গাইবান্ধায় পুনর্ভোটেও অনিয়মকে ‘প্রশ্রয় দেবে না’ ইসি

অনিয়ম দেখে গত ১২ অক্টোবর গা্ইবান্ধার উপনির্বাচন বন্ধ করেছিল ইসি; কোনো সংসদীয় আসনের নির্বাচন পুরোপুরি বন্ধ করার ঘটনা দেশে এটাই প্রথম।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2023, 11:56 AM
Updated : 3 Jan 2023, 11:56 AM

কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনে যে পুনর্ভোট হতে যাচ্ছে, তাতেও অনিয়মের পুনরাবৃত্তি হলে ছাড় দেওয়া হবে না বলে সতর্ক করেছে নির্বাচন কমিশন।

নির্বাচন কমিশনার আহসান হাবিব খান বলেছেন, “অনিয়মের গ্র্যাভিটি দেখে সেই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এটুকু বলতে পারি, কোনো অনিয়মকে প্রশ্রয় একেবারেই দেব না আমরা।”

গাইবান্ধায় পুনর্ভোটের আগের দিন মঙ্গলবার ঢাকার আগারগাঁওয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন তিনি।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুতে গাইবান্ধা-৫ আসন শূন্য হয়। সেই আসনে গত ১২ অক্টোবর উপনির্বাচনে সম্পূর্ণ ইভিএমে ভোটগ্রহণ হচ্ছিল।

তবে সিসি ক্যামেরায় পুরো আসনের এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি।

বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে অনিয়মের কারণে কোনো সংসদীয় আসনের নির্বাচন পুরোপুরি বন্ধ করার ঘটনা এটাই প্রথম।

Also Read: গাইবান্ধায় ভোট বন্ধের সিদ্ধান্তে সাবেকদের পাশে পেল ইসি

Also Read: গাইবান্ধার রিটার্নিং অফিসারসহ শতাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে ইসি

Also Read: গাইবান্ধা উপনির্বাচনের নতুন তারিখ ৪ জানুয়ারি

Also Read: গাইবান্ধায় ভালো ভোটের জন্য এবার যা যা আয়োজন

সেই অভিজ্ঞতার আলোকে পুনর্ভোটের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আহসান।

তিনি বলেন, “সতর্কতার সঙ্গে গাইবান্ধার প্রতিটি সিচুয়েশন আমরা মনিটর করছি, নির্দেশনা দিচ্ছি এবং অ্যাকশন নিচ্ছি।”

বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট চলবে ইভিএমে; থাকবে সিসি ক্যামেরাও। ভোট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে ঢাকার নির্বাচন ভবন থেকেও।

  • ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোটার মোট ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন।

  • ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএমে ভোট হবে।

  • প্রার্থী: মাহমুদ হাসান রিপন (আওয়ামী লীগ-নৌকা), এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু (জাতীয় পার্টি-লাঙ্গল), জাহাঙ্গীর আলম (বিকল্প ধারা-কুলা), নাহিদুজ্জামান নিশাদ (স্বতন্ত্র-আপেল) ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান (স্বতন্ত্র-ট্রাক) ।

গাইবান্ধায় ভোটে অনিয়মে জড়িতদের চিহ্নিত করতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন।

দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মে সম্পৃক্ততার কারণে রিটার্নিং কর্মকর্তা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পুলিশের উপ-পরিদর্শক, নির্বাহী হাকিমসহ শতাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনী এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

এক মাস সময়ের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে জানাতে বলা হয়েছে ইসি থেকে।

এরপর গত ৬ ডিসেম্বর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের পুনর্ভোটের জন্য ৪ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করে নির্বাচন কমিশন।

এই পুনর্ভোটের জন্য প্রার্থীদের প্রচারকালে আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কঠোর অবস্থান নেয় নির্বাচন কমিশন।

আহসান হাবিব বলেন, “গাইবান্ধায় যেসব ছোটো-খাটো ঘটনা ঘটেছে প্রচারণার সময় বা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে- এটা কঠিন হস্তে দমন করেছি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে তদন্ত করে অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে।”

তিনি এও বলেন, “সম্পূর্ণভাবে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, আইন শৃঙ্খলাবাহিনী, রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচনী কর্মকর্তারা একসঙ্গে কাজ করে সুন্দর নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।”