কয়েকদিন ধরেই জেলা দুটির তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে।
Published : 01 Jan 2025, 03:20 PM
হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় দেশের উত্তরের দুই জেলা পঞ্চগড়-কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতা বরাবরই বেশি। এবারও কনকনে ঠাণ্ডার সঙ্গে হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় স্থবির হয়ে পড়েছে জেলা দুটির জনজীবন।
কয়েকদিন ধরেই জেলা দুটির তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে।
এর মধ্যে বুধবার সকাল ৯টায় পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সকাল ৬টায় কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
নতুন বছরের প্রথম দিনেই ভারি কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেছে জেলা দুটির জনপদ ও প্রকৃতি। আকাশে মেঘ থাকায় বেলা গড়ালেও দেখা মেলেনি সূর্যের। পাশাপাশি উত্তর-পশ্চিম থেকে বয়ে আসা পাহাড়ি হিম বাতাসে অনুভূত হচ্ছে কনকনে শীত।
দিনের বেলাতেও জেলার অনেক জায়গায় খড়কুটো জ্বেলে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে মানুষকে। কুয়াশার ঘনত্ব বেশী হওয়ায় যানবাহনগুলো হেডলাইট চালিয়ে চলাচল করছে।
তবে সকালের কনকনে এই শীতের মধ্যেও পেটের তাগিদে ঘর থেকে বের হতে হয়েছে শ্রমজীবী মানুষগুলোকে।
পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনের পাশে সিঅ্যান্ডবি এলাকায় দেখা গেছে, ভারি কুয়াশার মধ্যেও কাজে নেমে পড়েছেন পাথর শ্রমিকরা। পাথর বাছাই থেকে শুরু করে মেশিনে পাথর ভাঙার কাজ করছেন শ্রমজীবী নারী-পুরুষরা।
পাথর শ্রমিক মনোয়ার বেগম বলেন, “কাজে না এলে খাবো কী? শীতের কারণে বাড়িতে বসে থাকলে পরিবার পরিজন নিয়ে সারাদিন উপোস থাকতে হবে।
তিনি আরও বলেন, “বাজারের জিনিসপত্রের যে দাম, সারাদিন কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে কোনোমতে খেয়ে না খেয়ে আমাদের বেঁচে থাকতে হয়। এরপর আছে আবার কিস্তির জ্বালা। বৃহস্পতিবার এলেই সকালে কিস্তির সাহেব বাড়িতে হাজির হবে।”
সকাল থেকে যাত্রী না থাকায় বোদা পৌরশহরের বাইপাস মোড় এলাকায় তারা রাস্তার পাশে ভ্যান নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন ভ্যানচালক আমিরুল ইসলাম। তিনি বলেন, “অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ভ্যানে যাত্রী কমে গেছে। তাই আমাদের আয়ও কমে গেছে।”
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র বলেন, ঘনকুয়াশার সাথে হিমেল বাতাসে কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা আরো কমে বেড়েছে শীতের তীব্রতা।
“গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় তাপমাত্রা কমেছে দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বুধবার সকাল ৬ টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।”
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে।
“মঙ্গলবার দিনের বেলা বিকেল ৩টায় পঞ্চগড়ে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু বুধবার সকাল ৯টায় তাপমাত্রা নেমে যায় ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ১০০ শতাংশ।”
সামনে শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলেও জানান তিনি।