ইউএনওর উপর হামলার ঘটনায় পুলিশের তদন্তে ভিন্ন মোড় 

যাকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব বলেছিল, ইউএনও ওয়াহিদা খানমের উপর হামলাটি চুরির ঘটনা; সেই আসাদুল হক এই ঘটনায় জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য।

দিনাজপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Sept 2020, 12:25 PM
Updated : 13 Sept 2020, 05:48 PM

ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের বরখাস্ত এক মালি রবিউল ইসলামকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়ে ডিআইজি দেবদাস শনিবার বলেছেন, এই ব্যক্তিই ওই হামলায় জড়িত।

গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে বাসভবনের ভেন্টিলেটর দিয়ে ঢুকে ইউএনও ওয়াহিদা ও তার বাবা ওমর আলীর উপর হামলা চালানো হয়। মাথায় হাতুড়ির আঘাতে গুরুতর আহত ওয়াহিদা এখন ঢাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ঘটনাটি নিয়ে দেশজুড়ে শোরগোলের মধ্যে দুদিন পর তিনজনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১৩ অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস রংপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসে বলেন, চুরি করতে ওই বাড়িতে ঢুকেছিল আসাদুল (৩৫)। তার সহযোগী ছিল নবীরুল ইসলাম (৩৪) ও সান্টু কুমার বিশ্বাস (২৮)।

আলোচিত এই ঘটনার ছায়া তদন্তে নামা র‌্যাবও এটাও বলেছিল যে আসাদুল ‘নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার’ করেছেন।

র‌্যাব বলেছিল, এই আসাদুল হক চুরি করতে গিয়ে ইউএনওর উপর হামলা চালিয়েছিল; এখন পুলিশ বলছে অন্য কথা।

তবে এই ঘটনা নিছক চুরির ঘটনা হিসেবে মানতে আপত্তি জানায় সরকারি প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন। সমিতির নেতারা দাবি করেন, ওয়াহিদার উপর হামলা পরিকল্পিত।

নিজেদের তদন্তের অগ্রগতি তুলে ধরে শনিবার ডিআইজি দেবদাস দিনাজপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে আসেন।

তিনি বলেন, “ইতিপূর্বে আটক আসাদুল জড়িত নয়।”

ঘোড়াঘাট উপজেলার সাগরপুর এলাকার আসাদুল এখন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রয়েছেন। ডিবিই এই মামলার তদন্ত করছে।

আসাদুল যুবলীগে যুক্ত ছিলেন। গ্রেপ্তারের পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের ঘোষণা আসে।

বরখাস্ত মালি রবিউল ইসলামকে শুক্রবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ডিআইজি দেবদাস। রবিউলের বাড়ি বিরল উপজেলার বিজোড়া গ্রামে।

ডিআইজি দেবদাস বলেন, “রবিউলকে গ্রেপ্তারের পর রাতেই তাকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের পুকুর থেকে হাতুড়ি উদ্ধার করা হয়েছে। সে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।”

রবিউলের উদ্দেশ্য কী ছিল- তা জানতে তাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করা হবে বলে জানান রংপুর রেঞ্জ পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা দেবদাস।

“এই ঘটনার সাথে আর কারা জড়িত আছে কি না, কী কারণে এই ঘটনা ঘটিয়েছে, সে বিষয়গুলো তদন্ত করা হবে।”

ডিবির অভিযানে গ্রেপ্তার রবিউল ইসলাম

শনিবার বিকালে রবিউলকে আদালতে হাজির করে ৬ দিনের রিমান্ডে পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জেলা ডিবির ওসি ইমাম জাফর।

রবিউলকে কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছিল, সে বিষয়েও ডিআইজি কিছু বলেননি।

তবে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদ একজন কর্মচারী জানিয়েছেন, টাকা চুরির অভিযোগে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

হামলার পর ইউএনওর ভাই শেখ ফরিদ অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে একটি মামলা করেছেন।

ওই মামলায় র‌্যাবের হাতে আটক আসাদুল, নবীরুল ও সান্টুকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। চতুর্থজন হিসেবে গ্রেপ্তার হলেন রবিউল।

পুরনো খবর