দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।
Published : 20 Sep 2020, 06:33 PM
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি ইমাম জাফর জানান, রোববার দুপুরে দিনাজপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ইসমাইল হোসেনের আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন রবিউল।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলা চালানো হয়। মাথায় হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর আহত ওয়াহিদা এখন ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার বাবাও ঢাকায় চিকিৎসাধীন।
তদন্ত কর্মকর্তা ইমাম জাফর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুই দফায় নয় দিনের দিনের রিমান্ড শেষে রোববার আদালতে হাজির করলে রবিউল অপরাধের কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন।”
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “গত জানুয়ারিতে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ব্যাগ থেকে টাকা চুরির অভিযোগে ইউএনও সাময়িক বরখাস্ত করেন রবিউলকে। এ কারণে রবিউল ক্ষুব্ধ হন। ১ সেপ্টেম্বর তাকে চাকরি থেকে চূড়ান্ত বরখাস্ত করা হয়। আর এতেই রবিউল আরও ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিয়ে হামলা করেন।
“রবিউল ২ সেপ্টেম্বর দুপুরে দিনাজপুর থেকে ঘোড়াঘাট চলে যান। সেখানে ওসমানপুরে রাত ১১টা পর্যন্ত অবস্থান করেন। তারপর সময় বুঝে গভীর রাতে উপজেলা পরিষদে যান। দেয়াল টপকে ইউএনওর বাসভবনে ঢুকে রবিউল একাই ইউএনও এবং তার বাবাকে হত্যার চেষ্টা করেন।”
তদন্ত কর্মকর্তা বলেন, “রবিউলের মোবাইল ফোন ট্র্যাক করার পাশাপাশি ফিঙ্গার প্রিন্ট পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়েই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে হামলায় ব্যবহৃত হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়।
“এর আগে রবিউলের ঘোড়াঘাট যাওয়া এবং সেখানে অবস্থানের সাক্ষী হিসাবে ১৬৪ ধারায় পাঁচজনের জবানবন্দি নিয়েছে আদালত।”
সাক্ষীদের মধ্যে রয়েছেন দিনাজপুর শহরের সেলুন কর্মচারী মুরাদ, সাইকেল গ্যারেজ মালিক আইনুল, ঘোড়াঘাটের ওসমানপুরের মুদি দোকানি সিরাজ, খোকন আলী নামে এক ব্যক্তি ও ১০ বছরের ছেলে একটি শিশু রয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা।
ঘটনাটি নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোলের মধ্যে দুদিন পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১৩ অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেন, চুরি করতে ওই বাড়িতে ঢুকেছিল আসাদুল (৩৫)। তার সহযোগী ছিল নবীরুল ইসলাম (৩৪) ও সান্টু কুমার বিশ্বাস (২৮)।
আলোচিত এই ঘটনার ছায়া তদন্তে নামা র্যাবও এটাও বলেছিল যে আসাদুল ‘নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার’ করেছেন।
তবে এই ঘটনা নিছক চুরির ঘটনা হিসেবে মানতে আপত্তি জানায় সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সমিতির নেতারা দাবি করেন, ওয়াহিদার উপর হামলা পরিকল্পিত।