভিযোগও করেনি।”

এই উপ-নির্বাচন ঘিরে সর্বত্র আলোচনা সাবেক বিএনপি নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুস সাত্তারকে নিয়ে। তিনি এ আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে বিজয়ী হয়েছিলেন। সম্প্রতি দলের সিদ্ধান্তে সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি। 

পরবর্তীতে নিজের ছেড়ে দেওয়া আসনের উপ-নির্বাচনে লড়তে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম কেনার পর তাকে বহিষ্কার করে বিএনপি। 

আব্দুস সাত্তার ছাড়াও আরও তিনজন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী আব্দুল হামিদ ভাষানী, জাকের পার্টির প্রার্থী জহিরুল ইসলাম এবং স্বতন্ত্র আবু আসিফ আহমেদ। 

আগামী ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ( আশুগঞ্জ-সরাইল) আসনের উপ-নির্বাচনে লড়তে ১৩ প্রার্থীর মধ্যে আটজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবে ইতোমধ্যে চারজন তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন।

এরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ নেতা শাহজাহান আলম এবং সাবেক সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত নেতা জিয়াউল হক মৃধা। 

এ চার প্রার্থীর সড়ে দাঁড়ানোর ফলে সাত্তারের জয়ের পথ অনেকটাই সুগম হয়। এ ছাড়া সাত্তারের পক্ষে আওয়ামী লীগের স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা প্রকাশ্যে কাজ করছেন। 

আরও খবর-

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ভোটে আছেন আওয়ামী লীগের মঈন, সাবেক এমপি জিয়াউল

সরকার উকিল আব্দুস সাত্তারকে চাপ দিয়ে নির্বাচনে এনেছে: রুমিন ফারহানা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ-নির্বাচনে ৮ প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ, ৫ জনের বাতিল

মনোনয়নপত্র জমা দিলেন উকিল আব্দুস সাত্তার

পদত্যাগী উকিল আব্দুস সাত্তারকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা বিএনপির

বিএনপি ছেড়ে ভোটে লড়তে মনোনয়নপত্র নিলেন উকিল আব্দুস সাত্তার

বিএনপি ছাড়লেন উকিল আবদুস সাত্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপ-নির্বাচন: স্বতন্ত্র প্রার্থী আসিফের এজেন্ট গ্রেপ্তার