সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সাঘাটা ও ফুলছড়ির ১৪৫টি কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করা হয়।
Published : 04 Jan 2023, 04:37 PM
গাইবান্ধা-৫ উপ-নির্বাচনে বড় ধরনের কোনো বিশৃঙ্খলা বা অনিয়মের অভিযোগ ছাড়াই পুর্নভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন ফলাফলের অপেক্ষায় রয়েছেন প্রার্থীরা।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত সাঘাটা ও ফুলছড়ির ১৪৫টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণ করা হয়। প্রতিটি কেন্দ্রের ফলাফল রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা সব ফল যোগ করে বেসরকারিভাবে বিজয়ী প্রার্থীর নাম ঘোষণা করবেন।
সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ার কাজী আজাহার আলী সরকারি মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ডা. আনোয়ার হোসেন বলেন, “আমার কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম ছিল। নির্ধারিত সময় শেষে কেউ ভোটের লাইনে ছিলেন না। ফলে আমরা ঠিক সাড়ে ৪টায় ভোটগ্রহণ শেষ করেছি।“
একই উপজেলার নবাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মাহমুদুল হক বলেন, তার ভোটকেন্দ্রেও সাড়ে ৪টায় ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এখন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ফলাফল পাঠানোর কাজ করছেন।
সকালে কনকনে শীত আর কঠোর নজরদারীর মধ্যে প্রতিটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোট শুরুর পর ভোটার উপস্থিতি কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা বাড়তে থাকে।
দুপুর ২টার দিকে ৩৫ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন বলে ধারণা দিয়েছিলেন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম। এ সময় তিনি আরও বলেন, ইভিএমে সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ হয়েছে।
উপ-নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ শেষে ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম শহীদ রনজু।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই মারা গেলে তার সংসদীয় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটগ্রহণের মধ্যে সিসি ক্যামেরায় এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি।
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে অনিয়মের কারণে কোনো সংসদীয় আসনের নির্বাচন পুরোপুরি (সব কেন্দ্র) বন্ধ করার ঘটনা সেটাই প্রথম।
আগেরবারের মতই ৯৫২টি বুথে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ভোটারের ভোট নেওয়ার ব্যবস্থা হয়। সেই সঙ্গে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বসানো সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে ঢাকা থেকে সরাসরি নজরদারি করেন নির্বাচন কমিশনাররা।
নির্বাচন ভবনে সিসি ক্যামেরা মনিটরিংয়ের এক পর্যায়ে দুপুর সোয়া ২টায় নির্বাচন কমিশনার আনিছুর বলেন, “এই পর্যন্ত যা দেখলাম তাতে ভোটার কিছুটা বেড়েছে। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ছিলাম আমরা এখানে। আছি সবাই মিলে। আমাদের মনে হচ্ছে ভালো ভোট হচ্ছে। ভোটের পরিবেশ খুব সুন্দর। ভোটারের উপস্থিতি যদিও একটু কম। এ পর্যন্ত আমরা কোনো অনিয়ম দেখিনি।”
তিনি আরও বলেন, “ভোটকেন্দ্রের বাইরের পরিস্থিতি ভালো। ভিতরের পরিস্থিতিও ভালো। সবকিছুর পরিবেশ ভালো। ইভিএমের কারণে কোথাও কোনো ত্রুটি বা সমস্যা হচ্ছে না। কোনোকিছু অস্বাভাবিক না, সবকিছু স্বাভাবিক আছে।“
“এবার সুশৃঙ্খলভাবে নির্ধারিত জায়গায় বসা আছে। প্রভাব খাটানো বা একজনের ভোট অন্যজনকে টিপে দিতে দেখিনি। শীতে ভোটারের উপস্থিতি কম। সব মিলিয়ে পরিবেশ পরিস্থিতি ভাল আছে। খুব ভালো পরিবেশ আছে।”
গাইবান্ধা-৫ আসনটি ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলা নিয়ে গঠিত। এ দুই উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৪ জন।
এ উপ-নির্বাচনে পাঁচজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হচ্ছেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন, জাতীয় পার্টি (জাপা) মনোনীত এএইচএম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্পধারা মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাত এবং সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।
তবে গত ২৫ ডিসেম্বর বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট কারচুপির আশঙ্কায় এই নির্বাচন থেকে তিনি সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন নাহিদুজ্জামান নিশাদ।
এ উপ-নির্বাচনে ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএমে ভোটগ্রহণ করার জন্য ১৪৫ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ৯৫২ জন সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও এক হাজার ৯০৪ জন পোলিং কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: