দিনে মাত্র ২৫ মিনিটের শারীরিক কর্মকাণ্ড কমাতে পারে মনের বাজে অবস্থা।
Published : 17 Dec 2023, 12:32 PM
যে কোনো ধরনের শরীরচর্চায় মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে।
তবে ঠিক কী পরিমাণ শারীরিক কার্যক্রমে চালালে বিষণ্নতা থেকে দূরে থাকা যায় সে ব্যাপারে ধারণা না থাকাই স্বাভাবিক।
মৌসুমগত পরিবর্তন, শীতের সময় সূর্যালোকের সংস্পর্শে কম থাকা, কোনো কারণে হতাশা বা মনোযোগ হারানো থেকে বিষণ্নতা দেখা দেয়। আর এর থেকে ভালো বোধ করতে নানান কৌশলের মধ্যে শরীরচর্চার বিষয়টাকেও ধরা হয়।
তারমানে এই না প্রতিদিন ‘জিম’য়ে গিয়ে ব্যায়াম করতে হবে।
বিষণ্নতায় ভোগার ঝুঁকি কমাতে কার্যকর উপায় শরীরচর্চা
‘পার্টনার্স হেল্থকেয়ার বায়োব্যাংক’য়ের প্রায় ৮ হাজার অংশগ্রহণকারীর তথ্য পর্যালোচনা করে ‘ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হসপিটাল’ জানায় প্রতি সপ্তাহে ব্যায়াম করার ফলে তাদের বিষণ্নতার ভোগার পরিমাণ কমেছে।
২০১৯ সালে ‘ডিপ্রেশন অ্যান্ড অ্যাংজাইটি’ সাময়িকীতে প্রকাশিত এই পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণায় আরও জানানো হয়, এমনকি যাদের বংশগতভাবে এই মানসিক সমস্যা রয়েছে তাদেরও ঝুঁকি কমে।
ফ্লোরিডা’র ‘ওয়েসিস ওয়েলনেস অ্যান্ড রিজুভানেইশন সেন্টার’য়ের পরিচালক ডা. এডনি হ্যারি রিয়েলসিম্পল ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেন, “মাঝারি থেকে উচ্চ-মাত্রার ভারী ব্যায়ামে এন্ডোরফিন্স হরমোনের নিঃসরণ বাড়ে, যা সাময়িকভাবে মেজাজের উন্নতি ঘটায়।”
বিষণ্নতা রোধে যতখানি ব্যায়ামের প্রয়োজন
ওই গবেষণার প্রধান ও হার্ভার্ড টি.এইচ. চ্যান স্কুল অফ পাবলিক হেল্থ’য়ের গবেষক ড. কার্মেল চই বলেন, “আমরা দেখেছি প্রতিদিন ৩৫ মিনিট বা সপ্তাহে চার ঘণ্টা পাঁচ মিনিট শরীরচর্চা করা বিষণ্নতার মতো বাজে অনুভূতি কমাতে পারে।”
সার্বিকভাবে দেখা গেছে, সপ্তাহে চার ঘণ্টার ব্যায়ামে বিষণ্নতার ঝুঁকি ১৭ শতাংশ কমে। আর দ্বিগুন পরিমাণে ফলাফলও হবে বেশি। যেমন- প্রতিদিন এক ঘণ্টা বা প্রতি সপ্তাহে মোট আট ঘণ্টার শরীরচর্চায় বিষণ্নতায় ভোগার ঝুঁকি আরও বেশি কমাতে পারে।
এই তথ্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২০ সালের শারীরিক কর্মকাণ্ড বিষয়ক নির্দেশনার সাথেও মিল পাওয়া যায়। যেখানে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে- প্রতি সপ্তাহে ১৫০ থেকে ৩০০ মিনিট বা দিনে ২২ থেকে ৪৩ মিনিট মাঝারি মাত্রার শারীরিক কসরতে প্রাপ্তবয়স্কদের জড়ানো উচিত।
যে ধরনের ব্যায়াম কার্যকর বেশি
হার্ভর্ড’য়ের গবেষকরা দেখেছেন উচ্চ মাত্রার ব্যায়াম, যেমন- দৌড়ানো, দড়ি লাফানো বা সাইকেল চালানো, নৃত্য ও যন্ত্রের সাহায্যে ব্যায়াম করা এবং স্বল্প মাত্রার ব্যায়াম, যেমন- হাঁটা, ইয়োগা ও ‘স্ট্রেচিং’ বিষণ্নতার মতো বাজে অনুভূতি কমাতে সক্ষম।
ডা. হ্যারি বলেন, “ব্যায়ামের ফলাফল নির্ভর করে ধরে রাখার ওপর। তাই আমার পরামর্শ হল এমন ব্যায়াম বাছাই করুন যা আপনাকে আনন্দ দেয়।”
হতে পারে সেটা ‘হাইকিং’, বাগান করা বা সাইকেল চালানো। প্রধান চাবিকাঠি হল হৃদপিণ্ডের গতি বাড়ানো।
সামাজিক যোগাযোগও একইভাবে বিষণ্নতার বিরুদ্ধে কাজ করে। সেগুলো হতে পারে- কোনো মজার নাচের ক্লাসে অংশ নেওয়া, বন্ধুদের সাথে ঘোরা বা খেলা, সিনেমা দেখতে যাওয়া।
মোদ্দাকথা হল
বর্তমানের সময়ের এসব গবেষণার ফলাফল নির্দেশনা দেয় যে, দৈনিক ২৫ থেকে ৭৫ মিনিট শরীরচর্চায় বিষণ্নতায় ভোগার ঝুঁকি কমিয়ে মন মেজাজ ভালো করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরও পড়ুন