প্রত্যেক জেলায় এমন আয়োজন করতে সংস্কৃতি কর্মীদের প্রতি আহ্বান।
Published : 02 May 2024, 09:49 PM
ফকির লালন সাঁইয়ের গানের চরণ ফেইসবুকে প্রচার করে এক যুবক গ্রেপ্তার হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে শহীদ মিনারে বসল লালনের গানের আসর।
এ আসর থেকে গানে গানে শিল্পীরা সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি' প্রতিপাদ্যে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে শিল্পী ফরিদা পারভীন, চন্দনা মজুমদার, অনিমা মুক্তি গোমেজ, দিল আফরোজ রেবা, লাভলী দেব, নবনীতা চৌধুরী, পল্লবী সরকার, আবু বকর সিদ্দিকী, আয়নাল হক, খগেন্দ্রনাথ বৈরাগী, ফকির শাহবুদ্দিন, দোয়েল রাজা, আসিফ ইকবাল সৌরভ, সরদার হিরক রাজা, রাফিয়া রুনা, লামিয়া ঐশ্বর্য, তামান্না নিগার তুলি, মনিকা দেওয়ানসহ দেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা লালন গান পরিবেশন করেন।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “আমাদের দেশের যেসব মানুষ ঐক্যের বাংলাদেশ চায় না, তারা লালনের দর্শনের বিরোধিতা করে নানা ধরনের চক্রান্তের সৃষ্টি করছেন।
“বিভিন্ন সময়ে লালনের চুল কেটে দেওয়া, বাদ্যযন্ত্র ভেঙে দেওয়াসহ নানা সময় বাধা প্রদান করা হয়েছে। এখন যখন কেউ ফেইসবুকে লালনের দর্শন প্রচার করে, তাকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করার সময় তারা একবারও ভাবলেন না যে এর মধ্যে মূলত লালনকে অপমান করা হচ্ছে। আমরা সংস্কৃতিকর্মীরা কখনো এ ধরনের অপতৎপরতা গ্রহণ করতে পারি না।"
গোলাম কুদ্দুছ বলেন, “লালনের আদর্শ এত শক্তিশালী যে আমরা মনে করি তার গান একটি মিছিলের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। তাই আমরা প্রতিবাদের এই ভাষাকেই বেছে নিয়েছি। এজন্যই এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে লালন সংগীত প্রচারের মধ্য দিয়ে সম্প্রীতির বন্ধনকে আরও বেগবান কররে চাই।
লালনের গানের চরণ ফেইসবুকে দিয়ে কারাগারে যুবক, পরে জামিন
“অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে সত্য, ন্যায় এবং মানবিকতার জয়গান গাইতে চাই। "
আগামী এক সপ্তাহর মধ্যে প্রত্যেক জেলায় ও উপজেলায় লালন সংগীতের আসরের আয়োজন এবং এর মাধ্যমে লালনের আদর্শকে প্রচার করতে সংস্কৃতি কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ।
সম্প্রতি শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জে এক যুবক লালনের গানের চরণ ফেইসবুকে পোস্ট করায় তাতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ তোলেন কিছু ব্যক্তি; পরে ওই যুবককে আটক করে পুলিশ।
সঞ্জয় রক্ষিত নামের ওই ব্যক্তি পরে জামিন পেলেও এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল আলোচনা-সমালোচনার জন্ম হয়।
সঞ্জয়ের পোস্টে লেখা ছিল, 'ছুন্নত দিলে হয় মুসলমান/নারী লোকের কী হয় বিধান’।
এই পোস্ট ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনেছে, এমন অভিযোগ তুলে তার বাড়ির সামনে জড়ো হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন একদল ব্যক্তি। একপর্যায়ে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। পরদিন জামিনে কারামুক্ত হন সঞ্জয়।