কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যাপক অনিয়মের কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যাওয়া গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের জন্য ৪ জানুয়ারি নতুন তারিখ ঠিক করেছে নির্বাচন কমিশন।
মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে ইসি সচিব জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের এ নতুন তারিখ জানান।
তিনি বলেন, “কমিশন সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধার যে ভোটটি স্থগিত করা হয়েছিল, সেটি আগামী জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখ বুধবার হবে।”
সেদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত ইভিএমে একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। আগের দিনের মতই সব কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরা থাকবে এবং ঢাকা থেকে সরাসরি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানান তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তদন্ত কমিটির সুপারিশে নির্বাচন কমিশন এ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা পরিবর্তন করে দিয়েছে। কমিশনের ঢাকা অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম এখন গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করবেন।
নতুন করে ভোট হলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকছেন আগের প্রার্থীরাই। ভোটের তারিখ ঘোষণা হওয়ায় প্রার্থীরা এখন আবার প্রচারে নামতে পারবেন।
আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান নৌকা প্রতীক নিয়ে, জাতীয় পার্টির (জাপা) এএইচএম গোলাম শহীদ লাঙ্গল মার্কা নিয়ে, বিকল্প ধারার জাহাঙ্গীর আলম কুলা প্রতীক নিয়ে এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান আপেল, স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান ট্রাক প্রতীক নিয়ে লড়ছেন এ নির্বাচনে।
ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া গত ২৩ জুলাই মারা গেলে তার সংসদীয় আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।
ফুলছড়ি ও সাঘাট উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসনে ভোটার মোট তিন লাখ ৩৯ হাজার ৯৮ জন। ১৪৫টি কেন্দ্রের ৯৫২টি বুথে ইভিএমে তাদের ভোটগ্রহণ হবে।
গত ১২ অক্টোবর গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচনে ইভিএমে ভোটগ্রহণের মধ্যে সিসি ক্যামেরায় পুরো আসনের এক-তৃতীয়াংশ কেন্দ্রে অনিয়মের দৃশ্য দেখে মাঝপথে ঢাকা থেকে নির্বাচন বন্ধের নির্দেশ দেয় ইসি।
বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের ইতিহাসে অনিয়মের কারণে কোনো সংসদীয় আসনের নির্বাচন বন্ধ করার ঘটনা এটাই প্রথম।
এরপর প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল অনিয়মে সম্পৃক্তদের চিহ্নিত করতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে দেন।
কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে পরে রিটার্নিং অফিসার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, প্রিজাইডিং অফিসার, পুলিশের উপ-পরিদর্শক, নির্বাহী হাকিমসহ শতাধিক ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাচনী এজেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন।
তবে কোনো ধরনের অনিয়মে সম্পৃক্ততার প্রমাণ না পাওয়ায় প্রার্থী, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়নি।
পুরনো খবর: