ভোটকেন্দ্রের ভেতরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে: সিইসি

গোপন কক্ষে একাধিক ব্যক্তির প্রবেশ, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়ার মত ঘটনা সিসি ক্যামেরায় দেখার পর ৪৪ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করেছে কমিশন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Oct 2022, 07:36 AM
Updated : 12 Oct 2022, 07:36 AM

গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের উপ-নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের ভেতরের পরিস্থিতি ‘নিয়ন্ত্রণের বাইরে’ চলে গেছে জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কশিমনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, শিগগিরই তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

বুধবার সকালে ভোট শুরুর চার ঘণ্টার মধ্যে ১৪৫টি কেন্দ্রের ৪৪টিতে অনিয়মের ঘটনায় ভোটগ্রহণ স্থগিত করার পর সিইসির এমন বক্তব্য আসে।    

এ আসনের সবগুলো কেন্দ্রেই সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে; ঢাকার নির্বাচন ভবনে স্থাপিত পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র থেকে সরাসরি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে কেন্দ্রের পরিস্থিতি।

গোপন কক্ষে অবৈধভাবে একাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন ঘটনা সরাসরি দেখার পর বেলা ১২টা পর্যন্ত কয়েক দফায় মোট ৪৪ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

নিয়ন্ত্রণ কক্ষে উপস্থিত সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল সাংবাদিকদের বলেন, “আমার কাছে মনে হচ্ছে, অবশ্যই ভোট কেন্দ্রের ভেতরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেছে। কিছু অনিয়ম… গোপন কক্ষে অনধিকার প্রবেশ বা আইন ভঙ্গ করে ভোট দিয়ে দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি।”

যারা এর সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চেয়েছিলেন একজন সাংবাদিক।

সিইসি তখন বলেন, “আমরা যা দেখেছি তা আপনাদের জানাচ্ছি- মূল অ্যাকশনটা নিয়েছি। ভোট বন্ধ করে দিয়েছি। চাকরিবিধি অনুযায়ী কি ব্যস্থা নেব দেখছি।”

এ বিষয়ে গাইবান্ধার রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে নিজে কথা বলেছেন জানিয়ে সিইসি জানান, “রিটার্নিং অফিসারকে বলা হয়েছে, যে কেন্দ্রগুলোর ভোট কমিশন বন্ধ করেছে, সঙ্গে সঙ্গে তারা যেন স্থগিত করে দেন।”

১৪৫ কেন্দ্রের মধ্যে ৪৪ কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়ে গেলে এ নির্বাচনের ফলাফল গ্রহণযোগ্য হবে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তরে সিইসি বলেন, “আমরা সহসাই সিদ্ধান্ত নেব। আপনারা জানেন- আরপিও ৯১ ই ধারায় বলা হয়েছে- কমিশন যদি মনে করে নির্বাচন সঠিকভাবে হচ্ছে না, তাহলে একটি কেন্দ্রে বা সব কেন্দ্রে…।”

ওই বিধানের আলোকেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে হাবিবুল আউয়াল বলেন, “সিদ্ধান্তটা নিলে আপনাদের জানাব। কেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেল এখন বলতে পারব না। আমরা দেখতে পাচ্ছি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে অনেকটা। আপনারাও দেখতে পেয়েছেন। গোপন কক্ষে ঢুকছে, সুশৃঙ্খলভাবে হচ্ছে না। কেন হচ্ছে এটা চটজলদি বলা যাবে না।”

এক্ষেত্র্রে ইভিএমের কোনো ‘দোষ’ দেখতে পাচ্ছেন না জানিয়ে তিনি বলেন, “এখানে মানবিক যে আচরণ তা দেখিয়ে দিচ্ছে, একই রঙের পোশাক পরে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে এসব করছে। এটা সুশৃঙ্খল ভোটের পরিপন্থি। এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত।

“যারা আইন মানেন না, তারা দুর্বৃত্ত। আমরা যদি সংস্কৃতি ডেভেলপ করতে না পারি, নির্বাচন কমিশন এখানে বসে বসে সুন্দর সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে পারবে? এটা সম্ভব না।”

গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোটার আছেন মোট তিন লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন। উপ-নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পাঁচজন প্রার্থী।

সকাল ৮টায় শুরু হওয়া এ ভোট একটানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলার কথা।

এ আসনের সংসদ সদস্য ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। নিয়ম অনুযায়ী এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

Also Read: গাইবান্ধায় ৪৪ কেন্দ্রের ভোট স্থগিত