বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
Published : 23 Jan 2025, 12:41 PM
মাঘ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম।
বিশেষ করে জেলার নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষ বেশি বিপাকে পড়েছেন। এসব অঞ্চলের শিশু ও বয়স্করা আক্রান্ত হচ্ছেন শীতজনিত রোগে। লোকজন দিনের খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন।
বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রামে সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্তও দেখা মেলেনি সূর্যের। সড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলো চলাচল করতে দেখা যাচ্ছে।
এদিন সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১২ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার।
এমন শীতের তীব্রতায় বেশি কষ্টে আছেন নিম্ন আয়ের মানুষগুলো।
সদরের শুলকুর বাজারের শ্রমিক রুপভান বেওয়া বলেন, “জারতে (শীতে) আজ হাত-পাও শিষ্টা নাগছে। আজ মাটি কাটবের যাং (যাব) নাই। ঠান্ডাত বের বার মনায় না।”
সদরের ধরলা পাড়ের ঘোড়া চালক রশিদ মিয়া বলেন, “বেলা ১০টা বাজে এল্যাও সূর্য ওঠে নাই। লোকজনের আনা-গোনা কম। চরত মাল ধরি (নিয়ে) যায়, লোকো নাই মাল ধরি যায় কেমন করি। ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না।”
গতকাল(সোমবার) সকাল থেকে কনকনে হিমেল বাতাসের কারণে ঠান্ডা আরো বেশি অনুভূত হচ্ছে।
এদিকে শীত নিবারণের জন্য জেলায় সরকারিভাবে দুঃস্থদের জন্য যে কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এখনো সরকারিভাবে বরাদ্দ কম্বল পাননি বলে অভিযোগ জেলার চরের বসবাসরত মানুষদের।
যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের বাসিন্দা শাহিনা বেগম বলেন, “হামরা নদী পাড়ের মানুষ। এল্যাউ নতুন সরকারের কম্বল পাইলং না। শীতে চলি যায় আর কোনদিন কম্বল পামো?”
পাশের খেয়ার আলগা চরের নাদু শেখ বলেন, “বাবা ঠান্ডাতে কাম-কাজ করা খুব মুশকিল হয়া গেইছে। চেয়ারম্যান-মেম্বর কাইয়্যো হামান চরত আসে নাই কম্বল ধরি।”
জেলার ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. আব্দুল মতিন জানান, জেলার ৯ উপজেলায় ৩৪ হাজার ৭২২টি কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। চাহিদা ভেদে বিতরণ কাজ চলমান।
কুড়িগ্রাম কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত তিন দিন থেকে কুড়িগ্রাম জেলার তাপমাত্রা ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। দুদিন থেকে সূর্যের দেখা মিলছে না। সঙ্গে থাকছে ঘন কুয়াশা। রাতে কুয়াশা বৃষ্টির মত টপটপ করে পড়ছে। সূর্যের উত্তাপ ছড়াতে না পাড়ায় ঠান্ডার মাত্রা বেশি অনুভূত হচ্ছে।
তাপমাত্রা আরও দুই থেকে তিন দিন কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান এ আবহাওয়া কর্মকর্তা।
পুরানো খবর
কুড়িগ্রামে হিমেল বাতাসের সঙ্গে ঝরছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি
শীতে কাতর পঞ্চগড়-কুড়িগ্রামের জনজীবন
শীত-কুয়াশায় কাহিল কুড়িগ্রামের মানুষ
হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত কুড়িগ্রামের জনজীবন
তীব্র শীতে কুড়িগ্রামের সড়ক-নৌ-রেলপথে চলাচল বিঘ্নিত