কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যা: গ্রেপ্তার ৩, বিদেশে পালিয়েছে পাঁচ আসামি

আসামিদের কাছ থেকে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত বোরকাও উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি র‌্যাবের।

কুমিল্লা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 May 2023, 08:30 AM
Updated : 7 May 2023, 08:30 AM

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বোরকা পরা দুর্বৃত্তদের গুলিতে যুবলীগ নেতাকে হত্যায় এক আওয়ামী লীগ নেতাসহ তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। মামলার পাঁচ আসামি বিদেশে পালিয়ে গেছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি।

শনিবার দিনে ও রাতে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকা, ঢাকার রায়েরবাগ, কালশী ও মিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানভীর মাহমুদ পাশা।

রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় কুমিল্লা নগরীর শাকতলা এলাকার র‌্যাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানিয়েছেন, আসামিদের কাছ থেকে যুবলীগ নেতা জামাল হোসেন (৪০) হত্যাকাণ্ডের সময় ব্যবহৃত বোরকাও উদ্ধার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তাররা হলেন- মামলার তিন নম্বর আসামি তিতাস উপজেলার জিয়ারকান্দি গ্রামের খুরশিদ মিয়ার ছেলে মো. ইসমাইল, চার নম্বর আসামি একই উপজেলার মনাইরকান্দি গ্রামের আক্তার হোসেন শিকদারের ছেলে মো.শাহীনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার এবং সাত নম্বর আসামি দাউদকান্দির গোপচর গ্রামের মৃত বজলুর রহমানের ছেলে শাহ আলম ওরফে পা কাটা আলম।

নিহত জামালের পরিবারের সদস্যদের দাবি, এই খুনের ‘পরিকল্পনাকারী বা মাস্টারমাইন্ড’ হচ্ছেন তিতাস উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদার। আর মামলার আসামিরা সকলেই ‘শিকদার বাহিনী’র সদস্য।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানভীর মাহমুদ বলেন, “যুবলীগ নেতা জামাল হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ৯ আসামির মধ্যে আমরা তিন জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি।

“তবে মামলার প্রধান আসামি সুজন নেপালে, দ্বিতীয় আসামি আরিফ নেপালে, পাঁচ নম্বর আসামি বাদল দুবাইতে, ছয় নম্বর আসামি শাকিল ভারতে আর আট নম্বর আসামি অলি হাসান সৌদি আরবে পালিয়ে গেছে। আর নয় নম্বর আসামি কালা মনির আত্নগোপনে রয়েছে।”

তিনি জানান, গ্রেপ্তার হওয়া আসামি ইসমাইলের বিরুদ্ধে দুইটি হত্যা মামলাসহ মোট তিনটি মামলা, শাহীনুল ইসলাম ওরফে সোহেল শিকদারের বিরুদ্ধে তিনটি হত্যা মামলাসহ মোট নয়টি মামলা এবং শাহ আলমের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলাসহ মোট ১০টি মামলা রয়েছে।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, “বিদেশে অবস্থানরত আসামিদের দেশে ফেরাতে এবং হত্যার সাথে জড়িত অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে আমরা কাজ করছি। আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জেরে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।”

শনিবার দিনে ও রাতে চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ এলাকা, ঢাকার রায়েরবাগ, কালশী ও মিরপুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে আসামির কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বোরকা উদ্ধার করা হয়েছে।

গত ৩০ এপ্রিল রাত ৮টার দিকে দাউদকান্দির গৌরীপুর পশ্চিম বাজার ঈদগাহ এলাকার মসজিদ গলিতে জামাল হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। জামাল তিতাস উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।

হত্যাকাণ্ডের দুইদিন পর ২ মে রাত সাড়ে ১১টায় জামালের স্ত্রী পপি আক্তার বাদী হয়ে দাউদকান্দি থানায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৮ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরই মধ্যে ওই যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যার ঘটনার সময়ের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভাইরাল হওয়া ফুটেজে দেখা যায়- জামাল হোসেন হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়া তিন দুর্বৃত্তের সকলেই ছিলেন বোরকা পরা। দশ সেকেন্ডের মধ্যে তারা পরপর তিনটি গুলি চালিয়ে জামালের মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়।

আরও পড়ুন

Also Read: চার দিনেও অধরা কুমিল্লার যুবলীগ নেতা জামালের খুনিরা

Also Read: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতা হত্যায় দুই দিন পর মামলা, আসামি ১৭ জন

Also Read: কুমিল্লায় যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা