কুমিল্লার যুবলীগ নেতা হত্যা: আরও তিন আসামি গ্রেপ্তার

যুবলীগ নেতাকে হত্যা সময় ব্যবহৃত মাইক্রবাস ও জুতা আসামিদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় বলে পুলিশ সুপারের ভাষ্য।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2023, 02:26 PM
Updated : 8 May 2023, 02:26 PM

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় বোরকা পরা বন্দুকধারীর গুলিতে যুবলীগ নেতা হত্যায় জড়তি সন্দেহে এজাহারবহির্ভূত তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

সোমবার সকাল ১১টার দিকে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান।

গ্রেপ্তাররা হলেন মামলার নয় নম্বর আসামি কালা মনিরের ভাই ও তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের মোহাম্মদ রবি, আট নম্বর আসামি অলি হাসানের ভায়রা মোহাম্মদ শাহপরান এবং উপজেলার লালপুর পূর্ব পাড়া গ্রামের সুমন হোসেন। সুমন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের চালক।  

এর আগে শনিবার রাতে এ হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থলের আশপাশে থাকা সব সিসিটিভির ভিডিও সংগ্রহ করা হয়। বোরকা পরা তিনজনকে শনাক্তের জন্য সেই ভিডিও বিশ্লেষণ করা হয়। আসামিদের ঘটনাস্থলে প্রবেশ ও বাইরের যাওয়ার রাস্তাও শনাক্ত করা হয়।

“বিশ্লেষণ করে ঘটনার রাতে হত্যাকাণ্ডের ব্যবহার করা কালো রঙের মাইক্রোবাসটির চালক সুমন হোসেনকে ৬ মে রাতে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।”

তিনি বলেন, সুমনের প্রাথমিক জবানবন্দি অনুযায়ী, কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা তার ভাড়া বাসার খালি জায়গা থেকে মাইক্রোবাসটি জব্দ করা হয়। পরে তার দেখানো মতে ঘটনার সময় বোরকা পরিহিত আসামিদের ব্যবহৃত দুই জোড়া জুতা এবং সুমনের একটি ট্রাউজার্স উদ্ধার করা হয়।

“এ ছাড়া দাউদকান্দি উপজেলার গৌরিপুর পশ্চিম বাজারের হাবিবুর রহমান ভবনে পাশে আম গাছের নিচ থেকে বোরকা ও হিজাব উদ্ধার করা হয়।”

পুলিশ সুপার আরও বলেন, অপর দুই আসামি শাহপরান ও রবিকে রোববার রাজধানীর মালিবাগের চৌধুরীপাড়া এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশ গ্রেপ্তার করে।

“ঘটনার সময় শাহপরান ঢাকায় ছিলেন। এখানে থেকেই ঘটনাস্থলে থাকা আসামিদের সাথে ঘটনার আগে ও পরে যোগাযোগ করেন এবং তাদের আত্মগোপনে থাকার বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা করেন।

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, আরেক আসামি রবি ঘটনাস্থলের আশপাশে অবস্থান নিয়ে শুটারদেরকে তথ্য দেন এবং পালাতে সাহায্য করেন।

এই মামলার অপর আসামিদের গ্রেপ্তার ও ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

আব্দুল মান্নান বলেন, শনিবার এই হত্যা মামলাটি দাউদকান্দি থানা থেকে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে স্থানান্তর করা হয়েছে। আসামিদের আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড চাওয়া হবে।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে দাউদকান্দির গৌরীপুর পশ্চিম বাজার ঈদগাহ এলাকার মসজিদ গলিতে জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে বন্দুকধারীরা। জামাল তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের দুইদিন পর ২ মে রাত সাড়ে ১১টায় জামালের স্ত্রী পপি আক্তার বাদী হয়ে দাউদকান্দি থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরই মধ্যে এই হত্যার সময়ের কয়েকটি সিসিটিভি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ভিডওতে দেখা যায় জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া তিন দুর্বৃত্তের সকলেই ছিল বোরকা পরা। দশ সেকেন্ডের মধ্যে তারা পরপর তিনটি গুলি চালিয়ে জামালের মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুন

Also Read: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যা: গ্রেপ্তার ৩, বিদেশে পালিয়েছে পাঁচ আসামি

Also Read: কুমিল্লার যুবলীগ নেতা হত্যা মামলার ৩ আসামি গ্রেপ্তার

Also Read: চার দিনেও অধরা কুমিল্লার যুবলীগ নেতা জামালের খুনিরা

Also Read: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যায় দুই দিন পর মামলা, আসামি ১৭ জন

Also Read: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা